Ajker Patrika

আমার জীবনের নিরাপত্তা নেই, ক্ষতি হলে এমপি মমতাজ দায়ী: আ.লীগ নেতা

হরিরামপুর ও মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ জুন ২০২৩, ০০: ০১
আমার জীবনের নিরাপত্তা নেই, ক্ষতি হলে এমপি মমতাজ দায়ী: আ.লীগ নেতা

স্থানীয় সংসদ সদস্য (মানিকগঞ্জ-২ আসন) মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তর অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা দেওয়ান সাইদুর রহমান। তিনি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক। 

আজ শুক্রবার বিকেলে উপজেলা পরিষদ চত্বরে শহীদ মিনারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন তিনি। এমনকি মমতাজ বেগম ও তাঁর অনুসারীদের কারণে জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি শঙ্কিত বলেও উল্লেখ করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, প্রায় এক বছর আগে উপজেলায় ঝিটকা আনন্দমোহন উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে তিনি সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমও ওই পদে প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে অনুসারীদের দিয়ে তাঁর দুই ভোটারকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। পরে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। 

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাইদুর রহমান। এতে সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম ক্ষুব্ধ হয়েছেন। সম্প্রতি উপজেলায় পদ্মা নদীতে বালুমহাল ইজারা পান সাইদুর। এ বালুমহাল ইজারা নিতে দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নেন মমতাজ বেগমের ব্যক্তিগত সহকারী। সরকারি নিয়ম অনুযায়ীই তিনি বালুমহাল ইজারা পেয়েছেন। কিন্তু মমতাজ বেগম বালুমহাল বাতিল করতে ভূমি মন্ত্রণালয়ে আধা সরকারি পত্র (ডিও লেটার) দেন। তবে বালুমহালটি বাতিল হয়নি। এসব নিয়ে মমতাজ বেগম তাঁর ওপর চরম ক্ষুব্ধ। 

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ থেকে শুরু করে তিনি এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। তিনবারের নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা-কর্মী তাঁর সঙ্গে। মমতাজ বেগম বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের দলে স্থান দিয়েছেন। এ কারণে ত্যাগী ও যোগ্য নেতারা দলীয় কর্মসূচি থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন। 

স্থানীয় এমপি মমতাজের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুর রহমানসাইদুর রহমান অভিযোগ করেন, এক বছরে সংসদ সদস্যের অনুসারী ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মী অন্তত ২০ জনের মাথা ফাটিয়েছেন। সর্বশেষ ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মমতাজ বেগম তাঁর ওপর জুলুম, অত্যাচার শুরু করেছেন। মামলা ও হামলা করে হয়রানি করছেন। উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান একসময় ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। লুৎফরসহ সংসদ সদস্যের অনুসারী ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নামধারী নেতা-কর্মীরা চাপাতি ও রামদা নিয়ে মোটরসাইকেলে করে তাঁর (সাইদুর) কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে গিয়ে হামলার চেষ্টা করছেন। 

সাইদুরের অনুসারী নেতা-কর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। তাঁর ছেলের বিরুদ্ধেও তিনটি মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার উপজেলা চত্বরে পুলিশের সামনেই এমপির অনুসারীরা ধুলশুড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালামকে মারধর করা হয়। একই দিনে হৃদয় নামের এক সাধারণ তরুণকে বেদম মারধর করা হয়। এ ছাড়া কয়েক দিন আগে ওই সন্ত্রাসীরা যুবলীগের এক নেতার হাত ভেঙে দিয়েছে। এসব ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। হরিরামপুর থানার ওসি বলেছেন, ‘ওপরের চাপ আছে। এ কারণে মামলা নেওয়া হয়নি।’ 

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান বলেন, ‘আমার জীবনের নিরাপত্তা নেই। বিভিন্ন মহল থেকে আমাকে বলা হচ্ছে, আমি যেন লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে চলি। আমার কোনো ক্ষতি হলে সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম ও তাঁর অনুসারীদের জন্যই হবে।’ 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের কোনো সন্ত্রাসী বাহিনী নেই। তাঁরা কাউকে মারধর ও হামলা করেননি; বরং উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে ও তাঁর লোকজন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছেন। 

মামলা না নেওয়ার বিষয়ে আজ শুক্রবার বিকেলে হরিরামপুর থানায় গেলে ওসি সুমন কুমার আদিত্যকে পাওয়া যায়নি। পরে তাঁর সরকারি ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। 

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের অভিযোগের বিষয়ে সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার কোনো সন্ত্রাসী গ্রুপ নেই। আমার কর্মকাণ্ড এবং ওনাদের (উপজেলা চেয়ারম্যান) কর্মকাণ্ড মানুষ জানে। কী কারণে তিনি আওয়ামী লীগের লোকজনের ওপর ক্ষিপ্ত, তা তিনিই ভালো বলতে পারবেন। তাঁর ছেলে ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগের নেতাদের মারধর করেছে। তিনি ও তাঁর ছেলে বেপরোয়া হয়ে গেছেন। তাঁদের কারণেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। পদ্মা নদীর বাঁধের কাছে বালু উত্তোলন করায় স্থানীয় জনগণই বাধা দিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত