কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় সবজি চাষে ঝুঁকছেন গাংনীর চাষিরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৩: ৫০
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৪: ৩৮

ধান, পাট বা অন্যান্য ফসলে যে পরিমাণ খরচ তাতে ফসল ওঠার পর মূলধন আর ফিরে আসছে না বললেই চলে। ফসল উৎপাদন খরচ বাড়লেও বিক্রি করতে গিয়ে চাষিরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। এই কারণেই উপজেলার অনেক চাষি বেছে নিয়েছেন সবজি চাষ। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় ব্যাপক হারে বেড়েছে সবজি চাষ। 

উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় চাষিরা ঝুঁকছেন সবজি আবাদে। পতিত জমি, পুকুরের পাড়, আবাদি জমিতে সব জায়গায় হচ্ছে সবজির চাষ। তবে ফসলি জমিতে সবজি চাষ হচ্ছে বেশি। আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে সবজির আবাদ। আর এই সবজি চাষ করেই সবচেয়ে বেশি স্বাবলম্বী হচ্ছেন চাষিরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে না পড়লে বিঘাপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘরে আসে। আর বিঘাপ্রতি খরচ হয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। 

উপজেলায় একাধিক সবজিচাষির সঙ্গে কথা হলে তাঁরা জানান, অন্যান্য যে ফসল আবাদ করা হয় তাতে লোকসান গুনতে হচ্ছে। চলতি বছর পাটে লোকসান গুনতে হয়েছে। কারেন্ট পোকার আক্রমণে কমেছে আমনের ফলন। সে ক্ষেত্রে সবজি চাষ করে বেশি লাভবান হওয়া যায়। আর সবজি চাষের মধ্যে সাথি ফসল হিসেবে অন্য ফসলও আবাদ করা যায়। 

বামন্দী মাঠের সবজিচাষি মো. ময়নাল হোসেন বলেন, ‘অন্য ফসল করতে গিয়ে লোকসানে পড়েছি। তাই সবজি আবাদের দিকে ঝুঁকেছি। এবার লাউয়ের আবাদ করেছি, অনেক লাউ ধরেছে। লাউয়ে কিছু পোকা আক্রমণ করে এটা ঠেকাতে পারলে ভালো লাভ হবে। বিঘাপ্রতি খরচ হয় ১৫-২০ হাজার টাকা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে না পড়লে আশা করছি লাভ হবে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। বর্তমানে অনেক চাষি সবজির দিকে ঝুঁকছেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমার দেখাদেখি অনেকেই সবজি আবাদে আসার কথা ভাবছেন। আমি লাউয়ের মধ্যে লালশাকসহ কয়েকটি সবজি আবাদ করছি।’ 

সবজিচাষি মোহাম্মদ মিরাজ আলী বলেন, ‘অন্য ফসলে লোকসান হওয়ায় এবার কপি চাষ করেছি। কপি অনেক ভালো হয়েছে। এখন একটু দাম কম। খরচ বাদে আশা করছি ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা লাভ হবে। আর দাম ভালো থাকলে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা লাভ হতো। তা ছাড়া অন্য ফসলের চেয়ে সবজি আবাদ লাভজনক।’ 

গাংনী কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। এখনো অনেক চাষি নতুন করে সবজি চাষ করছেন। সবজি চাষ দিন দিন বাড়ছে এ উপজেলায়। 

গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘আর্থিকভাবে বেশি লাভবান হওয়ায় দিন দিন চাষিরা সবজি চাষের দিকে ঝুঁকছেন। আশা করি চাষিরা তাঁদের সবজির ন্যায্য মূল্য পাবেন।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত