Ajker Patrika

নিয়মিত অফিস করেন না তিনি, দুর্ভোগে রোগীরা

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২২, ১৫: ০৬
নিয়মিত অফিস করেন না তিনি, দুর্ভোগে রোগীরা

শ্বাসকষ্ট নিয়ে নেছারাবাদ উপজেলার সেহাংঙ্গল কমিউনিটি ক্লিনিকে আসা রোগী আয়সা বলেন, ‘ক্লিনিকে কর্তব্যরতরা যখন খুশি তখন অফিস খোলেন এবং চলে যান। অফিস খুলে অল্প সময় বসেন। তখন কোনো রোগী এলে মন চাইলে দু-চারটি ওষুধ দেন। ইচ্ছা না হলে ওষুধ নেই বলে বিদায় করে দেন। মোট কথা, ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) শিল্পী দাসের মর্জির ওপর চলে চিকিৎসাব্যবস্থা।’ 

সরেজমিনে সেহাংঙ্গল কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা গেছে, দুপুর ১২টার দিকে ক্লিনিকের প্রধান দরজায় ঝুলছে তালা। দরজার সামনে বসে আছেন আয়সা বেগম (৫২) নামে এক নারী। তাঁর সঙ্গে রয়েছে ১৩ বছর বয়সী এক নাতনি। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমার শ্বাসকষ্ট, কোমর ও হাঁটুতে ভীষণ ব্যথা আছে। আইছিলাম রোগের কথা বলে একটু ওষুধ নিতে। রোগ নিয়ে সব সময় আসতে পারি না। আর কষ্ট করে আসলেও এখানে কাউকে পাওয়া যায় না।’ 

একই অভিযোগ করেন মিঠু খান নামে স্থানীয় এক যুবক। তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগে মাঠে কাজ করতে গিয়ে পা কেটে গেছে। পরে পায়ে কোনো রকমে কাপড় বেঁধে চিকিৎসার জন্য ক্লিনিকে আসছিলাম। ক্লিনিকের শিল্পী দাস ব্যথার কোনো ওষুধ নেই বলেই আমাকে বিদায় করে দেন। আর বলেন, উপজেলায় গিয়ে দেখেন।’ 

মিঠু খান বলেন, ‘নিয়ম রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিকে সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত সেবা দান করার। অথচ বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ক্লিনিকে ঝোলে তালা। শুধু তাই নয়, শিল্পী দাস নিয়মিত অফিসে আসেন না। মাঝেমধ্যে ১০টা-১১টার মধ্যে এসে কিছু সময় অপেক্ষা করেই চলে যান।’ 

ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী রেদওয়ান নামে একজনের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে কল দিলে তিনি ক্লিনিকে আসেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘ক্লিনিকে ৩ জনের পদ রয়েছে। ওই তিনজনের মধ্যে দুজনের মাঠে কাজ থাকে। তাই ভাগাভাগি করে ডিউটি করে। তবে সিএইচসিপি শিল্পী দাসের এখানে নিয়মিত থাকার কথা। কিন্তু তিনি ঠিকমতো অফিসে আসেন না।’ 

স্বাস্থ্য সহকারী আরও বলেন, ‘শিল্পী দাস ২০১০ সালে এই ক্লিনিকে কাজে যোগদান করেন। তখন নিয়মিত অফিসে এলেও দুই বছর আগে থেকে ইচ্ছেমতো অফিস করেন। যখন খুশি আসেন এবং চলে যান। স্টোরে যথেষ্ট পরিমাণ ওষুধ থাকা সত্ত্বেও তিনি সবাইকে ওষুধ দেন না। আবার যাঁর সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক আছে, তাঁকে বেশি ওষুধ দেন।’ 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে শিল্পী দাসকে মোবাইলে কল করা হলে তিনি বলেন, ‘গত সোমবার আমার বাচ্চাটা একটু অসুস্থ থাকায় আগেভাগে বাসায় এসেছি।’ 

দেরি করে অফিসে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার বাসা দূরে হওয়ায় মাঝেমধ্যে ক্লিনিকে আসতে একটু দেরি হয়।’ 

এ বিষয়ে নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফিরোজ কিবরিয়া বলেন, এর আগেও শিল্পী দাসের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ পেয়ে শোকজ করা হয়েছিল। তখন তাঁর বিপক্ষে সামনে কথা বলার জন্য কাউকে পাইনি। আর তিনি অফিসে একটু অনিয়মিত। সেটা অনেকেই অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি এবার শক্তভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত