নোয়াখালী সুবর্ণচরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর প্রেসক্রিপশন (ব্যবস্থাপত্র) টানাটানির ঘটনায় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই ভাইসহ তিনজন আহত হয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালে মূল ফটকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত রিপনের মা আবিদা বেগম বাদী হয়ে চরজব্বর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

আহতেরা হলেন—চরজুবিলী গ্রামের মৃত আলমগীর জিহাদীর ছেলে সহিদ উল্যাহ রিপন (২৪), রিয়াজ উদ্দিন (২২) ও মৃত হাবিব উল্যাহর ছেলে বেলাল হোসেন (৫৫)।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে চরজব্বার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে ডায়েরিয়া জনিত সমস্যা নিয়ে একটি শিশুকে তার স্বজনেরা নিয়ে আসে। এ সময় হাসপাতালের সামনের ব্রাদার্স ফার্মেসি ও নুর ফার্মেসির দুই দোকানদারের মধ্যে ব্যক্তিগত রোগী দাবি করে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এ সময় জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের সামনে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। 

হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে বের হয়ে মূল ফটকে এলে নিজেদের স্বজনদের ডাকেন দোকানিরা। দ্বিতীয় দফায় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে হাসপাতালের সামনের দোকানদার ব্রাদার্স ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী রিপন ও রিয়াজ আহত হন। আহতেরা বর্তমানে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

থানায় অভিযোগে জানা গেছে, দুই ফার্মেসি দোকানদার সম্পর্কে চাচা ও ভাতিজা। তাঁদের মধ্যে আগে থেকে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন রাতে হামিদ উল্যাহর সঙ্গে সহিদ উল্যাহ রিপনের হাসপাতালের রোগীদের ওষুধের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এ সময় হামিদ ও তাঁর ছেলে ইয়াসির হামিদ দীপ্ত, তাঁর ভাই ইকবাল, রহিম উল্যাহ, আনোয়ারসহ অজ্ঞাত ৫-৬ জনের একটি দল রিপনের ওপর হামলা চালিয়ে বাম হাত ভেঙে দেয়। 

রিপনকে বাঁচাতে তাঁর ভাই রিয়াজ এগিয়ে এলে তাঁকেও পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেন অভিযুক্তরা। এ সময় তাঁদের ধরতে গেলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত বেলাল হোসেন আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের শুক্রবার সকালে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

মারধরের বিষয়ে হামিদ উল্যাহ বলেন, ‘আমার ছেলে ওষুধের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় রিপন তাকে ধমক দিয়ে গালি দিলে আমি প্রতিবাদ করি। এতে রিপন ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। পরে আমি দোকানে গেলে রিপন সেখানেও আমাকে আক্রমণ করে। নিজেকে বাঁচাতে আমার দোকানের রড দিয়ে আঘাত করি কিন্তু আঘাতটি কোথায় পড়েছে আমি খেয়াল করিনি। হাতে অথবা মাথায় পড়তে পারে। অনেক দিন তাঁদের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।’ 

চরজব্বার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান সহকারী মো. কুতুব উদ্দিন বলেন, ‘রোগীদের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে প্রায় হাসপাতালের সামনের ওষুধ দোকানদারদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এ জন্য দালাল ও দোকানদারদের হাসপাতালে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়েছে।’ 

চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেব প্রিয় দাস বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ নেওয়া হবে।’