Ajker Patrika

যেভাবে প্রত্যন্ত গ্রামের এক মাটির বাড়িকে বর্ণিল করে তুললেন এক গৃহবধূ

মো. তারেক রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২৩, ১৭: ২১
যেভাবে প্রত্যন্ত গ্রামের এক মাটির বাড়িকে বর্ণিল করে তুললেন এক গৃহবধূ

রং-তুলির আঁচড় আর শৈল্পিক হাতের ছোঁয়ায় বরেন্দ্রভূমির প্রত্যন্ত গ্রামের মাটির এক দ্বিতল বাড়ি হয়ে উঠেছে অনন্য। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের কাজল কেশর গ্রামের সাধারণ এই বাড়িকে অসাধারণ করে তুলার কারিগর শহিদা বেগম নামের এক গৃহবধূ। ঘরের কাজের ফাঁকে বাড়িটিকে আঁকায় ও লেখায় বর্ণিল করে তুলেছেন তিনি। স্থানীয়দের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকেও মানুষ আসছেন বাড়িটিকে এক নজর দেখতে।

লতা জাতীয় নানা গাছ শোভা বাড়িয়েছে বাড়িটির। ছবি: আজকের পত্রিকাবিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ আর পুকুর পেরিয়ে মেঠো পথের ধারের বাড়িটিতে পৌঁছে গেলে অন্য রকম এক মুগ্ধতা পেয়ে বসবে আপনাকে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, কাদামাটির পরিচ্ছন্ন দেয়ালে তুলির আঁচড়ে শহিদা বেগম ফুটিয়ে তুলেছেন নানা ধরনের আল্পনা ও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থাপনা ও দৃশ্যকে। বাড়ির বাইরের অংশ এবং অন্দর মহল সব জায়গায় শোভা পাচ্ছে নানা ধরনের আলপনা। মাটির পাতিলসহ কুটির শিল্পের নানা উপকরণ ও বাইরের অংশে লাগানো নানা লতা-গুল্ম শোভা বাড়িয়েছে বাড়িটির। বাড়ির উঠোনের ছোট্ট বাগানে লাগানো হয়েছে নানা ধরনের গাছ।

বাড়ির সামনে আছে ছোট্ট একটি বাগান। ছবি: আজকের পত্রিকাশহিদা বেগম জানান, পৈতৃক বাড়িতে স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করেন তিনি। দুই বছর আগে পরিকল্পনা করেন বাড়িটি সাজানোর। এরপর সাংসারিক খরচ থেকে বাঁচানো টাকা দিয়ে শুরু করেন বাড়ির আলপনা আঁকার কাজ। ধীরে ধীরে এমন দৃষ্টিনন্দন এক বাড়িতে রূপ নেয় এটি। সেই বাড়ি এখন দৃষ্টি কাড়ে পথচারীসহ আশপাশের মানুষের। 

শহিদা বেগম আরও জানান, বর্ষায় দেয়ালের বাইরের অংশের কারুকাজ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও দমে যাননি। সময় নিয়ে নানা কারুকাজ ফুটিয়ে তোলেন নতুন রূপে। 

নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের কাজল কেশর গ্রামে বর্ণিল নকশার বাড়িটির অবস্থান। ছবি: আজকের পত্রিকাপ্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা ছাড়া একজন নারীর নান্দনিক কারুকার্যে বিমোহিত দর্শনার্থীরাও। এমনকি এর কথা শোনে দূর-দূরান্ত থেকেও আসেন মানুষজন। 

স্থানীয় বাসিন্দা নিজামুল হক বলেন, ‘শহিদা বেগমের বাড়ির কারণে আমাদের পুরো গ্রাম এখন অলংকরণের গ্রামে পরিণত হচ্ছে। রং আর সূক্ষ্ম কারুকাজ দৃষ্টিনন্দন করেছে একে। এটি আকৃষ্ট করে পথচারী আর সংস্কৃতিপিপাসু মানুষকে। 

পাতিলসহ কুটির শিল্পের নানা উপকরণ দিয়েও সাজানো হয়েছে বাড়িটি। ছবি: আজকের পত্রিকাআসমা বেগম ও সাবিরুল দম্পতি সম্প্রতি বগুড়া থেকে দেখতে আসেন শহিদা বেগমের বাড়ি। তাঁরা বলেন, বরেন্দ্রভূমির প্রত্যন্ত এক গাঁয়ের শিল্পীর এমন রুচিশীল কাজ এলাকার আর দশটি বাড়ি থেকে করে তুলেছে ব্যতিক্রমী। বাড়িটি দর্শনার্থীদের কাছে দিন দিন হয়ে উঠেছে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। 

শিল্পী শহিদা বেগম এখন তাঁর স্বপ্নের আলপনা বাড়িটিকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার ও এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত এক গ্রামকে সারা দেশের মানুষের কাছে চেনানোর স্বপ্ন বুনছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কক্সবাজার বিমান ঘাঁটিতে দুর্বৃত্তদের হামলা, সংঘর্ষে নিহত ১

শাশুড়ির মৃত্যুর খবর শুনে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মা-ছেলের মৃত্যু

নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ও প্রতীক নিয়ে কী প্রস্তাব এল, জানালেন আখতার

আবরার হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জেমির পলায়নের বিষয়ে যা জানাল কারা অধিদপ্তর

রামদা হাতে যুবলীগ নেতার ভিডিও ভাইরাল, পরে গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত