‘রিকশা চালিয়ে সারা দিনের সব আয় পুলিশকে দিয়ে যেতে হয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৩, ১৯: ৪১

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান হাউজিং এলাকার বাসিন্দা মো. শাহ আলম (৬০)। আগে পায়ে চালিত রিকশা চালাতেন, বয়স বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো পরিশ্রম করতে পারেন না। কয়েক বছর ধরে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালান।

ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ শাহ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগে পায়ের রিকশা চালিয়ে সামান্য আয় করতাম। এখন অটোরিকশা হওয়ায় ভালো আয়ও হয়। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ ধরলে বাসায় কিছু নিতে পারি না। অটোরিকশা নিয়ে প্রধান সড়কে আসি না কিন্তু তারা মোটরসাইকেল নিয়ে গিয়ে ধরে নিয়ে আসে। ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করলে উল্টো মারধর করে।’ 

শামীম নামের আরেক চালক বলেন, ‘ভেতর থেকে ধরে এনে গাড়ি ডাম্পিং করে রাখে। সারা দিনে ৫ থেকে ৬ শ টাকা আয় করতে পারি না। কিন্তু ধরলে ২ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা দিতে হয়। ট্রাফিক পুলিশের অত্যাচারের কারণে অনেকেই গাড়ি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ দিনে যা আয় হয় তা পুলিশকে দিতে হয়। অনেক সময়ে সুদে টাকা এনেও তাদের দিতে হয়।’ 

আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার বছিলা ৪০ ফিট এলাকায় রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের আয়োজনে ব্যাটারি চালিত যানবাহনের শ্রমিকদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে ‘গণ মিছিল ও শ্রমিক সমাবেশে’ অংশ নিয়ে চালকেরা এমন অভিযোগ ধরেন। সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কবির হোসেন। 

এ সময় বক্তারা পুলিশ-প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করে বলেন, চালকদের অহেতুক হয়রানি বন্ধ করতে হবে। কার্ডের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। আমাদের এই দাবি যৌক্তিক। রিকশা শ্রমিকদের অহেতুক হয়রানি বন্ধ করতে হবে। 

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী বলেন, ‘ঢাকা শহরে উন্নয়নের নামে গরিব মানুষদের ঠেলতে ঠেলতে ঢাকার বাইরে পাঠানো হচ্ছে। ঢাকার মানুষ সবচেয়ে বেশি রিকশা ব্যবহার করে যাতায়াত করেন। বিশেষ করে হাউজিং ও ছোট ছোট সড়কগুলোতে। ট্রাফিক পুলিশ এই সকল সড়কে অটোরিকশা চালকদের অহেতুক হয়রানি বন্ধ না হলে আমরা ভবিষ্যতে আরও বড় কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’ 

সমাবেশ থেকে অটোরিকশা ধরা বন্ধে জেলা প্রশাসক ও ট্রাফিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বরাবর স্মারক লিপি দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। 

রিকশা শ্রমিকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে গেলে নানা বিষয় চলে আসে। রিকশা চালকদের আন্দোলনের বিষয়টি জেনেছি। আমরা স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিনিধি ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নেব। আইনের মধ্যে থেকে সরকারের যানবাহনের নির্দেশনা মেনে আমরা একটা সমাধান করব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

মেট্রোরেল থেকে আমলাদের বিদায়, অগ্রাধিকার প্রকৌশলীদের

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

বিমানবন্দরে সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হয়রানির তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ৩৫ কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত