স্থানীয় বাসিন্দা ও কোস্টগার্ডের মধ্যে উত্তেজনা, থমথমে সেন্টমার্টিন

কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৪, ২২: ৩০

বঙ্গোপসাগরে ট্রলার ও স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে অসহযোগিতা করাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে কোস্ট গার্ডের চৌকিতে স্থানীয়রা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি করেছেন বাহিনীর সদস্যরা। 

এতে একজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে ট্রলার ও সন্ধ্যায় স্পিডবোট ডুবির ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয় বাসিন্দা ও কোস্টগার্ডের মধ্যে উত্তেজনার জেরে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেন্টমার্টিনে থমথম পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দ্বীপের সব দোকানপাট বন্ধ দেখা গেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া স্থানীয়রা ঘর থেকে তেমন বের হচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম। 

তিনি বলেন, কোস্টগার্ড সদস্যরা দ্বীপে টহল জোরদার করেছেন। তবে আতঙ্কে দ্বীপের মানুষজন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। 

স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ট্রলারডুবির পর কোস্ট গার্ডকে অবহিত করা হলেও তারা উদ্ধার তৎপরতা চালায়নি। পরে দ্বীপবাসী সার্ভিস বোট ও ফিশিং ট্রলার নিয়ে উদ্ধারে যেতে চাইলে কোস্ট গার্ডের সদস্যরা স্থানীয়দের বাধা দেন। তারপরও স্থানীয়রা জেলেদের উদ্ধারে সাগরে যান এবং ১১ জনকে উদ্ধার করেন। অপরজন নুর মোহাম্মদ সৈকত নামের এক তরুণের খোঁজ পাননি তাঁরা। 

উদ্ধার ব্যক্তিদের নিয়ে ঘাটে ফিরলে কোস্ট গার্ডের সদস্যরা তাঁদের সঙ্গে ছবি তোলার চেষ্টা করেন। তখন উদ্ধারে যাওয়া লোকজন ও স্থানীয়রা তাদের ছবি তুলতে বাধা দেন। একপর্যায়ে উত্তেজিত লোকজন কোস্ট গার্ডের চৌকিতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। কোস্ট গার্ড এ সময় ফাঁকা গুলি ছুড়ে। এতে দ্বীপের কোনাপাড়ার করিম উল্লাহর ছেলে হামিদ হোসেন গুলিবিদ্ধ হন। তিনি সেন্টমার্টিনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

এর আগে গতকাল বুধবার দুপুরে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে মাঝসাগরে মাছ ধরার ট্রলারটি ১২ যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। স্থানীয়দের তৎপরতায় ১১ জন উদ্ধার হলেও সৈকত নিখোঁজ রয়েছেন। ওই তরুণকে খুঁজতে গিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় স্পিডবোট ডুবে আরও দুই যুবক নিখোঁজ হন। নিখোঁজ দুজন হলেন সেন্টমার্টিনের আজম আলীর ছেলে মো. ইসমাঈল (২৮) ও আবদুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ ফাহাদ (৩০)। 

আজ বৃহস্পতিবার রাত ৮টা পর্যন্ত এই দুই যুবকের খোঁজ মেলেনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান। 

তিনি বলেন, বুধবার বেলা ৩টার দিকে শাহপরীর দ্বীপ ঘোলার চর থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে মাঝসাগরে ট্রলার ডুবে যায়। এ ঘটনায় উদ্ধার তৎপরতা চালানো নিয়ে অসহযোগিতা করায় স্থানীয়দের সঙ্গে গতকাল কোস্ট গার্ডের ঝামেলা তৈরি হয়। একপর্যায়ে স্থানীয়রা কোস্ট গার্ডের চৌকিতে হামলা, ভাঙচুর চালায়। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত পরিস্থিতি থমথমে ছিল। 

মুজিবুর রহমান আরও বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সেন্টমার্টিন থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা চারটি স্পিডবোটে করে উদ্ধার অভিযানে নামে। বুধবার বিকেল ৫টার দিকে ডুবে যাওয়া ট্রলারের ১১ জনকে জীবিত উদ্ধার করে সেন্টমার্টিন ফিরছিল স্পিডবোটগুলো। ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ আরেকজনকে উদ্ধার করতে গিয়ে একটি স্পিডবোট ডুবে যায়। সেখানে ৬ জন ছিলেন। গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে ডুবে যাওয়া স্পিডবোটের ৪ জন সাঁতরিয়ে শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম সৈকতে ওঠেন। 

সেন্টমার্টিন সার্ভিস বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ৬৫ দিন মাছ ধরার সরকারি নিষেধাজ্ঞার সময় সেন্টমার্টিনের সাদ্দাম হোসেনের মালিকানাধীন এফবি সাদ্দাম টেকনাফ ঘাটে ছিল। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর ট্রলারটি সেন্টমার্টিনদ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। 

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, কোস্ট গার্ডের সঙ্গে স্থানীয়দের বিরোধ নিরসনে কাজ চলছে। 

এ ব্যাপারে সেন্টমার্টিন কোস্ট গার্ডের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত