পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে গণমিলনায়তন, নেই তদারকি

আশরাফুল আলম, কাজীপুর (সিরাজগঞ্জ)
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২১, ১৬: ৫৩

বিচার, শালিস, ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান ও গ্রহণসহ সামাজিক সব ধরণের কার্যক্রমই এক সময় চলত গণমিলনায়তনে বসে। সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়নের হাটশিরায় রয়েছে তেমন একটি গণমিলনায়তন কেন্দ্র। কিন্তু কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠু তদারকি আর অযত্ন অবহেলায় প্রায় তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে গণমিলনায়তন কেন্দ্রটি।

সম্প্রতি সরেজমিন গণমিলনায়তন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, কেন্দ্রের নির্ধারিত জায়গা দখল করে রোপণ করা হয়েছে গাছ। একাংশ দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে মসজিদ। জীর্ণ ভবনকে ঘিরে রেখেছে লতাপাতা-আগাছা। সামনের অংশ দখল করে স্থানীয়রা চাষ করছেন সবজি। দূর থেকে বোঝার উপায় নেই এটি একটি গণমিলনায়তন কেন্দ্র। ভবনে পচন ধরে খসে পড়েছে পলেস্তারা ও ইট। স্থাপনার দরজা-জানালা, চেয়ার-টেবিলসহ সকল আসবাব পত্র লোপাট হয়ে গেছে অনেক আগেই। মানুষ ও পশুপাখি এখন সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করে, ময়লা আবর্জনা ফেলে। নির্জন এই স্থাপনাতে নেশাখোরদের আনাগোনা বেড়েই চলেছে। উপজেলার সোনামুখী গণমিলনায়তন কেন্দ্রটিরও একই অবস্থা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রামের সাধারণ মানুষের গণজমায়েতের লক্ষ্যে সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় ১৯৮০ সালে কাজীপুরে মোট সাতটি গণমিলনায়তন কেন্দ্র নির্মিত হয়। নির্মাণের পর থেকে ভালোই ব্যবহৃত হচ্ছিল কেন্দ্রগুলো। এরই মধ্যে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মপদ্ধতি পাল্টে গেলে ইউনিয়ন পর্যায়ের অফিস কাম গণমিলনায়তন কেন্দ্রগুলোর কর্মকাণ্ডও ১৯৮৫-৮৬ সাল থেকে স্থবির হয়ে পড়ে। সেই থেকে মিলনায়তনগুলো ব্যবহার না করায় স্থাপনাগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এরই মধ্যে নাটুয়ারপাড়া ও তেকানি ইউনিয়নের গণমিলনায়তন কেন্দ্র দুটি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আর নিলামে বিক্রি করা হয়েছে গান্ধাইল, শুভগাছা ও মাইজবাড়ী ইউনিয়নের গণমিলনায়তন তিনটি। বাকি আছে শুধু সোনামুখী ও চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়নের মিলনায়তন কেন্দ্র দুটি।

পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে গণমিলনায়তনস্থানীয়রা বলছেন, গণমিলনায়তন কেন্দ্রগুলোর ব্যাপারে বেশ কয়েকবার উপজেলা সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কোন ফল আসেনি। কেন্দ্রগুলোর বেহাল অবস্থার কথা জানানোর পরও আনুষ্ঠানিক কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। 

কাজীপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, শুনেছি গণমিলনায়তন কেন্দ্রগুলো বেদখল হয়েছে। কিন্তু অফিসিয়ালী কোন খোঁজখবর নেয়ার প্রয়োজন হয় না। আর বেশির ভাগ কেন্দ্রই তো নদীতে বিলীন হয়েছে। 

কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দিকী আজকের পত্রিকাকে জানান, গণমিলনায়তন কেন্দ্রগুলোর সম্পত্তি সমাজসেবা অফিসের দায়িত্বে রয়েছে। তাঁদেরই উচিত এ বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া। দুঃখজনক হলেও সত্য তারা কিছুই করছেন না। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত