নেত্রকোনা প্রতিনিধি
পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেদের মুদির দোকান দেখাশোনা করত মো. আহাদুন (১৮)। কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জু্লাই রাত ৮টার দিকে রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এলাকার বৈঠাখালীতে বাসার বাইরে গিয়ে নিখোঁজ হয় সে। তারপর তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। রাতভর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ও থানায় খোঁজাখুঁজি করে কোথাও খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরদিন সারাদেশে কারফিউ থাকায় আর খোঁজা সম্ভব হয়নি।
এর মধ্যে ঢামেকে অজ্ঞাত লাশ রয়েছে টিভিতে এমন খবর দেখে শনিবার ঢামেকে গিয়ে আহাদুনের লাশ সনাক্ত করেন তাঁর বাবা মজিবুর রহমান। দেখা যায়, একটি গুলি আহাদুনের কানের এক পাশে ঢুকে অপর কানের পাশ দিয়ে বের হয়ে গেছে। আরেকটি গুলি লাগে পায়ে। তারপর ময়নাতদন্তসহ নানা আইনি প্রক্রিয়া শেষে রোববার সন্ধ্যায় লাশ ঢামেক থেকে বের করে আনা হয়। রাতেই আহাদুনের লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তার বাবা।
রাত ৩টার দিকে আহাদুনের লাশ পৌঁছে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে। পরে সোমবার সকাল ১০টায় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আহাদুন নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে। মজিবুর রহমান স্ত্রী ও চার ছেলেসহ রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এলাকার বৈঠাখালীতে প্রায় এক যুগ ধরে বসবাস করেন। সেখানে ডিজেল ইঞ্জিন মেরামতের কাজ করেন মজিবুর। মজিবুরের চার ছেলের মধ্যে আহাদুন তৃতীয়।
আহাদুন রাজধানীর পূর্ব বাড্ডার ইউসেপ হাজী সিকান্দার আলী টেকনিক্যাল স্কুল থেকে ‘জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্ক’ সাবজেক্টে এবার টেস্ট পরীক্ষা দিয়েছে। আগামী বছরের জানুয়ারিতে তাঁর এসএসসি ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।
মৃত্যুর খবর পেয়ে আজ রোববার (২৮ জুলাই) নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে যান এই প্রতিবেদকভ এ সময় নিহত আহাদুনের বাবা মজিবুর রহমান বলেন, ‘পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাতে এক যুগ আগে স্ত্রী ও চার ছেলেসহ নিজের এলাকা ছেড়ে রাজধানীর মেরুল বাড্ডার বৈঠাখালী এলাকায় গিয়ে বসবাস শুরু করি। আমি নিজে ডিজেল ইঞ্জিনের মেরামতের কাজ করি। সেই সঙ্গে বাসার পাশেই একটি মুদির দোকান দিয়েছি। আহাদুন স্কুল থেকে এসে দোকানে বসতো। তার অন্য ভাইয়েরাও পালা করে দোকানটা চালাতো। সময় পেলে মাঝেমধ্যে আমিও বসতাম দোকানে।’
‘আন্দোলন চলাকালে গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে বাসায় সবার সঙ্গে আম খেয়েছে। পরে কোনো এক সময় বাসা থেকে বের হয়ে গেছে। সেটা আমারা বলতে পারি না। রাত ১০টার দিকে তাঁকে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। দুই আড়াই ঘণ্টা আশপাশের সব জায়গায় খোঁজ করেও তাঁকে পাইনি। পরে রাতেই ঢামেক হাসপাতালে যাই কিন্তু কোন খোঁজ পাইনি। পরে থানায় গিয়েও কোন কোঁজ পাইনি। কোন সন্ধান না পেয়ে রাত ১টার দিকে বাসায় ফিরি। পরদিন আবার খুঁজব ভাবি। কিন্তু শুক্রবার সারাদেশে কারফিউ থাকায় আর পরিস্থিতি খারাপ থাকায় কোথাও বের হতে পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবার রাতে টিভিতে খবর দেখি ঢামেকে দুটি অজ্ঞাত লাশ রয়েছে। খবর দেখে শনিবার সকালে ঢামেকে খোঁজ করতে যাই। অনেক চেষ্টার পর বিকেলে ইমাজেন্সি স্টোর রুমে গিয়ে ২০-২৫টি অজ্ঞাত লাশ দেখতে পাই। সেখানে আহাদুনের লাশও ছিল। তার এক কান দিয়ে গুলি ঢুকে অপর কানে দিয়ে বের হয়ে গেছে। আরেকটি গুলি লেগেছে পায়ে। লাশের রুমে কোনো বাতাস বা ঠান্ডার ব্যবস্থা ছিল না। ফলে লাশ নরম হয়ে যাচ্ছিল। শনিবার আর লাশ বের করতে পারিনি। রোববার সকালে গিয়ে ময়নাতদন্তসহ নানা প্রক্রিয়া শেষ করে সন্ধ্যার দিকে লাশ বের করি। পরে পিকআপ ভাড়া করে লাশ নিয়ে রওনা হই গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার উদ্দেশে। রাত ৩টার দিকে পৌঁছি নেত্রকানার কলমাকান্দা উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে। খবর শুনে এলাকার শত শত মানুষ ছেলেকে দেখতে ভিড় জমায়। সোমবার সকাল ১০টায় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে ছেলেকে দাফন করি।’
মজিবুর রহমান আরও বলেন, ‘বিচার কার কাছে চাইব, মামলাই বা কার বিরুদ্ধে করব? যত যাই করি না কেন, আমার ছেলে তো আর ফিরে আসবে না। আমার মতো এমন সন্তানহারা যেন আর কেউ না হয়— এই দোয়া করি।’
নিহত আহাদুনের চাচা আবুল হোসেন ও রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আহাদুন একটা শান্ত, ভদ্র ও অমায়িক ছেলে ছিল। দেশে এমন অবস্থা শুরু হয়েছে যে, ভাতিজার লাশটা খুঁজতে খুঁজতে হয়রান হতে হলো। লাশটা পর্যন্ত হিমঘরে রাখা হয়নি, রাখা হয়েছিল একটা সাধারণ রুমে। ফলে লাশ গলে নরম হয়ে গিয়েছিল। লাশ পোস্টমর্টেমে সিরিয়াল দিতে হয়েছে, গোসল করাতে সিরিয়াল দিতে হয়েছে। সব মিলিয়ে লাশটা বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে আসতে দেড়লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। এতটুকু একটা ছেলে, কার কি ক্ষতি করেছিল যে, তাঁকে দুটি গুলি করতে হয়েছে? আমরা শুধু আমাদের ভাতিজার জন্য দেয়া চাই। আর কিছু চাই না। বিচার চাইলেই বা কার কাছে চাইব? আর কারো সাথে এমন ঘটনা না ঘটুক।’
পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেদের মুদির দোকান দেখাশোনা করত মো. আহাদুন (১৮)। কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জু্লাই রাত ৮টার দিকে রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এলাকার বৈঠাখালীতে বাসার বাইরে গিয়ে নিখোঁজ হয় সে। তারপর তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। রাতভর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ও থানায় খোঁজাখুঁজি করে কোথাও খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরদিন সারাদেশে কারফিউ থাকায় আর খোঁজা সম্ভব হয়নি।
এর মধ্যে ঢামেকে অজ্ঞাত লাশ রয়েছে টিভিতে এমন খবর দেখে শনিবার ঢামেকে গিয়ে আহাদুনের লাশ সনাক্ত করেন তাঁর বাবা মজিবুর রহমান। দেখা যায়, একটি গুলি আহাদুনের কানের এক পাশে ঢুকে অপর কানের পাশ দিয়ে বের হয়ে গেছে। আরেকটি গুলি লাগে পায়ে। তারপর ময়নাতদন্তসহ নানা আইনি প্রক্রিয়া শেষে রোববার সন্ধ্যায় লাশ ঢামেক থেকে বের করে আনা হয়। রাতেই আহাদুনের লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তার বাবা।
রাত ৩টার দিকে আহাদুনের লাশ পৌঁছে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে। পরে সোমবার সকাল ১০টায় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আহাদুন নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে। মজিবুর রহমান স্ত্রী ও চার ছেলেসহ রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এলাকার বৈঠাখালীতে প্রায় এক যুগ ধরে বসবাস করেন। সেখানে ডিজেল ইঞ্জিন মেরামতের কাজ করেন মজিবুর। মজিবুরের চার ছেলের মধ্যে আহাদুন তৃতীয়।
আহাদুন রাজধানীর পূর্ব বাড্ডার ইউসেপ হাজী সিকান্দার আলী টেকনিক্যাল স্কুল থেকে ‘জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্ক’ সাবজেক্টে এবার টেস্ট পরীক্ষা দিয়েছে। আগামী বছরের জানুয়ারিতে তাঁর এসএসসি ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।
মৃত্যুর খবর পেয়ে আজ রোববার (২৮ জুলাই) নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে যান এই প্রতিবেদকভ এ সময় নিহত আহাদুনের বাবা মজিবুর রহমান বলেন, ‘পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাতে এক যুগ আগে স্ত্রী ও চার ছেলেসহ নিজের এলাকা ছেড়ে রাজধানীর মেরুল বাড্ডার বৈঠাখালী এলাকায় গিয়ে বসবাস শুরু করি। আমি নিজে ডিজেল ইঞ্জিনের মেরামতের কাজ করি। সেই সঙ্গে বাসার পাশেই একটি মুদির দোকান দিয়েছি। আহাদুন স্কুল থেকে এসে দোকানে বসতো। তার অন্য ভাইয়েরাও পালা করে দোকানটা চালাতো। সময় পেলে মাঝেমধ্যে আমিও বসতাম দোকানে।’
‘আন্দোলন চলাকালে গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে বাসায় সবার সঙ্গে আম খেয়েছে। পরে কোনো এক সময় বাসা থেকে বের হয়ে গেছে। সেটা আমারা বলতে পারি না। রাত ১০টার দিকে তাঁকে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। দুই আড়াই ঘণ্টা আশপাশের সব জায়গায় খোঁজ করেও তাঁকে পাইনি। পরে রাতেই ঢামেক হাসপাতালে যাই কিন্তু কোন খোঁজ পাইনি। পরে থানায় গিয়েও কোন কোঁজ পাইনি। কোন সন্ধান না পেয়ে রাত ১টার দিকে বাসায় ফিরি। পরদিন আবার খুঁজব ভাবি। কিন্তু শুক্রবার সারাদেশে কারফিউ থাকায় আর পরিস্থিতি খারাপ থাকায় কোথাও বের হতে পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবার রাতে টিভিতে খবর দেখি ঢামেকে দুটি অজ্ঞাত লাশ রয়েছে। খবর দেখে শনিবার সকালে ঢামেকে খোঁজ করতে যাই। অনেক চেষ্টার পর বিকেলে ইমাজেন্সি স্টোর রুমে গিয়ে ২০-২৫টি অজ্ঞাত লাশ দেখতে পাই। সেখানে আহাদুনের লাশও ছিল। তার এক কান দিয়ে গুলি ঢুকে অপর কানে দিয়ে বের হয়ে গেছে। আরেকটি গুলি লেগেছে পায়ে। লাশের রুমে কোনো বাতাস বা ঠান্ডার ব্যবস্থা ছিল না। ফলে লাশ নরম হয়ে যাচ্ছিল। শনিবার আর লাশ বের করতে পারিনি। রোববার সকালে গিয়ে ময়নাতদন্তসহ নানা প্রক্রিয়া শেষ করে সন্ধ্যার দিকে লাশ বের করি। পরে পিকআপ ভাড়া করে লাশ নিয়ে রওনা হই গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার উদ্দেশে। রাত ৩টার দিকে পৌঁছি নেত্রকানার কলমাকান্দা উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে। খবর শুনে এলাকার শত শত মানুষ ছেলেকে দেখতে ভিড় জমায়। সোমবার সকাল ১০টায় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে ছেলেকে দাফন করি।’
মজিবুর রহমান আরও বলেন, ‘বিচার কার কাছে চাইব, মামলাই বা কার বিরুদ্ধে করব? যত যাই করি না কেন, আমার ছেলে তো আর ফিরে আসবে না। আমার মতো এমন সন্তানহারা যেন আর কেউ না হয়— এই দোয়া করি।’
নিহত আহাদুনের চাচা আবুল হোসেন ও রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আহাদুন একটা শান্ত, ভদ্র ও অমায়িক ছেলে ছিল। দেশে এমন অবস্থা শুরু হয়েছে যে, ভাতিজার লাশটা খুঁজতে খুঁজতে হয়রান হতে হলো। লাশটা পর্যন্ত হিমঘরে রাখা হয়নি, রাখা হয়েছিল একটা সাধারণ রুমে। ফলে লাশ গলে নরম হয়ে গিয়েছিল। লাশ পোস্টমর্টেমে সিরিয়াল দিতে হয়েছে, গোসল করাতে সিরিয়াল দিতে হয়েছে। সব মিলিয়ে লাশটা বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে আসতে দেড়লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। এতটুকু একটা ছেলে, কার কি ক্ষতি করেছিল যে, তাঁকে দুটি গুলি করতে হয়েছে? আমরা শুধু আমাদের ভাতিজার জন্য দেয়া চাই। আর কিছু চাই না। বিচার চাইলেই বা কার কাছে চাইব? আর কারো সাথে এমন ঘটনা না ঘটুক।’
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘৫ আগস্টের চার দিন আগে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারপর চার দিনও টিকতে পারেনি আওয়ামী লীগ। জনরোষে পড়ে দেশ ছেড়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হয়েছেন শেখ হাসিনা ও তাঁর আত্মীয়স্বজন। তাঁর বিচার জনগণই করবে। তারা নির্বাচনে আসতে পারবে কি না, সেটি জনগণের ওপর নির্ভর করবে...
২৮ মিনিট আগেবগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় ভাড়াটিয়া মাবিয়া চার লাখ টাকার চুক্তিতে গৃহবধূ সালমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তবে মাবিয়া চুক্তি করা অটোভ্যানচালক সুমন রবিদাসকে টাকা দেননি।
১ ঘণ্টা আগেপাঁচটি গ্রাম ঘেঁষে সরকারি জলাশয় ডাহার বিল। যুগ যুগ ধরে এ বিলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন জেলেরা। এ ছাড়া দেশীয় মাছ ধরে আমিষের চাহিদা মেটাত এসব গ্রামের মানুষ। তবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার পৌর এলাকার শালঘরিয়াসহ পাঁচ গ্রামের ৬২ বিঘা খাস জলাশয় ডাহার...
১ ঘণ্টা আগেবিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি একটা জোরের জায়গা। আমরা আগামী সপ্তাহে ৩০ থেকে ৪০টি প্রকল্পের জন্য টেন্ডার আহ্বান করবো। আমাদের বিদ্যুতের যে সমস্যা এটি বিদ্যুতের সমস্যা না...
১ ঘণ্টা আগে