নাগরিক সুবিধার অর্ধেকও মেলে না

আবদুস সাত্তার, চট্টগ্রাম 
প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯: ০০
আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯: ১৩

নাগরিক সুবিধার অর্ধেকও ভোগ করতে পারেন না চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। এই ওয়ার্ডের পরিবেশ যতটুকু পরিষ্কার, সবুজ ও স্বাস্থ্যকর হওয়ার কথা ছিল—তার বেশির ভাগই অনুপস্থিত। এখানকার নয়াহাট এলাকা প্রায়ই তলিয়ে যায় জোয়ারের পানিতে। অথচ এখানেই অবস্থিত বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড), বন্দরের নিউমুরিং ইয়ার্ড, নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটি। এই ওয়ার্ডে বাস করেন প্রচুর বিদেশি। এ ছাড়া এই এলাকায় দেশের অন্য জেলার মানুষই বেশি বসবাস করেন।

এখানকার মূল সড়কে চলছে ফ্লাইওভারের কাজ। তবে ওই ওয়ার্ডের সড়কগুলো দিয়ে চলাচল করতে বাসিন্দাদের দুর্ভোগের অন্ত নেই। নয়াহাট, বন্দর টিলা, নিউমুরিং, ইপিজেডের ৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত ওয়ার্ডে মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩৪টি। এর মধ্যে কলেজ রয়েছে ৩টি। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩টি। প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেনের সংখ্যা ৭টি। বাকি ২০টি বিভিন্ন ধরনের মাদ্রাসা।

বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (বেপজা) জিএম মসিউদ্দিন বিন মেজবা বলেন, দেশি-বিদেশি অনেক মানুষের যাতায়াত এই শিল্পাঞ্চলে। কিন্তু এলাকাটা পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে তার অনেকটাই অনুপস্থিত। ইপিজেড থেকে বের হলেই সড়কে দুরবস্থা চোখে পড়বে। এ ছাড়া দুর্গন্ধে চলা দায়। এসব থেকে মুক্ত হওয়া দরকার।

আলিশাপাড়া এলাকার বাসিন্দা যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিন্টু বলেন, ‘আমাদের এলাকায় সমস্যায় জর্জরিত। দল সরকারে আছে, অথচ আমাদের দুর্ভাগ্য—এলাকার সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক। বৃষ্টি হলেই ড্রেনের ময়লা পানি আর বৃষ্টির পানি একাকার হয়ে যায়। সাধারণ মানুষ আমাদের দিকেই আঙুল তুলে কথা বলেন। কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারি না।’

এলাকার বাসিন্দারা জানান, তাঁরা বিশুদ্ধ পানি ও গ্যাসের সংকটে নাজেহাল। আর সড়কের অবস্থা নাজুক। বিশেষ করে হক সাহেব রোড, আবদুল মাবুদ সওদাগর সড়ক ও কাজির গলির পাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করুণ।

ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় সূত্র জানায়, নতুন করে ৮০ কোটি টাকার সড়ক কালভার্ট ড্রেন বরাদ্দ দেওয়ার জন্য প্রকল্প দেওয়া হয়েছে।

ব্যাংক কলোনি রোডের চিকিৎসক সৈয়দ সাদাত নুর ইতু বললেন, এখানে চসিকের একটি মাতৃসদন আছে। বিজিএমইএর একটি চিকিৎসাকেন্দ্র আছে। নৌ বাহিনীর হাসপাতাল আছে। কিন্তু স্থানীয় জনসাধারণের জন্য তা অপ্রতুল। এই ওয়ার্ডে একটি আধুনিক হাসপাতাল প্রয়োজন। সাধারণ মানুষ নৌবাহিনীর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারেন না।

এই ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৯৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬১ হাজার ২৯ জন ও নারী ৬২ হাজার ৩৬৮ জন। এলাকায় সাক্ষরতার হার ৯৫ শতাংশ হলেও শিক্ষার হার ৭০ শতাংশ। 
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন বলেন, এই ওয়ার্ডটি বেশ অবহেলিত। এই এলাকার প্রতি নজর দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হবে। এখানকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতসহ সড়কের উন্নয়ন জরুরি।

তিনি বলেন, ‘ছিনতাই এ ওয়ার্ডের বড় সমস্যা। চট্টগ্রামের ইপিজেডের কর্মকর্তা-শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার পর বেশি ছিনতাই হয়। আগে মদ বিক্রেতা ছিল। তবে এখন কমে এসেছে। ভাসমান কিছু ইয়াবা বিক্রেতা আছে। কিছু কিছু শোনা যায় কিন্তু প্রমাণ পাওয়া যায় না। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নেই। তবে শ্রমিকদের মধ্যে কিছু সমস্যা হয় মাঝে মাঝে সেটি সমাধান হয়ে যায়। ওয়ার্ডের উন্নয়নে আমি সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইপিজেডে মাঝেমধ্যেই শ্রমিক অসন্তোষ থাকে। তা ছাড়া ভোররাতে কিছু ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটে। তবে বড় কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এ এলাকায় ঘটে না। সার্বিকভাবে বলতে গেলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।’ তবে এখানের বেশির ভাগ মানুষ বাইরের জেলার, ফলে কোনো ঘটনা ঘটলে তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায় না বলে দাবি করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

ভারতের পাল্টা আক্রমণে দিশেহারা অস্ট্রেলিয়া

ঢাকা কলেজে সংঘর্ষকালে বোমা বিস্ফোরণে ছিটকে পড়েন সেনাসদস্য—ভাইরাল ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনা

ঐশ্বরিয়ার বিচ্ছেদের খবরে মুখ খুললেন অমিতাভ

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত