বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল উদ্ধারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭: ০২
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭: ১৩

রাজধানীর লালবাগের শহীদনগর এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর আদি চ্যানেল উদ্ধারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যৌথভাবে অভিযান চালিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও জেলা প্রশাসন। তবে অলিখিত নোটিশে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার কারণে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 

আজ রোববার সকালে বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ওবায়দুল্লাহর নেতৃত্বে এ অভিযান শুরু হয়। আদি চ্যানেলের ওপর অবৈধভাবে গড়ে তোলা বাস্তুহারা লীগের লালবাগের প্রধান কার্যালয়সহ বেশ কিছু কাঁচা-পাকা স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।

বিআইডব্লিউটিএর ঢাকা বন্দরের উপপরিচালক গুলজার আলী বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ছয় দিনব্যাপী এই উচ্ছেদ অভিযানে ঢাকা জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ যৌথভাবে পরিচালনা করবে। বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলটি উদ্ধারে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।’ 

এদিকে উচ্ছেদ অভিযানের বিরোধিতা করে উচ্ছেদ চলাকালীন মানববন্ধন করেছেন শহীদনগরে উচ্ছেদের শিকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, কোনো ধরনের লিখিত নোটিশ ছাড়াই নিজেদের বৈধ ভিটা থেকে তাঁদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। তিন দিনের মৌখিক নোটিশে বাড়ি ছাড়া খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে। 

উচ্ছেদের শিকার শহীদনগরের বাসিন্দা মো. সাগীর আহম্মেদ সুজন বলেন, ‘দীর্ঘ ৫০-৬০ বছর যাবৎ আমরা এখানে ইমারত ও সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করে পাঁচ-সাত হাজার লোক সুখে-শান্তিতে বসবাস করছি। কিন্তু হঠাৎ গত ২৩ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে ঢাকা জেলা প্রশাসকের পক্ষে বিআইডব্লিউটিএ উচ্ছেদ অভিযানের কথা জানিয়ে মাইকিং করে। সেখান থেকে আমরা জানতে পারি আজ সকালে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। কারণ, আমাদের পক্ষে জজকোর্ট, হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের ব্যক্তিমালিকানা সম্পত্তি হিসেবে আদেশ আছে।’ 

আরেক বাসিন্দা মোহাম্মদ শাজাহান বলেন, ‘আমাদের এভাবে হঠাৎ করে চলে যেতে বলার কোনো মানে নেই। আমরা হাইকোর্টের আদেশক্রমে এখানে বসবাস করছি। আমাদের কিছু সময় দেওয়া হোক। যদি আমাদের কাগজপত্র অবৈধ হয়, তাহলে অবশ্যই আমরা এখান থেকে চলে যাব। অথচ এই সময়টুকু না দিয়েই আমাদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আমাদের কাছে জমির সব কাগজপত্র আছে।’ 

উচ্ছেদ অভিযানে আল হলি কুরআন নামে একটি মাদ্রাসার স্থাপনাও ভেঙে দেওয়া হয়। মাদ্রাসাসংশ্লিষ্ট মো. আজাদি বলেন, ‘এখানে মাদ্রাসা ও স্কুলসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ছিল। এগুলো তো তিন দিনের মধ্যে গুছিয়ে অন্য জায়গায় নেওয়া সম্ভব নয়। আমাদের জমির কাগজপত্র সব আছে। গত বৃহস্পতিবার মাইকিং করেছে রোববার ভাঙা হবে। মাঝখানে শুক্র ও শনিবার ছুটি থাকায় আমরা আদালতে যেতে পারি নাই। এমনভাবে আমাদের উচ্ছেদ করছে, যাতে আমরা আইনি সহায়তাও নিতে না পারি। এটা ঠিক না।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত