বিএসএফের গুলিতে বিজিবি সদস্য নিহত, বেনাপোল সীমান্তে উত্তেজনা

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০০: ৫৪
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭: ৩৯

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশের (বিজিবি) এক সিপাহীর মৃত্যুর ঘটনায় যশোরের বেনাপোল সীমান্তে উত্তেজনা চলছে। আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন সীমান্তবাসী। বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন। 

এদিকে একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিএসএফের গুলিতে রইশুদ্দীন নামে এক বিজিবি সদস্য নিহত হয়েছেন। তিনি ৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবির বেনাপোল সীমান্তের ধান্যখোলা জেলেপাড়া বিজিবি ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ।

বিজিবির পক্ষ থেকে প্রথমে এমন কোনো তথ্য নিশ্চিত করা না হলেও পরে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিএসএফের গুলিতে ওই সিপাহীর মৃত্যুর কথা জানানো হয়।

যশোর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জামিল স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার আনুমানিক ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বিজিবি যশোর ব্যাটালিয়নের ধান্যখোলা বিওপির জেলেপাড়া পোস্ট সংলগ্ন এলাকায় ভারত থেকে আসা একদল গরু চোরাকারবারির সীমান্ত অতিক্রম করে আসতে দেখলে দায়িত্বরত বিজিবি টহল দল তাদের চ্যালেঞ্জ করে। তারা দৌড়ে ভারতের দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বিজিবি টহল দলের সদস্য সিপাহী মোহাম্মদ রইশুদ্দীন চোরাকারবারিদের ধাওয়া করতে করতে ঘন কুয়াশার কারণে দল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।

এতে আরও বলা হয়, প্রাথমিকভাবে রইশুদ্দীনকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায়, তিনি বিএসএফের গুলিতে আহত হয়ে ভারতের অভ্যন্তরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার পরপরই এ বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করা হয় এবং জানা যায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই সৈনিক মারা গেছেন। এ বিষয়ে বিএসএফকে বিষয়টির ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানানোর পাশাপাশি কূটনৈতিকভাবে তীব্র প্রতিবাদলিপি পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া মৃতদেহ বাংলাদেশে দ্রুত ফেরত আনার বিষয়ে সব পর্যায়ে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।

সীমান্তের সূত্রগুলো বলছে, সোমবার (২২ জানুয়ারি) ভোর ৪টার দিকে ভারতের সুটিয়া সীমান্ত পথে গরু নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা চালায় পাচারকারীরা। এ সময় বিজিবি সদস্য রইশুদ্দীন গতিরোধ করার চেষ্টা করলে চোরাকারবারিরা গরু ফেলে ভারতের দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন সুটিয়া ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা ৭ রাউন্ড গুলি চালালে দুই চোরাকারবারি ভারতীয় অংশে আহত হয়। এরপর বাংলাদেশ অংশে ঢুকে পড়া গরুগুলো বিজিবি সদস্যরা উদ্ধার করতে গেলে বিএসএফ রইশুদ্দীন নামে এক বিজিবি সদস্যকে ধরে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে তাঁকে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয় বলে দাবি করেছে একাধিক সূত্র। 

ঘিবা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল বারি জানান, তিনি ভোরের দিকে পরপর ৭ রাউন্ড গুলির শব্দ পান। সকালে শোনেন এক বিজিবি সদস্যকে বিএসএফ ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে। সীমান্তবাসী করিম জানান, প্রায়ই এ সীমান্তে বিএসএফের নির্যাতনে বাংলাদেশি হত্যা ও ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে তাঁরা আতঙ্কের মধ্যে আছেন। 

আমির হোসেন নামে একজন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএসএফের হাতে বিজিবি সদস্য হত্যার ঘটনা শুনেছি। এ ঘটনা সত্য হয়ে থাকলে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’ 

সীমান্তে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন সীমান্তবাসীরা। বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার ২০ ঘণ্টা পর বিজিবি কর্মকর্তারা এ নিয়ে মুখ খোলেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

ভারতের পাল্টা আক্রমণে দিশেহারা অস্ট্রেলিয়া

ঢাকা কলেজে সংঘর্ষকালে বোমা বিস্ফোরণে ছিটকে পড়েন সেনাসদস্য—ভাইরাল ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনা

ঐশ্বরিয়ার বিচ্ছেদের খবরে মুখ খুললেন অমিতাভ

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত