Ajker Patrika

সিজারের পর ‘নবজাতক উধাও’ নিয়ে চিকিৎসকের সংবাদ সম্মেলন, ২ তদন্ত কমিটি

পাবনা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭: ৩৯
সিজারের পর ‘নবজাতক উধাও’ নিয়ে চিকিৎসকের সংবাদ সম্মেলন, ২ তদন্ত কমিটি

পাবনা শহরের মডেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজারের পর নবজাতক উধাও হওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। গতকাল সোমবার ওই হাসপাতালে এ ঘটনার পর আজ মঙ্গলবার এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক।

সেই সঙ্গে এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন কার্যালয় ও সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় পাবনা প্রেসক্লাবের ভিআইপি অডিটোরিয়ামে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ওই ঘটনার প্রসূতি সার্জন শাহিন ফেরদৌস শানু।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক আরিফুর ইসলাম, হাসপাতালের পরিচালক সেলিম উদ্দিন ও রোগীর স্বামী নজরুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন—পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী ও প্রসূতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক শাহিন ফেরদৌস শানু।

চিকিৎসক শাহিনা ফেরদৌস বলেন, ‘ক্লিনিক থেকে আমাকে আমার রোগী বলে জরুরিভাবে সিজারের জন্য কল করা হয়। আমি এসে দেখি রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে। আমার কোনো প্রেসক্রিপশন বা কোনো কাগজপত্র নেই। তথাপি ডাক্তার হিসেবে রোগীর অবস্থা জরুরি দেখে তাঁকে সিজার করার উদ্যোগ নেই। চামড়া কাটার পর বুঝতে পারি এই রোগীর পেটে কোনো বাচ্চা নেই। তাৎক্ষণিকভাবে রোগীর স্বামী নজরুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে তাঁকে সরাসরি দেখানো হয়।’

শাহিন ফেরদৌস শানু আরও বলেন, ‘মেডিকেলের ভাষায় এটা ফ্যানটম প্রেগনেন্সি বা ভৌতিক গর্ভধারণ। এমন রোগী খুব কম পাওয়া যায়। তা ছাড়া রোগীর সঙ্গে যে ফাইল ছিল সেগুলো ২০১৭ সালের রোগীর প্রথম বাচ্চার কাগজপত্র। জরুরি সময়ে তারিখ দেখা হয়নি। দেখা হয়েছিল রিপোর্টের রেজাল্ট। এই বিষয়টি রোগী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়সারা দায়িত্ব ও কর্তব্যের কারণে হয়েছে। বিষয়টি ভালোভাবে না দেখার কারণে তিনিও অভিযোগ থেকে মুক্ত নন। নিতান্তই জরুরির কারণে এমনটি হয়েছে, এবং এটি আমাদের ভুল হয়েছে।’

 ‘তবে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বাচ্চা উধাও বা চুরি হয়েছে এমন খবর নানা গণমাধ্যমে আসলেও এ তথ্য সঠিক নয়। বিষয়টি নিয়ে আমি বিব্রত ও লজ্জিত’ বলেন শাহিন ফেরদৌস।

এ সময় ক্লিনিক মালিক সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘ডাক্তার শাহিন ফেরদৌস শানুর নাম বলায় রোগীকে আমরা নিজেরা হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করে, প্রেগন্যান্ট সিমটম দেখে, ডাক্তার কল করে সিজার করানো হয়েছে। তবে পুরোপুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে রোগী ভর্তি করা হয়েছে এটা ঠিক।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ভুক্তভোগী নারী আকলিমা খাতুন আঁখির স্বামী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে সিভিল সার্জন আমাকে বলেছেন, তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন। তিন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে, আদৌ আমার স্ত্রী গর্ভবতী ছিলেন কি না। ইতিমধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানানো হয়েছে, আমার স্ত্রী গর্ভবতী ছিলেন না। মেডিকেলের পরিভাষায় আর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যদি এমন হয় তাহলে এটা মেনে নেওয়া ছাড়া আমার আর কি করার আছে। কারণ এটি তো আমি অস্বীকার করতে পারব না।’

এ দিকে জেলা প্রশাসন কার্যালয় ও সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পাবনা জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সোমবার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক সাইফুর রহমানকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর সে আলোকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

পাবনা জেলা সিভিল সার্জন মনিসর চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাচ্চা উধাওয়ের বিষয়ে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে মঙ্গলবার সকালে পাবনা মেডিকেল কলেজের (গাইনী ও অবস বিভাগ) সহকারী অধ্যাপক নার্গিস সুলতানকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত