Ajker Patrika

আত্মহত্যা নয় কোহিনূরকে হত্যা করা হয়েছে, বলছে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২৩, ১৯: ৪৩
আত্মহত্যা নয় কোহিনূরকে হত্যা করা হয়েছে, বলছে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন

চলতি বছরের ১০ এপ্রিল নিজ বাড়িতে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল কোহিনূর বেগমের মরদেহ। সে সময় তাঁর স্বামী কে বি এম মামুন রশীদ চৌধুরী দাবি করেছিলেন, তাঁর স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন। কোহিনূরের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় অপমৃত্যুর মামলাও হয়েছিল। কিন্তু ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর পুলিশ বলছে, কোহিনূর আত্মহত্যা করেননি, থুতনির নিচে আঘাত করে ক্ষতবিক্ষত করে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে দায়ের করেন কোহিনূর বেগমের ভাই সালাউদ্দিন রহমাতুল্লাহ। মামলাটি এখন তদন্ত করছে পিবিআই ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগ। মামলায় কোহিনূরের স্বামী ও তাঁর পালিত মেয়ে এখন কারাগারে রয়েছেন।

মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা পিবিআইয়ের ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের অর্গানাইজড ক্রাইমের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সারওয়ার আলম বলেন, ‘হত্যা মামলা হওয়ার পর মামুন রশীদ ও তাঁদের পালিত মেয়েকে গ্রেপ্তার করে ধানমন্ডি থানা-পুলিশ। কোহিনূরের স্বামী ও মেয়েকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তদন্ত শেষে এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।’ 

কোহিনূর বেগম শহীদ পরিবারের সন্তান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসি অনুষদ থেকে স্নাতকোত্তর করে তিনি স্বনামধন্য একাধিক ওষুধ কোম্পানিতে কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর স্বামী কে বি এম মামুন রশীদ চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক এবং পালিত মেয়ে ফাইজা নূর রশীদ আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণাকেন্দ্র বাংলাদেশ-আইসিডিডিআরবি ঢাকার কর্মকর্তা। 

মামলার এজাহার ও পিবিআই সূত্র বলছে, চলতি বছরের ১০ এপ্রিল ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের নিজ বাসায় ঘটনাটি ঘটে। সে বাসায় কোহিনূর তাঁর স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন। 

কোহিনূরের স্বজনেরা বলেন, বিয়ের কয়েক বছর হয়ে গেলেও কোহিনূর মা হতে পারছিলেন না। তখন তিনি ফাইজা নামের এক মেয়েকে দত্তক নেন। এর মধ্যেই কোহিনূর নিজে এক ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। কোহিনূর বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করায় দুই সন্তানকে যথেষ্ট সময় দিতে পারছিলেন না। একপর্যায়ে সন্তানেরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এই অবস্থা দেখে কোহিনূর চাকরি ছেড়ে সংসারে মনোযোগ দেন। কিন্তু এতেও কোনো কাজ হয়নি। ফাইজার আচরণ এমন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে তিনি সামান্য কথাতেই মায়ের গায়ে হাত তুলতেন। আর মেয়েকে সমর্থন করতেন বাবা মামুন রশীদ। একপর্যায়ে ঘটনাটি ঘটে। 

পিবিআই জানায়, কোহিনূর বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্বামী মামুন রশীদ ধানমন্ডি থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেন। গত ১৫ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ থেকে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেয়ে ধানমন্ডি থানা-পুলিশ জানতে পারে কোহিনূরকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এরপর কোহিনূরের ভাই সালাউদ্দিন রহমতুল্লাহ বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে মামুন রশীদ ও ফাইজার নাম উল্লেখ করা হয়। 

কোহিনূরের ভাই সালাউদ্দিন রহমাতুল্লাহ বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত কমিটির প্রধান হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। সালাউদ্দিন রহমাতুল্লাহ বলেন, তাঁর চাওয়া এই ঘটনার প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসুক এবং তাঁর বোনের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হোক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত