Ajker Patrika

রাষ্ট্রের প্রতিনিধি অপরাধ করলে বিচারের নিশ্চয়তা দেওয়া আবশ্যক: গোলটেবিলে বক্তারা

বিজ্ঞপ্তি
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০: ৪৫
ইউএনডিপির আয়োজনে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত গোলটেবিলে বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত
ইউএনডিপির আয়োজনে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত গোলটেবিলে বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) গঠনের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘন হলেও দায়ী ব্যক্তি বা সংস্থাকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার নজির নেই। রাষ্ট্রের প্রতিনিধি অপরাধ করলে কী করণীয় তা নির্ধারণ ও বিচারের নিশ্চয়তা দেওয়া আবশ্যক। মানবাধিকার লঙ্ঘনের সীমা শূন্যতে নামিয়ে আনা জরুরি বলে মতামত দিয়েছেন ‘স্বাধীন ও নির্ভরযোগ্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন: সংস্কার ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের বক্তারা।

গত বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় গোলটেবিল বৈঠক। ইউএনডিপির আয়োজনে সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশনের (এসডিসি) সহায়তায়, ইউএনডিপির স্ট্রেংদেনিং ইনস্টিটিউশনস পলিসিজ অ্যান্ড সার্ভিসেস (এসআইপিএস) প্রকল্পের আওতায় এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সাম্প্রতিক পটপরিবর্তনের ফলে জাতীয় অংশীজনদের একত্রিত হয়ে এনএইচআরসিকে শক্তিশালী করার জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা ও আলোচনা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি জনগণের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার প্রত্যাশাকে আমলে নিয়ে এনএইচআরসিকে সংস্কারের দাবিও জোরদার হচ্ছে। কাজেই, দেশে আইনের শাসন সমুন্নত রাখা, জনগণের অধিকার রক্ষা এবং জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন, নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অপরিহার্য বলে মনে বক্তারা অভিমত দেন।

অনুষ্ঠানে প্রারম্ভিক বক্তব্য উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। এ ছাড়া বক্তব্য দেন কামাল উদ্দিন আহমেদ, প্রাক্তন চেয়ারম্যান, এনএইচআরসি; মালেকা বানু, বাংলাদেশ মাহিলা পরিষদ; শিরিন হক, প্রধান, উইমেন্স অ্যাফেয়ার্স কমিশন; সাবিনা ইয়াসমিন লুবনা, সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার, সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোঅপারেশন (এসডিসি) ; আনোয়ারুল হক, সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি, ইউএনডিপি বাংলাদেশ এবং বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা। একটি স্বাধীন ও জনমুখী মানবাধিকার কমিশনের প্রয়োজনীয়তার ওপর বক্তারা জোর দেন।

সংলাপে আইন ও মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যম প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, মানবাধিকারকর্মী, নীতিনির্ধারক, সরকারি কর্মকর্তা, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজন চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন এবং মানবাধিকার কমিশনের সংস্কারের জন্য সুপারিশ ও প্রস্তাবনা প্রদান করেন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯; আইনি ও নীতিগত সংস্কার, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগে আইনি সীমাবদ্ধতা দূর করা, কমিশনে নারী সদস্যদের সংখ্যা বৃদ্ধি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানবাধিকার সুরক্ষায় টাস্কফোর্স গঠন, তদন্তক্ষমতা, প্রবাসী শ্রমিকদের মানবাধিকার সুরক্ষা, পরিচালনাগত চ্যালেঞ্জ, তহবিল স্বাধীনতা, সম্পদ বরাদ্দ, কমিশনের কার্যকারিতা ও স্বাধীনতা সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিরীক্ষা, জনসাধারণের কাছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ভাবমূর্তি ও জবাবদিহি জোরদারে নাগরিক সমাজ সংস্থা এবং গণমাধ্যমের ভূমিকা প্রভৃতিসহ গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

বক্তারা, নাগরিক সংগঠনের সঙ্গে সংযোগ, স্বচ্ছতা ও স্বাধীনতা, নারী মানবাধিকার রক্ষা, উন্নয়নের জন্য যে বাস্তুচ্যুতি সমস্যা তৈরি হচ্ছে তা নিরসন, প্রান্তিক সম্প্রদায়কে যুক্তকরণ, কমিশনের বিকেন্দ্রীকরণ প্রভৃতি নিয়েও আলোচনা করেন। বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে মানবাধিকার কমিশনে নিয়োগ দিতেও গুরুত্বারোপ করা হয়। এ ছাড়া, এনএইচআরসির বিশ্বাসযোগ্যতা ও জনগণের কাছে প্রতিষ্ঠানটির আস্থা বৃদ্ধিতে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ ও প্রস্তাব প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত