Ajker Patrika

নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ: বালু-সিমেন্ট জমাট বাঁধেনি, খসে পড়ছে বস্তা

হারুনূর রশিদ, রায়পুরা (নরসিংদী) 
নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ: বালু-সিমেন্ট জমাট বাঁধেনি, খসে পড়ছে বস্তা

নরসিংদীর মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বাঁধ নির্মাণে পাটের বস্তায় থাকা বালু ও সিমেন্টের মিশ্রণ জমাট বাঁধেনি। বেশ কিছু অংশে পচে যাওয়া বস্তা থেকে বালু-সিমেন্ট খসে খসে পড়ছে। এদিকে গত বছর নির্মিত কবরস্থান এলাকার বাঁধের পুরোটা নদীতে ধসে পড়েছে। যাতে বর্ষায় পানি বৃদ্ধিতে নতুন করে ভাঙনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

নরসিংদী পাউবো সূত্রে জানা গেছে, জেলার রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নে ফকিরের চর এলাকায় দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে মেঘনার ভাঙনে তীরবর্তী ফসলি জমি, কবরস্থান ও ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে যায়। পরে স্থানটির গুরুত্ব বিবেচনা করে তীর রক্ষায় অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণকাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। জরুরি কাজের অংশ হিসেবে চারটি লটে তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে পাউবোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় গুডম্যান এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সে অনুযায়ী প্রায় ২৮ হাজার বালু ও সিমেন্ট মিশ্রিত পাটের বস্তা ভরে তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে। এক বছর আগে চার ধাপে ৮৫ মিটার এবং চলতি বছর (প্রায় তিন মাস আগে) ৩১৩ মিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়। প্রতি ধাপে ৪৫ লাখ করে মোট ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

স্থানীয় বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব আব্দুল মালেক বলেন, ‘৪০ বছর আগে শুরু হওয়া ভাঙন রোধে এত দিন পর কাজ হয়েছে। তাও আবার বাঁধ নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। পাটের বস্তা পচে বালু-সিমেন্ট নদীতে গিয়ে পড়ছে। বর্ষা শুরু হলে আবার ভাঙন দেখা দেবে। কাজ করার সময় তারা বলছিল, পাটের বস্তায় দেওয়া সিমেন্ট-বালুর মাধ্যমে পাটাতন হবে। এখন দেখি বস্তায় বালু আর বালু। সঠিক নিয়মে বালু ও সিমেন্ট মেশানো হয়নি। সিমেন্ট দিলে কিছু জোড়া লাগত।’

ফকিরের চর মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা শামসুল ইসলাম বলেন, ‘মেঘনায় বিলীন হয়ে গেছে কবরস্থান, মাদ্রাসার জমি ও ঘর। তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ হওয়ায় আমরা খুবই খুশি হই। কিন্তু নিম্নমানের বালু ও সিমেন্ট দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করায় তা ভেঙে পড়ে যাচ্ছে। গত বছর কবরস্থানের অংশটুকুর কাজ তারাই করেছিল। কিন্তু এক বছরেই সব শেষ। এ বছরেরটাও নদীতে চলে যাবে। বস্তা থেকে বালু বের হয়ে ধসে যাচ্ছে। কাজটি সঠিক হয়নি।’

বালু-সিমেন্ট জমাট বাঁধেনি, খসে পড়ছে বস্তা। ছবি: আজকের পত্রিকানাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, বস্তায় মোটা বালুর পরিবর্তে চিকন বালু ব্যবহার করা হয়েছে। বালুর সঙ্গে সিমেন্ট কম দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দায়সারাভাবে কাজ করায় এমনটা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুডম্যান এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি আবু জাবেদ ঝন্টু কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

জেলা পাউবোর সহকারী প্রকৌশলী সাহাবুদ্দিন আহমেদ বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘খবর পেয়ে পরিদর্শন করে এসেছি। সামান্য ত্রুটি আছে, তা ঠিকঠাক করে দেব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শংকর চক্রবর্তী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তীর রক্ষা বাঁধ এলাকা পরিদর্শন শেষে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতের নির্দেশনা দিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

রাজধানীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে ইরানের দুই নাগরিককে মারধর

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ: ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা, নিষিদ্ধের দাবি শিক্ষার্থীদের

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে পন্টিংয়ের আরেকটি রেকর্ড ভাঙলেন কোহলি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত