‘শয়তানের ফেরে’ পড়ে ভুয়া ট্রাফিক সার্জেন্ট সেজেছিলেন

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ মে ২০২২, ১৮: ২৪

সার্জেন্ট সেজে মোটরসাইকেল চালকদের কাগজপত্র দেখার নামে টাকা আদায়ের সময় এক যুবককে হাতেনাতে আটক করেছেন স্থানীয় জনতা। এরপর তাঁকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন তাঁরা। আজ রোববার সকালে যশোরের মনিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়কের হাজিরহাট স্লুইসগেট থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত যুবকের নাম মনিরুজ্জামান মনির। তিনি খুলনার খানজাহান আলী থানার গিলেতলার আধরা ডাক্তারবাড়ি এলাকার কুয়েত প্রবাসী মিজানুর রহমানের ছেলে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত যুবকের বিরুদ্ধে মনিরামপুর থানায় মামলা হয়েছে। পরে বিকেলে তাঁকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।

মনিরুজ্জামানের দাবি, ৫-৬ বছর আগে তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছেন। সকালে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে এসে শয়তানের ফেরে পড়ে তিনি রাস্তায় মোটরসাইকেল চালকদের দাঁড় করিয়ে কাগজপত্র দেখছিলেন। এ সময় জনগণ ধরে তাঁকে মারপিট করে এবং তাঁর টাকা কেড়ে নিয়েছেন বলে দাবি করেন।

এ ঘটনায় নিয়ে কথা হয় আরজান হোসেন নামের এক ভুক্তভোগীর সঙ্গে। তিনি হাজিরহাটের আঠারোপাকিয়া গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী। আরজান বলেন, ‘পাঁচকাটিয়া এলাকায় আমার শ্রমিকেরা গাছ কাটার কাজ করছিলেন। সকালে বাড়ি থেকে আমি মোটরসাইকেল চালিয়ে সেখানে যাচ্ছিলাম। পথে স্লুইসগেটের সামনে পৌঁছালে সংকেত দিয়ে আমাকে দাঁড় করান মনিরুজ্জামান। আমি দাঁড়াতেই গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চান। এরপর আমাকে ৫০০ টাকা জরিমানা করেন। আমার পকেটে ১০ হাজার টাকা ছিল। একপর্যায়ে টাকা দেখতে পেয়ে সেগুলো ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন মনিরুজ্জামান। এ সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আশপাশের লোকজন চলে এসে মনিরুজ্জামানকে চ্যালেঞ্জ করেন।’

আরজান বলেন, ওই লোকটি একা ছিলেন। তিনি যশোর ট্রাফিকের সার্জেন্ট পরিচয় দিয়েছেন। এ সময় লোকজনকে তিনটি পদকও দেখান তিনি। এ সময় সন্দেহ হলে লোকজন তাঁকে ধরে ফেলেন। 

জসিম সরদার নামে এক পথচারী বলেন, আজ সকাল ৯টার দিকে পাঁচকাটিয়া থেকে গরু কিনে বাড়ি ফিরছিলাম। পথে এ লোকটি আমাকে সংকেত দিয়েছেন। মোটরসাইকেলে আরো দুজন ছিলেন। আমাকে দাঁড়া করিয়ে কাগজপত্র দেখতে চেয়েছেন। পরে জরিমানার ভয় দেখিয়ে ৫০০ টাকা নেন। অনেক মোটরসাইকেল ধরে কাগজপত্র দেখতে চেয়ে চালকদের কাছ থেকে ২০০-৫০০ টাকা করে নিয়েছেন এই লোক। 

এ বিষয়ে মনিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হান্নান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই যুবককেসহ তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ করে থানায় এনেছি। 

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর-ই-আলম সিদ্দীকি বলেন, ওই যুবক সার্জেন্ট সেজে মোটরসাইকেল চালকদের আটকিয়ে টাকা নিচ্ছিলেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ভুয়া পরিচয় দেওয়ার অপরাধে মামলা দিয়ে তাঁকে আদালতে সোপর্দ করেছি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত