Ajker Patrika

মেয়র-কাউন্সিলরদের ‘খেদমতে’ রাজশাহী থেকে ঢাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহর

রিমন রহমান, রাজশাহী
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২৩, ২২: ২১
মেয়র-কাউন্সিলরদের ‘খেদমতে’ রাজশাহী থেকে ঢাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহর

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথ অনুষ্ঠানে দাওয়াত থাকলেও যাননি চারজন এমপি। তবে মেয়র ও কাউন্সিলরদের ‘খেদমতে’ সিটি করপোরেশনের অর্ধশত কর্মকর্তা-কর্মচারী ঢাকায় গিয়েছেন। সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী জানিয়েছেন, বহরের একটি অংশের যাবতীয় খরচ সিটি করপোরেশন বহন করছে।

আজ সোমবার দুপুরে রাসিকের নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে। শপথ নিয়েই মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে কাউন্সিলরসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা যান ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে। কিন্তু লিটনের সঙ্গে এ সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোনো গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন না। এমনকি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও লিটনের শপথ অনুষ্ঠানে যাননি রাজশাহীর চার এমপি। আমন্ত্রণ পাওয়ার পরও হাজির হননি রাজশাহী মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

শপথ অনুষ্ঠানে শুধু রাজশাহী-৪ আসনের এমপি এনামুল হক, রাজশাহী-৫ আসনের এমপি ডা. মনসুর রহমান ও সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আদিবা আনজুম মিতা গিয়েছিলেন। রাজশাহীর অন্য চার এমপি যাননি। শপথ গ্রহণের পর কাউন্সিলর ও নারী কাউন্সিলরদের নিয়ে ৩২ নম্বরে যান লিটন। এ সময় সেখানে বিএনপির (বহিষ্কৃত) কাউন্সিলররাও সঙ্গে ছিলেন। সেখানে দলীয় নেতা-কর্মীদের ভিড়ে মেয়র লিটনের পাশে দাঁড়াতে পারছিলেন না তাঁর সহধর্মিণী শাহিন আক্তার রেনী।

দাওয়াত থাকলেও না যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে জবাবে রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন বলেন, তিনি আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনী এলাকায় প্রোগ্রাম থাকায় যেতে পারেননি।

তবে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা ফোন ধরেননি। তাই এ বিষয়ে তাঁর কোনো মন্তব্য জানা যায়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শনিবার বিকেলের ফ্লাইটে সস্ত্রীক ঢাকায় যান মেয়র লিটন। আর ৩০ জন সাধারণ কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত নারী আসনের ১০ জন কাউন্সিলরের মধ্যে একজন ছাড়া বাকি সবাই বাস রিজার্ভ করে শপথ নিতে ঢাকায় যান।

 ৪০ জনের শপথ অনুষ্ঠানে মহড়ার জন্য আরও অন্তত সাড়ে তিন শ নেতা-কর্মী বহরে যুক্ত হন। তাঁদের অনেকেই সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারী। ছুটি ছাড়াই তাঁরা মেয়র লিটনকে ‘চেহারা দেখাতে’ অফিস ফেলে ঢাকা ছোটেন। কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাত যাপন করেন ঢাকার ভিক্টোরিয়া আবাসিক হোটেলে। 

এই বহরে থাকা সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার দিলীপ কুমার ঘোষ, ডেপুটি রেজিস্ট্রার রোকনুজ্জামান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের চিফ মেডিকেল অফিসার তবিবুর রহমান শেখ, রেলওয়ে বিভাগীয় হাসপাতালের (পশ্চিমাঞ্চল) ফার্মাসিস্ট আনোয়ার হোসেন, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ক্লেইম ইন্সপেক্টর মেহেদী হাসান, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান সহকারী ইকবাল হোসেন, অফিস সহায়ক সত্যব্রত ইসলাম, উচ্চমান সহকারী শাহজাহান আলী, হেডমেট জহুরুল ইসলাম, বিদ্যুৎ বিতরণ প্রতিষ্ঠান নেসকোর কর্মচারী আব্দুস সোহেল এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত বিএমডিএ কর্মচারী জীবন হোসেন। 

এদিকে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, শপথ অনুষ্ঠানে সহযোগিতার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সিটি করপোরেশনের ‘প্রয়োজনীয় সংখ্যক’ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ঢাকায় যেতে বলা হয়। এই সুযোগ লুফে নিয়েছেন সিটি করপোরেশনের ‘দলবাজ’ অর্ধশত কর্মকর্তা-কর্মচারী। এই তালিকায় সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থেকে কম্পিউটার অপারেটর পর্যন্ত আছেন।

এর মধ্যে ছিলেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম শরীফ উদ্দিন, সচিব মশিউর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী নূর ইসলাম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. নূর-ই সাঈদ, বাজেট কাম হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম খান, নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) আহমদ আল মঈন, হিসাবরক্ষক অমৃতা রানীসহ বেশ কয়েকজন। 

সিটি করপোরেশনের সাতটি বিভাগের প্রধানেরাও গেছেন এই বহরে। তবে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অসুস্থ থাকায় তাঁর বদলে মেডিকেল টিমে গেছেন একজন হিসাবরক্ষক। শপথ অনুষ্ঠানে সিটি করপোরেশনের হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া বেশির ভাগই গেছেন ‘শোডাউনে’। 

এ ছাড়া রাজশাহী থেকে ছুটেছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। ঢাকায় নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে এই বিশাল বহর যায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। আজ সোমবার দুপুরে ঢাকার স্টার কাবাব রেস্টুরেন্ট থেকে ৩৫০ জনের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। দুপুরের খাবারের স্পনসর করেন একজন ব্যক্তি। তবে টুঙ্গিপাড়া থেকে ফেরার পথে কুষ্টিয়ায় জাহাঙ্গীর হোটেলে এই বহরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয় সিটি করপোরেশনের খরচে। 

এই বহরে কী দায়িত্ব পালন করছেন তা জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. নূর-ই সাঈদ কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। যোগাযোগ করা হলে বহরে থাকা সিটি করপোরেশনের সচিব মশিউর রহমান বলেন, ‘করপোরেশনের কতজন গেছেন মনে নেই। তাঁরা কী কাজে ঢাকা ও টুঙ্গিপাড়ায় গেছেন তা-ও জানা নেই।’ 

এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাবেক জেলা সমন্বয়ক সুব্রত কুমার পাল বলেন, ‘সিটি করপোরেশনে পদোন্নতি ও দলীয় পদ-পদবি পেতে দলবাজরা মেয়র লিটনের “গুড লিস্টে” থাকতে এই শোডাউনে গিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘নবনির্বাচিতদের শপথ অনুষ্ঠানে যাতায়াতসহ থাকা-খাওয়ার খরচ হবে তাঁদের ব্যক্তিগত। কিন্তু নগর ভবনের কর্মকর্তারা অবৈধ সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন। এটি কোন আইনের বলে তাঁরা করেছেন জনগণ তা জানতে চায়। কারণ, জনগণের ট্যাক্সের টাকার তাঁরা অপচয় করেছেন।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এ বি এম শরীফ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশন থেকে ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এসেছেন। যাতায়াতের জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা, থাকা-খাওয়া, মেডিকেল টিম, লজিস্টিক সাপোর্টসহ নানা ধরনের কাজের জন্য তাঁরা এসেছেন। মেয়র-কাউন্সিলরদের যাতায়াত, আবাসিক হোটেলে থাকা-খাওয়ার ব্যয় বহন করছে সিটি করপোরেশনই। এই বাবদ মোট কত টাকা খরচ হলো, তা রাজশাহী ফেরার পর বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এনসিপির হান্নান মাসউদকে হত্যার হুমকি: যুবক গ্রেপ্তার

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার করা ইসরাত রায়হান অমি। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার করা ইসরাত রায়হান অমি। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে শাপলা কলি প্রতীকের সংসদ সদস্য প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদ এবং তাঁর কর্মীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার যুবকের নাম ইসরাত রায়হান অমি। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাতিয়া উপজেলার চরইশ্বর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দরোড এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানায়, ইসরাত রায়হান অমি চরইশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদের ছেলে। তাঁর বিরুদ্ধে হাতিয়া থানায় তিনটি মামলা রয়েছে।

পুলিশের তথ্যমতে, শুক্রবার রাতে ইসরাত রায়হান অমি এনসিপির এক কর্মীর কাছে মেসেঞ্জারে উসকানিমূলক বার্তা পাঠান। ওই বার্তায় তিনি লেখেন, আব্দুল হালিম আজাদকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হলে হান্নান মাসউদ, তানভীরসহ অন্য নেতাদের হাতিয়ার উত্তরাঞ্চলে চলাচল ‘হারাম’ করে দেওয়া হবে। বার্তায় আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আমাদের নেতা-কর্মীরা সরাসরি গিলে খেয়ে ফেলবে।’

এ বিষয়ে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, অভিযান চালিয়ে ইসরাত রায়হান অমিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া চলমান। তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বা সরাসরি উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করবে, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বকশীগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় রুপিসহ যুবক আটক

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি 
আটক করা যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা
আটক করা যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামালপুরের বকশীগঞ্জে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ভারতীয় রুপিসহ মো. আসাদ (৩০) নামের এক যুবককে আটক করেছেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্যরা। আটক আসাদ উপজেলার ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের বালুগাঁও গ্রামের আবু হোসেনের ছেলে। গতকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে কামালপুর সীমান্তবর্তী সাতানীপাড়া এলাকার ১০৮৬ নম্বর পিলারের কাছ থেকে তাঁকে আটক করা হয়। পরে রাতেই তাঁকে বকশীগঞ্জ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ সময় তাঁর কাছে থাকা ভারতীয় ১৮ হাজার রুপি উদ্ধার করেন সাতানীপাড়া বর্ডার আউটপোস্টের (বিওপি) বিজিবি সদস্যরা।

জামালপুর ৩৫ বিজিবির সাতানীপাড়া বিওপি সূত্রে জানা গেছে, গোপন খবরের ভিত্তিতে সাতানীপাড়া বিওপির বিজিবির নায়েব সুবেদার ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে টহল দল অভিযান পরিচালনা করেন। একপর্যায়ে ভারতীয় রুপি বহনকারী মো. আসাদকে আটক করা হয়।

সাতানীপাড়া বিওপির বিজিবির নায়েব সুবেদার ইসমাইল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ১৮ হাজার ভারতীয় রুপিসহ আসাদ নামের এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তাঁকে বকশীগঞ্জ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মকবুল হোসেন বলেন, আটক আসাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাইড্রোসেফালাসে আক্রান্ত আয়শার চিকিৎসা বন্ধ, অর্থাভাবে মানবেতর জীবন

কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি 
শিশু আয়শাকে কোলে নিয়ে বসে আছেন তার মা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিশু আয়শাকে কোলে নিয়ে বসে আছেন তার মা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি পাগলাটারী গ্রামের আশেক আলী ও সুমি বেগম দম্পতির আট বছর বয়সী মেয়ে আয়শা সিদ্দিকা হাইড্রোসেফালাস রোগে আক্রান্ত হয়ে চরম দুর্ভোগের জীবন কাটাচ্ছে। জন্মের পর থেকেই অস্বাভাবিকভাবে বড় হতে থাকে তার মাথা। দারিদ্র্যের কারণে দীর্ঘদিন ধরে তার চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, আয়শার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন প্রায় ১০ লাখ টাকা। তবে দরিদ্র এই পরিবারের সবটুকু সম্বল ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ফলে অর্থের অভাবে বর্তমানে শিশুটির চিকিৎসা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এতে অস্বাভাবিক বড় মাথা ও তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করছে ছোট্ট আয়শা।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ওই দম্পতির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আয়শা বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে। মাথার ওজন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সে নিজে নড়াচড়া করতে পারে না। প্রস্রাব-পায়খানা করাতে হলে দুজন তাকে ধরতে হয়।

আয়শার মা সুমি বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ের মাথার ওজন এতটাই বেড়ে গেছে যে একা ধরে রাখা যায় না। নাকে মাংস বেড়ে যাওয়ায় ঠিকমতো শ্বাসও নিতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে ডাক্তারের পরামর্শে মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে গিয়েছিলাম। চিকিৎসক অপারেশনের কথা বলেছেন। অপারেশনে খরচ হবে প্রায় ৭ লাখ টাকা, অন্যান্য খরচসহ প্রায় ১০ লাখ টাকা লাগবে। এত টাকা আমাদের সামর্থ্যের বাইরে। তাই মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসতে হয়েছে।’

জানা যায়, প্রায় চার বছর আগে একটি জাতীয় দৈনিকে (নয়া দিগন্ত) আয়শার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে দুজন প্রবাসী ব্যক্তি ৩৫ হাজার টাকা সহায়তা করেছিলেন। সেই অর্থে কিছুদিন চিকিৎসা চললেও পরে আর তা সম্ভব হয়নি।

আয়শার বাবা আশেক আলী ও মা সুমি বেগম বলেন, ‘দেশের কোনো বিত্তবান কিংবা প্রবাসী মানবিক মানুষ যদি সহযোগিতার হাত বাড়ান, তাহলে আমাদের অবুঝ শিশুটির চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারতাম।’

এলাকাবাসীও আয়শার চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবান ও মানবিক ব্যক্তিদের সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সবজি গ্রামে শীতকালীন চাষে ব্যস্ত গোপালগঞ্জের কৃষকেরা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোপালগঞ্জের ‘সবজি গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত সদর উপজেলার রঘুনাথপুর, সিলনা ও গুয়াধানা এবং টুঙ্গীপাড়া উপজেলার রুপাহাটি, গোপালপুর, মিত্রডাঙ্গা ও বন্যাবাড়ি গ্রামের কৃষকেরা শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মৌসুমভেদে সারা বছরই এসব গ্রামের কৃষকেরা নানা ধরনের শাকসবজি আবাদ করে থাকেন।

চলতি শীত মৌসুমে জমি ও মাছের ঘেরপাড়ে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, টমেটো, ব্রকলিসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন কৃষকেরা। নিজেদের কষ্টার্জিত বিষমুক্ত ও বালাইমুক্ত নিরাপদ সবজি বাজারে নিয়ে বিক্রি করে ভালো আয় করছেন তাঁরা। উৎপাদন ভালো হওয়ায় এবং বাজারে ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় কৃষকদের সংসারে ফিরছে সচ্ছলতা।

এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, সবুজে সবুজে ভরে উঠেছে বিস্তীর্ণ মাঠ। রঘুনাথপুর, সিলনা, গুয়াধানা, গোপালপুর ও মিত্রডাঙ্গা গ্রামের মাঠজুড়ে সারি সারি ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, টমেটো, মুলা, পালংশাকসহ নানা ধরনের শীতকালীন সবজি শোভা পাচ্ছে। শুধু জমিতে নয়, মাছের ঘেরপাড়েও লাউ, করলা, টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করা হয়েছে।

কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে চারা রোপণ, সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ক্ষেতখামারে। এসব গ্রামের মানুষের প্রধান আয়ের উৎস হলো সবজি চাষ। শাকসবজির ফলনেই নির্ভর করে হাজারো কৃষকের জীবন-জীবিকা।

এ বছর এসব গ্রামে সবজির ফলন ভালো হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে আশপাশের জেলা থেকেও ব্যাপারীরা এসে সবজি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। পাইকারি বাজারে মিষ্টিকুমড়া প্রতিটি ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং লাউ ২০ থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সিলনা গ্রামের কৃষক প্রমথ ওঝা বলেন, ‘আমরা মৌসুম অনুযায়ী সবজি চাষ করি। শীতকালে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, টমেটো ও শাকসবজি চাষ করে সংসারের খরচ ও সন্তানদের পড়াশোনার ব্যয় মেটাই। এই ফসলের ওপরই আমাদের জীবন।’

সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

একই গ্রামের শিলা ওঝা বলেন, ‘১৫ কাঠা জমিতে সবজি চাষ করেছি। ফসল ভালো হয়েছে, লাভও ভালো হবে। এই চাষ করেই আমরা ভালো আছি।’

সিলনা গ্রামের কিষানি রিতা কীর্তনিয়া বলেন, ‘আমি ২২ বছর ধরে সবজি চাষ করছি। ভাসমান বেডেও নানা ধরনের সবজি উৎপাদন করি। এতে ভালো লাভ হচ্ছে। গোপালগঞ্জসহ বাইরের জেলার ব্যাপারীরা এসেও আমাদের কাছ থেকে সবজি কিনে নেয়।’

সিংগারকুল গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ঘেরপাড়ে টমেটো ও শসা চাষ করেছি। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। টমেটো প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং শসা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করছি।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গোপালগঞ্জের উপপরিচালক ড. মো. মামুনুর রহমান বলেন, ‘জেলার প্রায় ৪০ শতক জমি নিচু হওয়ায় কৃষকেরা সারা বছর ঘেরপাড়ে সবজি চাষ করেন। রবি মৌসুমে জমিতে ব্যাপকভাবে সবজি আবাদ হয়। এ বছর প্রায় ৪ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা এরই মধ্যে অর্জিত হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বছরের চেয়ে ভালো ফলনের আশা করছি। মাঠপর্যায়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত