বন্যায় শেষ শহিদুলের বেঁচে থাকার সম্বল

সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১: ২৭
Thumbnail image

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের আকিলপুর গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে শহিদুল ইসলাম মানিক। দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে একই ইউনিয়নের সমপুরে শ্বশুরবাড়িতে থেকে শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। পরে ছোটখাটো ব্যবসার পরিকল্পনা করেন শহিদুল। পুঁজি হিসেবে শ্বশুরবাড়ি থেকে দেওয়া হয় কয়েক লাখ টাকা। আরও কয়েকটি এনজিও থেকে কিস্তিতে ঋণ নেন তিনি। পরে উপজেলার বক্তারমুন্সি বাজারে ‘মোস্তফা বিডিং শোরুম’ নামে একটি দোকান দেন। কারখানা ও গুদামের ব্যবস্থাও করেন।

ফেনীতে বন্যা শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগে কয়েক লাখ টাকার তুলা এনে রেখেছিলেন গুদামে। কাজ চলমান থাকায় কয়েক লাখ টাকার জিনিসপত্র ছিল কারখানায়। বিক্রির জন্য তৈরি করা কয়েক লাখ টাকার লেপ, তোশক, জাজিম, বালিশ রাখা ছিল শোরুমে। কিন্তু কারখানা, গুদাম ও শোরুমে বন্যার পানি ঢুকে সব মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। কোনো কিছুই বিক্রি করার মতো অবস্থায় নেই। বন্যায় বেঁচে থাকার শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন শহিদুল। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি তাঁর।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার সমপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, গুদাম ও কারখানার ভিজে যাওয়া জিনিসপত্র রোদে শুকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এ সময় শহিদুলকে সহায়তা করতে দেখা গেছে কারখানার এক কর্মচারীকেও। কথা হলে শহিদুল জানান, বিভিন্ন ফরমাশ পেয়ে সেই অনুযায়ী কাজ শুরু করেছিলেন তিনি ও কর্মচারীরা। কিন্তু বন্যায় সব শেষ হয়ে গেছে। দোকানের কোনো কিছুই রক্ষা করা যায়নি। সপ্তাহখানেক পানিতে ডুবে ছিল সবকিছু। সমপুরে থাকা কারখানা ও গুদাম থেকে কোনো কিছুই রক্ষা করা যায়নি। এখন ভেজা তুলাগুলো শুকিয়ে ব্যবহারের উপযোগী করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। 
সমপুরের স্থানীয় বাসিন্দা রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এখানে বন্যার সময় প্রায় ছয়-সাত ফুট পানি উঠেছে। বেশির ভাগ মানুষের ক্ষতি হয়েছে। শহিদুলের গোডাউন ও কারখানা পানিতে ডুবে ছিল।’

শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার সব শেষ হয়ে গেছে। কয়েকটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছি, কিস্তি দেওয়ার সময় হয়ে গেছে। অথচ আমি আজ কয়েক দিন ভালো করে খেতেও পারছি না। সংসার ও ব্যবসা সচল করতে পুঁজি কোথায় পাব সেটাও বুঝতেছি না। কয়েকজনের পরামর্শে ইউনিয়ন পরিষদে কয়েকবার গিয়েছিলাম, কিন্তু কোনো সহায়তা পাইনি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে লিখিত আবেদন করলে আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত