Ajker Patrika

ভারতে পাচার হওয়া কিশোরী ৭ বছর পর ফিরেছে মায়ের বুকে

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
ভারতে পাচার হওয়া কিশোরী ৭ বছর পর ফিরেছে মায়ের বুকে

ভারতে পাচার হওয়া বাংলাদেশি এক কিশোরী ৭ বছর পর তার মায়ের কাছে ফিরে এসেছে। ভারতের আইনি প্রক্রিয়া শেষে আজ সোমবার ঝালকাঠির নারী ও শিশু নির্যাতন দমনের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে ওই কিশোরীকে হাজির করা হলে আদালত কিশোরীর মায়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে তার মায়ের জিম্মায় দেওয়ার নির্দেশ দেন। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১২ বছর বয়সে ভুক্তভোগীকে খুলনায় একটি বাসায় কাজের প্রলোভন দিয়ে একটি মানবপাচারকারী চক্র ২০১৫ সালের ৫ জুন বসতবাড়িতে একা পেয়ে তাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর তাকে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে পাচার করে ভারতের বেঙ্গালুরুর একটি পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয় চক্রটি। পাচারকারী চক্রের সদস্য হাসিনা কিশোরীর মা’কে কাজের মেয়ে হিসেবে কাজ করতে দিতে রাজি করাতে ব্যর্থ হয়ে কৌশলে ভুক্তভোগীকে তুলে নিয়ে যায়। 

বাংলাদেশ ও ভারতের মানবপাচার রোধে বেসরকারি সংস্থা জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার পতিতালয় থেকে ভারতের পুলিশের সহায়তায় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে। এরপর বেঙ্গালুরুর স্বাকশাতারা শেল্টার হোমে ভুক্তভোগীকে রাখে। এ ঘটনায় বেঙ্গালুরুতে মামলা দায়ের হয়। ভারতের বিচার সম্পন্ন হওয়ার পর সংস্থাটির মাধ্যমে তাকে বাংলাদেশে আনা হয়। 

গত ৫ মার্চ স্থলবন্দর বেনাপোলে ভারতীয় এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশের সংগঠনের কাছে ভুক্তভোগীকে হস্তান্তর করে। সংগঠনটি জানিয়েছে, আইনগতভাবেই ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। দীর্ঘদিন বেঙ্গালুরুতে থাকায় সে বাংলা ভাষা প্রায় ভুলে গেছে এবং ইংরেজি ও তামিল ভাষা আয়ত্ত করে ফেলেছে। 

এই পাচারকারী চক্রটি হচ্ছে খুলনার খালিশপুর থানার সেনহাটির মুমিন হাওলাদারের স্ত্রী মোসাম্মৎ হাসিনা বেগম এবং একই এলাকার কবির হোসেনের স্ত্রী ঝুমুর আক্তার ও ঝালকাঠির বাসন্ডা গ্রামের ইন্দ্রজিৎ শিকদারের স্ত্রী মিনতি শিকদার। আসামিদের মধ্যে ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মিনতি শিকদারকে ঝালকাঠিতে মানবপাচারের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে অন্য আসামিরা গ্রেপ্তার হয়নি।

ভুক্তভোগী কিশোরীকে অপহরণের পর তার মা ঝালকাঠি থানায় অভিযোগ করতে গেলে থানা-পুলিশের প্রশ্নের জবাব দিতে না পারায় তখন তার অভিযোগ নেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর ঝালকাঠির মানবপাচার অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতে ভুক্তভোগীর মা নালিশি অভিযোগ দায়ের করলে আদালতের তৎকালীন বিচারক মো. শফিকুল করিম ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে মামলা রেকর্ড করার নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঝালকাঠি থানায় উল্লিখিত তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত