Ajker Patrika

ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর আসনে ভোটগ্রহণের দায়িত্বে আওয়ামী লীগের অর্ধশত নেতা–কর্মী

এম. কে. দোলন বিশ্বাস, ইসলামপুর (জামালপুর)
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬: ৫০
ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর আসনে ভোটগ্রহণের দায়িত্বে আওয়ামী লীগের অর্ধশত নেতা–কর্মী

জামালপুর–২ (ইসলামপুর) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দায়িত্ব পেয়েছেন আওয়ামী লীগের অন্তত অর্ধশত নেতা–কর্মী। প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং এবং পোলিং অফিসার (ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা) হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে এরই মধ্যে প্রশিক্ষণও নিয়েছেন তাঁরা।

অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন এই ভোটগ্রহণের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। এ ছাড়া তাঁরা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ধর্ম প্রতিমন্ত্রী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ফরিদুল হক খান দুলালের অনুগত হিসেবে পরিচিত। এ পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে গভীর শঙ্কা প্রকাশ করছেন স্বতন্ত্র ও অন্যান্য দলের প্রার্থীরা। 


গত শনিবার ও রোববার উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের আয়োজনে ইসলামপুর উচ্চবিদ্যালয় কক্ষে ভোটগ্রহণ উপলক্ষে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নৌকার প্রার্থীর অনুসারী আওয়ামী লীগের ওই নেতাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। 

স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্র এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়নে সভারচর মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ এমএ রুহুল আমীন ভোটগ্রহণে প্রিসাইডিং অফিসার পদে দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি একাধারে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন উপজেলা তাঁতী লীগের সহ–সভাপতি, জেলা তাঁতী লীগের সদস্য এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক।

একই ইউনিয়নের আহম্মেদপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মো. শাহ নেওয়াজ সাজুও প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। 

এই দুই জন ২০২১ সালে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন। দল থেকে মনোনয়ন না পেলে আর নির্বাচনে অংশ নেননি। 

গোয়ালেরচর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক।

গাইবান্ধা ইউনিয়নে পোড়ারচর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ মো. আজাদ বারীও প্রিসাইডিংয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

প্রিসাইডিং অফিসার হয়েছেন চরগোয়ালিনী ইউনিয়নে লক্ষ্মীপুর হাজি ফুল মাহমুদ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাফুর রহমান। তিনি চরপুটিমারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।

অপরদিকে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পেয়েছেন যারা:
কুলকান্দী শামছুন্নাহার উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনছার আলী। তিনি বেলগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

মুন্নিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন আনিছ। তিনি বেলগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

বেলগাছা উচ্চবিদ্যালয় ও টেকনিক্যাল অ্যাড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ এ কেএম মোস্তফা কামাল। তিনি পাথর্শী ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। এর আগে তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী ছিলেন।

পচাবহলা জয়তুন্ননেছা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান কুব্বাত আলী। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।

একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুহুল আমীন পোলিং অফিসার পদে দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি সদর ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল মোতালিবও ভোটগ্রহণের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক।

পাঁচবাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা আল মাহমুদ বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনকারীরা কীভাবে প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার হন? তাঁদের দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। যেসব আওয়ামী লীগ নেতা ভোটগ্রহণে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তাঁরা নৌকা প্রতীকসহ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের লোক।’ 

কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এসএম শাহিনুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘এ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। দলীয় কমিটি প্রধান হওয়ায় পদধারী নেতারা তাঁর নির্বাচন করতে অনেকটাই বাধ্য। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ নেতাদের ভোটগ্রহণের দায়িত্ব দেওয়ায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় দেখা দিয়েছে।’

আওয়ামী লীগের পদে থাকা লোকজনকে কীভাবে ভোটগ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া হলো— এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামান চৌধুরী বলেন, ‘ভোটগ্রহণে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা কি না, সেটি আমাদের জানা নেই। আমরা তাঁদের দায়িত্ব দিয়েছি স্কুল-কলেজের শিক্ষক হিসেবে।’ 

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের কোনো পদধারীকে ভোটগ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

উল্লেখ্য, এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য মো. ফরিদুল হক খান দুলাল। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ঢাকা বিমানবন্দর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহাজাহান আলী মণ্ডল (ট্রাক), জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য জিয়াউল হক জিয়া (ঈগল), সদস্য এসএম শাহীনুজ্জামান শাহীন (কাঁচি)।

এ ছাড়া জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা আল মাহমুদ এবং বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা তৃণমূল বিএনপি মনোনীত মো. হোসেন রেজা বাবু সোনালি আঁশ প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চোর সন্দেহে নির্যাতন: মবের ভুক্তভোগীকে জেল, হাসপাতালে মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ওমর ফারুক
ওমর ফারুক

দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চলে ভ্যানচালক ওমর ফারুকের (৩৮) ওপর। পেরেক ঢোকানো হয় হাত-পায়ে। পানি চাইলে শীতের রাতে নগ্ন করে চুবানো হয় নদীতে। তারপর দফায় দফায় নির্যাতন। পায়ুপথে ঢোকানো হয় মরিচের গুঁড়া। এতে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন ফারুক। ওই অবস্থায় তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে কারাগার থেকে হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত ফারুকের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা সদরের চাঁনপাড়া মহল্লায়। বাবার নাম মসলেম সরদার। গত বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলা সদরের সিএনজি সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে সমিতির সদস্যরা তাঁকে নির্মম নির্যাতন করেন। স্থানীয়রা জানান, চুরির অভিযোগে নির্যাতন করা হলেও পরে মাদক উদ্ধারের নাটক সাজানো হয়। এক পুরিয়া গাঁজার জন্য ফারুককে সাত দিনের কারাদণ্ড এবং ১০০ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা। পরে ওই রাতেই তাঁকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রেখে যায় বাগমারা থানা-পুলিশ। শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় পরদিন সকালে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।

গত বুধবার উপজেলা সদরে গেলে ব্যাটারি চুরির অপবাদ দিয়ে ওমর ফারুককে আটকে রাখেন সিএনজি সমিতির সদস্যরা। সমিতির সভাপতি রেজাউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে সমিতির ২০-২৫ জন সদস্য মব সৃষ্টি করে তাঁকে নির্মম নির্যাতন করেন। চুরির কথা স্বীকার করাতে চার হাত-পায়ে পেরেক ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। নগ্ন করে ফেলে রাখা হয় রাস্তায়। পানি খেতে চাইলে পাশের নদীতে চুবানো হয়। পায়ুপথে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় মরিচের গুঁড়া। একপর্যায়ে অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে এক পুরিয়া গাঁজা এনে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থা দেখে পুলিশ সদস্যরা আর তাঁকে নিয়ে যেতে চাননি। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা। তিনি নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে মুমূর্ষু ভ্যানচালক ফারুককে সাত দিন কারাদণ্ড ও ১০০ টাকা অর্থদণ্ড দেন।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাহ আলম খান জানান, ওই রাতেই পুলিশ ওমর ফারুককে আহত অবস্থায় কারাগারে দিয়ে যায়। তাঁর অবস্থা খারাপ দেখে পরদিন সকালে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ফারুক মারা যান। এরপর ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ফারুকের বাবা মসলেম সরদারও ভ্যানচালক। তিনি বলেন, মিথ্যা অভিযোগে ছেলেকে নির্যাতন করা হয়েছে। চুরি না করলেও স্বীকার করাতে এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।

ফারুকের মা পারুল বেগম বলেন, ‘গরিব বলে আমার ছেলেকে এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসা না করিয়ে প্রশাসন তাকে কারাগারে পাঠায়। সিএনজির লোকজন দেখায়, তার কাছে গাঁজা পাওয়া গেছে। কিন্তু সে মাদক সেবন করত না। প্রশাসন নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আমার মৃতপ্রায় ছেলেকে জেলে দিয়ে খুব খারাপ কাজ করেছে। তখনো সঠিক চিকিৎসা হলে বেঁচে যেত। আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত সবার বিচার চাই।’

এ বিষয়ে কথা বলতে ভবানীগঞ্জ সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি রেজাউল করিমের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। সামনাসামনি না গেলে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলবেন না বলে জানান।

মুমূর্ষু ব্যক্তিকে কারাগারে নেওয়ার বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করি না। আদেশ হলে আমাদের কাজ কারাগারে পৌঁছে দেওয়া। সেটাই করেছি।’ নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরিবার চাইলে মামলা করতে পারে। তারপর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মুমূর্ষু ব্যক্তির চিকিৎসা না করিয়ে কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা বলেন, তিনি একটি সভায় ব্যস্ত আছেন। সভা শেষে ফোন করবেন। পরে আর ফোন করেননি। আবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

বিভাগীয় কমিশনার ড. আ ন ম বজলুর রশীদ বলেন, এ বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

খুলনা প্রতিনিধি
তনিমা তন্বী। ছবি: আজকের পত্রিকা
তনিমা তন্বী। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আলোচিত তনিমা তন্বীকে আটক করেছে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে মহানগরীর টুটপাড়া থেকে তন্বীকে আটক করা হয়। খুলনা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি তৈমুর ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে সোমবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে মহানগরীর সোনাডাঙ্গার আল আকসা মসজিদ রোডে অবস্থিত ১০৯ মুক্তা হাউসের নিচতলার তন্বীর বাসায় মোতালেব গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার পর স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি খুলনাসহ দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তোলে।

এ ঘটনায় পুলিশ ওই কক্ষ থেকে মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।

এর আগে মুক্তা হাউসের মালিকের স্ত্রী আশরাফুন্নাহার জানিয়েছিলেন, স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তন্বী গত ১ ডিসেম্বর নিচতলাটি ভাড়া নিয়েছিলেন। তিনি নিজেকে এনজিও কর্মী হিসেবে দাবি করে প্রায় সময় বাড়ির বাইরে থাকতেন। তাঁর কক্ষে একাধিক পুরুষের আসা-যাওয়া ছিল। পরে অন্যদের মাধ্যমে তাঁর অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়টি জানতে পেরে চলতি মাসেই বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়। তবে বাড়ির ছাড়ার আগেই গুলিবিদ্ধের ঘটনাটি ঘটেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডেইলি স্টারে লুটপাট-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৩৫০-৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৩৫০-৪০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) তেজগাঁও থানায় মামলাটি করা হয়। দ্য ডেইলি স্টারের হেড অব অপারেশনস মিজানুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি, ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ২০২৫ সালের সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের অধীনে এ মামলা দাখিল করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ১৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক ১২টা ২৫ মিনিট থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দ্য ডেইলি স্টার ভবনের সামনে বিপুলসংখ্যক লোক দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা ও দাহ্য পদার্থ নিয়ে সমবেত হয়। তারা পত্রিকাটির বিরুদ্ধে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী স্লোগান দিতে থাকে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক পোস্টের মাধ্যমে হামলার আহ্বান জানায়।

রাত আনুমানিক ১২টা ৩৫ মিনিটে হামলাকারীরা সাংবাদিক ও কর্মচারীদের মারধর ও হত্যাচেষ্টার উদ্দেশ্যে ভবনের মূল গেট ও কাচের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। ভবনের বিভিন্ন তলা পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং বহু আসবাব নিচে ফেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

এজাহারে বলা হয়, হামলায় ভবনের ভেতরে থাকা দুই শতাধিক কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ক্যামেরা, সার্ভার, প্রিন্টার, স্টুডিও সরঞ্জামসহ বিপুল পরিমাণ ইলেকট্রনিক ডিভাইস নষ্ট হয়, যার আনুমানিক মূল্য পাঁচ কোটি টাকা। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের লকারে থাকা প্রায় ৩৫ লাখ টাকা লুট করা হয়। ভবনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, লিফট, সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম ও বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনেও ক্ষতি করা হয়।

আসামিদের ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ফলে ‘দ্য ডেইলি স্টার ভবনে’ সর্বমোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের আনুমানিক মূল্য ৪০,০০,০০,০০০ (চল্লিশ কোটি টাকা)। যাচাই-বাছাই শেষে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের হিসাব আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

সন্ত্রাসীদের হামলা ও অগ্নিসংযোগে দ্য ডেইলি স্টারের তৃতীয় তলায় স্টোরে সংরক্ষিত হিসাব বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ নথি, জাতীয় রাজস্ব বিভাগের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর-সম্পর্কিত যাবতীয় নথি এবং নিউজ পেপার আর্কাইভস পুড়িয়ে ভস্মীভূত করা হয় বলেও এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

হামলার সময় প্রমাণ নষ্টের উদ্দেশ্যে সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয় এবং ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজে বাধা দেওয়া হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ অভিযানে ভবনের ভেতর থেকে অন্তত ৩০ জন কর্মীকে উদ্ধার করা হয়।

সন্ত্রাসীদের হামলার কারণে দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায় এবং ১৯ ডিসেম্বর পত্রিকা প্রকাশিত হয়নি। অনলাইন কার্যক্রম ১৭ ঘণ্টা বন্ধ ছিল।

মামলার এজাহারে ডেইলি স্টার জানিয়েছে, এই হামলার সিসিটিভি ফুটেজ এবং বিভিন্ন মিডিয়ার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে।

তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যশৈনু মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হেডফোন কানে রেললাইনে যুবক, ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত

ফেনী প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ফেনীতে ট্রেনে কাটা পড়ে আবদুল্লাহ আল নাহিদ (২২) নামের এক যুবক মারা গেছেন। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের সদর উপজেলার উত্তর শিবপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নাহিদ সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের দেওয়ানগঞ্জ এলাকার দেবীপুর গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে।  

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামগামী সাগরিকা ট্রেনটি উত্তর শিবপুর এলাকা অতিক্রম করার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে ফেনী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ দীপক দেওয়ান বলেন, নিহত যুবক হেডফোন কানে রেললাইনে হাঁটছিলেন। পরে চট্টগ্রামগামী ট্রেনটি তাঁকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে রেললাইনের এক পাশে ছিটকে পড়েন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত