Ajker Patrika

কলাবাগানে চিকিৎসক খুন: মামলা হয়নি এখনো

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ০১ জুন ২০২১, ২২: ২০
কলাবাগানে চিকিৎসক খুন: মামলা হয়নি এখনো

ঢাকা: রাজধানীর কলাবাগানে চিকিৎসক কাজী সাবেরা রহমান লিপিকে (৪৭) রোববার দিবাগত মধ্যরাতে খুন করা হয়েছে। পরে সকালের দিকে তাঁর রুমের জাজিমে আগুন দিয়ে লাশ পোড়ানো চেষ্টা করা হয়। খুনের ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলা করা হয়নি। লাশের ময়নাতদন্তের পর আজ বিকেলে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শাহেনশাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমরা নিহতের স্বামীসহ অন্তত ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। ঘটনার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসার সাবলেট ভাড়াটিয়া কানিজ সুর্বণা, তাঁর ছেলে বন্ধু মাহাথির মোহাম্মদ স্পন্দন, বাসার দারোয়ান রমজান ও কাজের মহিলাকে আটক করেছিলাম। মঙ্গলবার রাতে কাজের মহিলাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। বাকিদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। মামলা হওয়ার পর তাদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে আজ দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে চিকিৎসকেরা জানান, শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে শ্বাসনালি কেটে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। রোববার মধ্যরাতের দিকে তাঁকে হত্যা করা হয়। তার কয়েক ঘণ্টা পর আগুনে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মদ মাকসুদ বলেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ভিসেরা রিপোর্ট ও কেমিক্যাল অ্যানালাইসিসের জন্য মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

গ্রিনরোডের বাসায় থাকেন নিহতের মা ও দুই সন্তান। সেই বাসার কেয়ারটেকার কবির হোসেন বলেন, স্থানীয় মসজিদের আছর নামাজের পর জানাজা হয়। পরে আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। নিহতের সন্তানদের ব্যাপারে তিনি বলেন, বড় ছেলে তাজওয়ার আহমেদ কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছেন। দুপুরে খাওয়া দাওয়া করেছেন। কিন্তু মেয়ে আনবার খাওয়া দাওয়া করছে না। নিহতের মায়ের ব্যাপারে তিনি বলেন, তার বয়স প্রায় ৭০ বছর। মেয়ের খুনের ঘটনার পর থেকে কথা বলছেন না। শুধু কান্নাকাটি করছেন। দুই ছেলে অস্ট্রেলিয়া থাকেন। একমাত্র মেয়ে দেশে ছিলেন। মেয়েকে হারিয়ে অনেকটাই নির্বাক হয়ে গেছেন।

সাবেরার চাচাতো ভাই রেজাউল হাসান বলেন, ময়নাতদন্তের পর দাফন হয়েছে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। এখন আমরা পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে মামলা দায়ের করব। আমরা প্রতিনিয়ত পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। গোয়েন্দা পুলিশ এ ঘটনার জন্য কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

সাবেরা রহমানের মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে কলাবাগান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তাহমিনা রহমান। সুরতহাল প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, মৃতদেহের বুক থেকে নিচের সম্পূর্ণ অংশে পোড়া দগ্ধ। এ ছাড়া তার গলার বাম পাশে দুটি কাটা চিহ্ন, কানের নিচে, পিঠের মাঝ বরাবর তিনটি কাটা ও কোমর একটি কাটা চিহ্ন রয়েছে। ৩০ মে দিবাগত রাত এগারোটা থেকে ৩১ মে সকাল দশটার মধ্যে যেকোনো সময় পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

আটক মাহাথীর মোহাম্মদ স্পন্দনের বাবা খায়রুল আলম মুকুল বলেন, সকালে তাঁর ছেলে বাসায় নাস্তা করছিল। এ সময় কানিজ সুর্বণা ফোনে জানায় তার বাসায় আগুন লেগেছে। পরে তিনি দ্রুত একটি উবারের গাড়ি নিয়ে ওই বাসায় যান। বাসায় যাওয়া কিছুক্ষণ পরই তাঁর ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে জানতে পারি তাকে আটক করা হয়েছে। মাহাথীরের আরেক আত্মীয় জানান, মাহাথীর নাটক ও মিউজিক ভিডিও বানান। সুর্বনা গান করে এবং মিউজিক ভিডিও এর মডেল হিসাবে কাজ করেন। সেখান থেকেই তাদের মধ্যে পরিচয়। খুন হওয়ার পরই খবর পেয়ে তিনি সেখানে যান।

রাজধানীর কলাবাগানের ফার্স্ট লেনের ৫০ / ১ নম্বর বাসার তিন তলা থেকে সোমবার সকালে সাবেরা রহমানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি গ্রিন লাইফ হাসপাতালের রেডিওলজিষ্ট হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর স্বামী শান্তিনগরের একটি বাসায় থাকতেন। দুই সন্তান থাকতেন মায়ের কাছে। তিনি দুজন নারী সাবলেটসহ কলাবাগানের বাসায় গত জানুয়ারি থেকে থাকতেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত