Ajker Patrika

রাত পোহালেই টান টান উত্তেজনার ভোট

তানিম আহমেদ ও সাবিত আল হাসান, নারায়ণগঞ্জ থেকে
আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ২৩: ১৩
রাত পোহালেই টান টান উত্তেজনার ভোট

রাত পোহালে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের অন্যতম বাণিজ্যিক নগরী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) নির্বাচন। সদ্য সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী কি জয়ের হ্যাটট্রিক করবেন নাকি নগরবাসী নতুন নগর পিতা নির্বাচন করবেন সেটাই নারায়ণগঞ্জ তথা দেশবাসীর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। দুই হেভিওয়েট প্রার্থী আইভী ও তৈমুর আলম খন্দকার সহিংসতার আশঙ্কা করলে তা উড়িয়ে দিচ্ছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন। তাঁদের দাবি ভোটাররা ভোট দিয়ে নির্বিঘ্নে বাসায় ফিরতে পারেন, তার ব্যবস্থাই করা হয়েছে। অন্যদিকে ভোটদের দাবি, তাঁরা যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে, সুষ্ঠুভাবে ভোট দিয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারেন। 
 
নাসিক নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী সাতজন হলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকা প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী ও বিএনপি থেকে সদ্য অব্যাহতি পাওয়া নেতা তৈমুর আলম খন্দকারের হাতি প্রতীকের। নির্বাচনী প্রচারণায় এগিয়ে ছিলেন এই দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা। 
 
অন্য পাঁচজন মেয়র প্রার্থী হলেন খেলাফত মজলিসের এবিএম সিরাজুল মামুন (দেয়ালঘড়ি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মো. মাছুম বিল্লাহ (হাতপাখা), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসীম উদ্দিন (বটগাছ), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো. রাশেদ ফেরদৌস (হাতঘড়ি) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলাম (ঘোড়া)। 

সেলিনা হায়াৎ আইভীচ্যালেঞ্জের সামনে আইভী
আওয়ামী লীগের নেতাদের দাবি, নারায়ণগঞ্জের যেকোনো অধিকার আদায়ে আইভী সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির তেমন অভিযোগও ওঠেনি। এই কারণে তাঁর ওপরেই আস্থা রেখেছে দল। নির্বাচনী প্রচারণায়ও আমরা বিপুল সাড়া পেয়েছি। প্রার্থী যেমন আশা করছে লক্ষাধিক ভোটে তিনি বিজয়ী হবেন, আমাদের তেমন না থাকলে আশা রাখছি ৬০ থেকে ৭০ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হব। 
 
নির্বাচন পরিচালনার জন্য সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানককে সমন্বয়ক করে একটি টিম করে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে ২৭ ওয়ার্ড ভিত্তিক আলাদা কমিটি করে তাঁরা। নেতারা প্রতিদিনই প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেন। প্রচারণার শেষদিন শুক্রবার রাতে নারায়ণগঞ্জের একটি ক্লাবে সবাই বৈঠক করেন। সেখানে তাঁরা ওয়ার্ডভিত্তিক ভোটের একটি চিত্র তুলে ধরেন। সেখানকার চিত্র অনুযায়ী আইভী ৭০ হাজার ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। 
 
তবে, এই চিত্রের বিপরীত কথাও বলছেন দলটির কেউ কেউ। তাঁদের দাবি গত দুইবারের নির্বাচনে আইভী যত সহজে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। এইবার তত সহজ হবে না। টানা তিন মেয়াদে তিনি নারায়ণগঞ্জের নগরপিতার দায়িত্বে রয়েছেন। এতে অনেকই লাভক্ষতির হিসাব মেলাচ্ছেন। এ ছাড়া গত দুইবারের তুলনায় এইবার এখানে দলীয় কোন্দল বেশিই ভোগাচ্ছে। এই হিসাবে নৌকা তীরে ভিড়তে কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। 
 
আওয়ামী লীগের এক নেতা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিগত দুই মেয়াদে আইভী নারায়ণগঞ্জের চেহারাই বদলে দিয়েছেন। অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন করেছেন। দলের একপক্ষের বাধার মধ্যে শেখ রাসেল পার্ক করেছেন। এতে উন্নয়নেও নির্ভার থাকতে পারছি না। কারণ বিগত কয়েক ধাপে অনুষ্ঠিত বিএনপিবিহীন ইউপি নির্বাচনের নৌকার প্রার্থীর ভরাডুবিতে আমাদের ভাবাচ্ছে। কারণ দেশে এখন দুই ধরনের মানুষ আছে। একটা আওয়ামী লীগ। আরেকটা অ্যান্টি-আওয়ামী লীগ। গত নির্বাচনগুলোতে বিএনপিসহ তাঁদের জোটের কিছু ভোট আইভী পেয়েছিল। তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকলেও বেশিরভাগ ভোটগুলো তৈমুরের হাতিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

নারায়ণগঞ্জের ওসমান ও চুনকা পরিবার আওয়ামী লীগ করলেও তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রজন্মের পর প্রজন্মের। সেই ধারাবাহিকতা ওসমান পরিবারের সদস্য সরকার দলীয় সাংসদ শামীম ওসমান ও চুনকা পরিবারের সদস্য মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর মধ্যে বিদ্যনাম। দুজনেরই সাপে নেউলে সম্পর্ক। নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে শামীম ওসমানকে গডফাদার বলেও আখ্যা দেন আইভী। তৈমুরকে ওসমান পরিবারের প্রার্থী বলেও দাবি করেন তিনি। আইভীর এমন দাবির পরে সংবাদ সম্মেলন বিরোধ থাকা সত্ত্বেও নৌকার পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দেন সাংসদ শামীম ওসমান। 

আইভীর অনুসারীদের দাবি ঘোষণা দিলেও শামীম ওসমানের অনুসারীরা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়নি। কাজও করেনি। তাঁদের অনুসারী যেসব নেতা সাংগঠনিক দায়িত্বে রয়েছেন তাঁরা শুধু কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে হাজিরা দিচ্ছেন। এর বাইরে তেমন কাজ করছেন না। 
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের দলীয় ও উপদলীয় কোন্দল প্রকট। কোন্দলের কারণে অনেকই আইভীর পক্ষে তেমন সক্রিয় দেখা যাচ্ছে না। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে আইভীর ভোটের ওপর। 

নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, যে যাই বলুক না কেন নারায়ণগঞ্জে ওসমান পরিবারের একটা প্রভাব ও নিজস্ব কিছু ভোটব্যাংক রয়েছে। আইভী শামীম ওসমানকে গডফাদারে আখ্যায়িতসহ নানান কটূক্তি করেছেন। নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিন পর্যন্ত সেটা অব্যাহত ছিল। তাঁর এমন অহংকারী আচরণ তাঁদের বিক্ষুব্ধ করতে পারে। যার জবাব তাঁরা ব্যালটে দিতে পারেন। 

ওই নেতা বলেন, এখানে শামীম ওসমান বিরোধী একটা বড় ভোট ব্যাংক রয়েছে সেটা সত্য। এই ব্যাংকের বেশি ভোট কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের। সেই ভোট ব্যাংকগুলোকে কাছে রাখতে আইভী নিয়মিতই শামীম বিরোধিতা করে গেছেন। আবার প্রচার-প্রচারণায় তিনি দলীয় নেতাদের তেমন গুরুত্বও দেন নাই। ভোটের রাজনীতিতে বেশিরভাগের মনজয় করে চলতে হয়। 

আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য আনিসুর রহমান দীপু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী আইভী নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষের প্রার্থী। তাঁর বিজয়ে আমরা শতভাগ আশাবাদী। তিনি এবার বিজয়ে হ্যাটট্রিক করবেন।’ 

আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এই নির্বাচনে আইভীর বিজয়ের মধ্য দিয়ে আরও একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায় সরকার।’ 
 
পরাজিত হলে সারা দেশে সরকারের ভাবমূর্তি কিছুটা হুমকির সম্মুখীন হবে জেনেও জয়-পরাজয়ের চিন্তা মাথায় নিয়ে রেখেছে আওয়ামী লীগ। আইভীকে আস্থায় নিয়ে এই সিটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হচ্ছে। 

তৈমুর আলম খন্দকারবিজয়ে আত্মবিশ্বাসী তৈমুরও 
আওয়ামী লীগের মতো নারায়ণগঞ্জের বিএনপিতেও কোন্দল রয়েছে। সিটি এলাকার দুই সাবেক সাংসদ আবুল কালাম ও গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে তৈমুর আলম খন্দকারের। সেটি এখনো না মিটলেও বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জের দুই নেতার বেশকিছু অনুসারীদের হাতির পক্ষে কাজ করতে দেখা গেছে। তাতে নিজের বিজয়ে আত্মবিশ্বাসী তৈমুর। 

হাতি মার্কার প্রার্থী তৈমুরকে আজ শনিবার আরও ফুরফুরে আচরণ করতে দেখা গেছে। আইভী-শামীমের ভেতরে বিরোধ মীমাংসা হয়নি এখনো। বিরোধের মীমাংসা না হওয়ায় নির্বাচনে তাঁর জয়ের ক্ষেত্রে আস্থা তৈরি হয়েছে। তাই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে তাঁর নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করার অভিযোগ তুললেও হতাশ নন তৈমুর। 
 
হাতির নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্রেপ্তার তৎপরতা থাকলেও শামীম ওসমানের সঙ্গে আইভীর বিরোধ শেষ না হলে শামীম অনুসারীদের ভোট তাঁর বক্সেই পড়বে। পুলিশি তৎপরতায় তৈমুর কিছু অনুসারী না পেলেও সেই শূন্যতা শামীম ওসমানের অনুসারীরাই পূর্ণ করবে। 

তাঁর ওই কর্মী বলেন, হাতির লোককে কেন্দ্র থেকে দূরে রাখতে পারে একমাত্র শামীম ওসমানের অনুসারীরাই। পারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রাষ্ট্রীয়বাহিনী অতিরঞ্জিত অবস্থানে থাকলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আইভীর অনুসারীর পক্ষে তা সম্ভব নয়। 
 
আজ শনিবার নিজ বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তৈমুর বলেন, ‘মরে গেলেও মাঠ ছাড়ব না। নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। মাঠে থাকব, পালিয়ে যাইনি।’ সংবাদ সম্মেলনে লক্ষাধিক ভোটে জয়ী হওয়ার আশা প্রকাশ করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক এই উপদেষ্টা। 

প্রচারণার শেষ দিনে ভোটের মাঠে সরব ছিলেন আইভী ও তৈমুরভোটারদের ভাবনা
আজ শনিবার নগরীর কালী বাজার, চাষাঢ়া, টানবাজার, দেওভোগ ও মাসদাইর এলাকার ভোটারদের সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার। তাঁদের অনেকই সুষ্ঠু ও সহিংসমুক্ত ভোট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। আবার কেউ কেউ মনে করেছেন তিনি হয়তো নিজের ভোটটা দিতে পারবেন না। তবে তাঁদের ধারণা, সুষ্ঠু ভোট হলে এবার নৌকা-হাতির লড়াই হবে জমজমাট। কারণ আইভী দীর্ঘদিন সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেছেন। আবার তৈমুর আলম খন্দকারও মানুষের সঙ্গে ছিলেন। তাই কেউ কাউকে সহজে হারাতে পারবেন না। 

টানবাজার শীতলক্ষ্যার পাড়ের কয়েকজন ভোটার বলেন, নৌকার প্রার্থী আইভী টানা ১৮ বছর ধরে দায়িত্ব ছিলেন। এই সময় অবকাঠামো অনেক উন্নয়নই করেছেন। কিন্তু গত নির্বাচনের আগে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, শীতলক্ষ্যা ও কদম রসুল ব্রিজ করে সিটি করপোরেশনের দুই পাড়ের মানুষের মাঝে জোড়া লাগাবেন। কিন্তু সেটা তিনি পারেননি। এখনো নৌকায় করে বন্দর যেতে হয়। বৃষ্টির সময়ের ভোগান্তি শুধু ভুক্তভোগীর জানেন। এবার ভোটে তার প্রভাব পড়তে পারে। 
 
চাষাঢ়া মোড়ের চা দোকানে আড্ডারত আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গত নির্বাচনেও আমরা আইভীকে ভোট দিয়েছি। এবার নতুন প্রার্থীকে দিতে চাই। তবে আমার স্ত্রী বলতেছেন, আইভীকে ভোট দিতে। কালকে সকালেই চিন্তা করব কাকে ভোট দেব।’ 

তবে নারায়ণগঞ্জের বেশির ভাগ ভোটারই জানিয়েছেন, আইভীর বিজয়ে সব সময় নিয়ামক থাকেন নারী ভোটাররা। এবারও সেই ধারা আছে। আইভী নিজেও সেটা মনে করেন। শুক্রবার নিজ বাস ভবনে আইভী বলেছিলেন, ‘আমি প্রশাসনের কাছে বরাবরই বলে আসছি যে, ভোটের দিন যাতে উৎসবমুখর থাকে। আমার নারী ভোটাররা যেন আসতে পারে। আমার ইয়াং ভোটাররা যেন আসতে পারে। কারণ আমি জানি এই ভোটগুলো আমার। আমি নির্বাচনে জিতবই ইনশাল্লাহ।’ 

শনিবার যেভাবে পার করলেন আইভী-তৈমুর
শনিবার অনেকটা নীরবেই দেওভোগের নিজ বাসভবনেই কাটিয়েছেন নৌকার প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। সারা দিনে গণমাধ্যম কর্মীরা তাঁর সঙ্গে কথা বলতে একাধিকবার চেষ্টা করেও পারেননি। অনেককেই ফিরতে হয়েছে বাসার সামনে থেকে। রাত সাড়ে ৭টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আইভী বাসাতেই ছিলেন। রোববার সকালে আইভী বাড়ির পাশের শিশুবাগ স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেবেন বলে জানা গেছে। পরে তিনি বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন। 

এদিকে ভোটের আগের দিন বাসায় ছিলেন হাতির মার্কার প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার। বেলা ১২টার আগে তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি সুষ্ঠু ভোটের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা চালুর আবেদন করেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে কোনো ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ নয়; বরং প্রশাসনকেই ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমার গুরুত্বপূর্ণ নেতা কর্মীদের আটক করছে। আটককৃতদের ছেড়ে দেওয়ারও দাবি জানান তিনি। 

সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর প্রচারণায় অংশ নেন কেন্দ্রীয় নেতারাক্লাবে আ. লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠক
নাসিক নির্বাচনের দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় সমন্বয় করা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের কয়েকজন শনিবার সারা দিনই নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে ছিলেন। নেতাদের মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনসহ একাধিক নেতা দফায় দফায় স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। 

শনিবার বিকেলে আইভীর প্রচারণার দায়িত্বে থাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতা আজকের পত্রিকাকে বলেন, এইমাত্র ক্লাবে নানক ভাইদের সঙ্গে বৈঠক করে বাসায় আসালাম। ফ্রেশ হয়ে আইভীর বাসায় যাব। আওয়ামী লীগের নেতারা কি এখনো ক্লাবেই আছেন এমন প্রশ্নের জবাবে ওই নেতা বলেন, শুনেছি বের হয়ে যাবে। এখন আছে কিনা জানি না। 

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কাস্টিং ভোটের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে নৌকার প্রার্থী জয়ী হবে। তবে আজ (শনিবার) কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আমরা কোনো বৈঠক করিনি। তাঁরা কোথায় আছেন সেটাও আমি জানি না।’ 

শনিবার রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, নিরাপত্তাজনিত কারণে ভোটকেন্দ্রে বন্ধ থাকবে সিসি ক্যামেরাভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ ইসি ও প্রশাসনের
ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা চালু রাখার যে আবেদন স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার করেছেন তা নাকচ করে দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার। তিনি বলেন, কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা কাজ করবে না। কেন্দ্রে যদি সিসি ক্যামেরা কাজ করে, তাহলে তো কেন্দ্রের ভেতরে বুথের গোপনীয়তা রক্ষা হলো না। কাজেই কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বন্ধ থাকবে। সব কেন্দ্রে তো নেই। যেখানে আছে সেখানে বন্ধ থাকবে। 

প্রার্থীরা নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কা করলেও রিটার্নিং কর্মকর্তা তা মনে করছেন না। ভোটগ্রহণ নির্বিঘ্নে করার জন্য সব প্রস্তুতি ইসি নিয়েছেন বলেনও জানান মাহফুজা আক্তার। তিনি বলেন, ভোটাররা তাঁর পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে আসবেন। শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে আসবেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁরা ভোটকেন্দ্রে আসবেন, ভোট দেবেন। ভোট শেষে উৎসবমুখর পরিবেশে স্বাচ্ছন্দ্যে ফিরে যাবেন। 

সুষ্ঠু ভোটের স্বার্থে রোববার (ভোটগ্রহণের দিন) নারায়ণগঞ্জে বহিরাগতরা ‘অ্যালাউ’ না বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. জায়েদুল ইসলাম। পুলিশ লাইনে ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, ‘আমি বলতে চাই, কোনো বহিরাগতকে আমরা ভোটের দিন নারায়ণগঞ্জে প্রবেশ করতে দেব না। প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় আমাদের যে মোবাইল টিম থাকবে, আমাদের চেকপোস্ট থাকবে, জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে আমরা মানুষকে চলাচল করতে দেব। রোববার নারায়ণগঞ্জ মহানগর এলাকার যে বা যারা বের হবেন দয়া করে অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে বের হবেন, যাদের বয়স ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে।’ 

শনিবার জেলা পুলিশ সুপার মো. জায়েদুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করেনতিনি বলেন, ‘সবার প্রতি আহ্বান, কেউ যেন নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা না করে। কেউ যদি বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করে, তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে।’ পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘আমরা কঠোর অবস্থানে আছি, কঠোর অবস্থানেই থাকব। মা-বোনেরাসহ যাঁরা আছেন, আপনারা সবাই ভোটকেন্দ্রে আসবেন। কেউ বাধা দিলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।’ 

গণগ্রেপ্তার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জায়েদুল আলম বলেন, ‘নির্বাচনসংক্রান্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত