Ajker Patrika

মহিষের গুঁতোয় নাড়িভুড়ি বেরিয়ে গেছে কৃষকের, স্ত্রীও আহত

রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি
মহিষের গুঁতোয় নাড়িভুড়ি বেরিয়ে গেছে কৃষকের, স্ত্রীও আহত

নরসিংদীর রায়পুরায় জমিতে কাজ করার সময় মহিষের আক্রমণে কৃষক দম্পতি গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এই দুর্ঘটনায় কৃষকের পেটে মহিষের শিং ঢুকে যাওয়ায় নাড়িভুড়ি বের হয়ে যায় এবং তাঁর স্ত্রীর নিতম্বে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে তাঁরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

স্থানীয়রা বলছে, ওই মহিষটি জবাই করে বিক্রির উদ্দেশ্যে কিনেছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য। 

আজ সোমবার বেলা ১০টার দিকে উপজেলার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের লোচনপুর গ্রামের ফুলদির চক এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। 

আহত ওই কৃষক দম্পতির নাম—গোলাপ মিয়া (৭০) ও শিরিয়া বেগম (৬০)। তাঁরা ওই গ্রামের বাসিন্দা। 

রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা খান নুর উদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মহিষের শিংয়ের আঘাতে গোলাপ মিয়ার পেটের ভুঁড়ি বের হয়ে গেছে। অন্যদিকে শিরিয়া বেগমের নিতম্বে জখম হয়েছে। তাদের দুজনকে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। তাদের শারীরিক পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়।’ 

আহতদের স্বজন ও স্থানীয় কৃষকেরা জানান, পাগলা মহিষটি সাবেক ইউপি সদস্য পণ্ডিত মিয়া জবাই করে বিক্রির উদ্দেশ্যে কিনে এনেছিলেন। সকাল ১০টার দিকে তাঁর স্ত্রী সকালে ঘাস পানি খাওয়ানোর জন্য মহিষটিকে নিয়ে মাঠে যান। একপর্যায়ে এটি দৌড়াতে শুরু করে। এরপর প্রায় এক কিলোমিটার দূরত্বে অন্য একটি ফসলি জমিতে যায়। সেখানে কৃষিকাজে ব্যস্ত গোলাপ মিয়া ও শিরিয়া বেগম কাজ করছিলেন। দাঁড়িয়ে থাকা শিরিয়া বেগমকে শিং দিয়ে নিতম্বে আঘাত করে মহিষটি। এরপরই তাঁকে ওপরে তুলে ঘোরাতে শুরু করে। এ সময় গোলাপ মিয়া স্ত্রীকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে শিরিয়া বেগমকে নিচে ফেলে দেয় এবং গোলাপ মিয়ার পেটে শিং ঢুকিয়ে দেয় মহিষটি। এই ঘটনায় গোলাপ মিয়ার ভুঁড়ি বের হয়ে যায়। এ ছাড়াও দুজনই মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এরপরই মহিষটি দৌড়ে অন্যত্র পালিয়ে যায়। 

 ক্ষতিগ্রস্থ ফসলের মাঠপরে স্থানীয়রা ওই দম্পতিকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। এ দিকে মহিষটি বিভিন্ন ফসলি জমি নষ্ট করে। পরে স্থানীয়রা মহিষটিকে আটক করে। 

আজ সোমবার বিকেলে আহতদের মেয়ে সাথী আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আব্বা-আম্মা দুজনের অবস্থাই খারাপ। দুজনের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হয়েছে। আব্বার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে, অপারেশন লাগবে।’ 

উত্তর বাখরনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. হাবিব উল্লাহ হাবিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাগলা মহিষটির আক্রমণে অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর শুনেছি। তাদের মধ্যে গোলাপ মিয়া ও শিরিনা বেগমের অবস্থা গুরুতর। ঢাকা মেডিকেলে দুজনের চিকিৎসা চলছে। স্থানীয়রা দৌড়ে মহিষটিকে আটক করে মালিকের জিম্মায় রেখেছে।’ 

এ বিষয়ে রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নবী হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মহিষের আক্রমণে দুজন গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহতদের পরিবারের সঙ্গে খোঁজ-খবর রাখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ভিসা নীতি দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে: বলছেন কূটনীতিকেরা

বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রদল ও এনসিপি

ফাইনালে ভারতের ‘যম’কে খেলানো নিয়ে দোটানায় নিউজিল্যান্ড

ফেরত পাঠাতে ৫০০ বাংলাদেশিকে চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র

নিষিদ্ধ হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল, পুলিশের টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত