আশরাফুল আলম আপন (রংপুর) বদরগঞ্জ
‘আমার দেড় বছরের বুকের মানিক এখনো কথা বলতে পারে না, শুধু ‘বাপ’ ডাকতে পারে। কয়দিন ধরে খালি বাপ বাপ ডাকছে। কিন্তু তার সেই বাপ যে আর এ দুনিয়াতে নাই, কোনো দিনও যে আর আসবে না, সেটা তো আমার অবুঝ বুকধন জানে না।’
আজ রোববার এভাবেই বিলাপ করছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনে রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত অটোচালক মানিক মিয়ার (৩২) স্ত্রী। দেড় বছরের সন্তান সিয়ামকে নিয়ে অকূলপাথারে পড়েছেন এই সদ্য বিধবা গৃহবধূ।
মানিক মিয়া ১৮ জুলাই বিকেলে রংপুর নগরীর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তাঁর বাড়ি রংপুর নগরীর পূর্ব ঘাঘটপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত সেকেন্দার আলীর ছেলে। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে মানিক মিয়া ছিলেন দ্বিতীয়।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মানিক মিয়া অটোরিকশা চালানোর পাশাপাশি রংপুর শহরের আর কে রোডের শুঁটকির আড়ত এলাকায় রাস্তার ধারে চায়ের দোকান করতেন। ঘটনার দিন বিকেল ৪টার দিকে স্ত্রীকে চায়ের দোকানে রেখে তিনি অটোরিকশা নিয়ে দোকানের কিছু মাল আনতে যান মডার্ন মোড় এলাকায়। এরপর ফেরার পথে বিকেল ৫টার দিকে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এলাকায় পৌঁছালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ আত্মরক্ষার জন্য গুলি ছোড়ে। এ সময় অটোচালক মানিক মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। পরে স্থানীয়রা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ লাশ ময়নাতদন্ত করে পরদিন ১৯ জুলাই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। ওই দিন বাদ আসর বাড়ির পাশে মানিক মিয়াকে দাফন করা হয়।
জানা গেছে, মানিক মিয়ার বাবা সেকেন্দার আলী ১২ বছর আগে মারা যান। এরপর বৃদ্ধ মা, ছোট ভাই ও বোনদের দায়িত্ব পড়ে মানিকের ওপর। ২০১৮ সালে মানিক মুন্নি বেগমকে বিয়ে করেন। দেড় বছর আগে তাঁদের ঘরে জন্ম নেয় সিয়াম। তিন শতক জমির ওপর টিনশেডের দুটি ঘরে তাঁদের বসবাস। তিনি অটোরিকশা চালিয়ে দুই বোনের বিয়ে দিয়েছেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মানিক মিয়া পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ায় পরিবারে নেমে এসেছে অন্ধকার।
আজ রোববার দুপুরে মানিক মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্ত্রী মুন্নি বেগম (২৪) দেড় বছরের সিয়ামকে কোলে নিয়ে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। মানিকের মা নুর জাহান বেগম (৫৫) সন্তান হারিয়ে বাক্রুদ্ধ। এখন বিছানায় শয্যাশায়ী।
মুন্নি বেগম বলেন, ‘ঘটনার দুই দিন আগে থেকে রংপুরে ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ চলছিল। তাই স্বামীকে অটোরিকশা নিয়ে বের হতে দিইনি। ঘটনার দিন ১৮ জুলাই স্বামী চায়ের দোকানে ছিল। বেলা ৩টার দিকে স্বামীর জন্য খাবার নিয়ে দোকানে যাই। এরপর স্বামী আমাকে দোকানে রেখে অটোরিকশা নিয়ে মডার্ন মোড় এলাকায় দোকানের মাল আনতে যায়। গুলিবিদ্ধ হওয়ার দুই মিনিট আগেও মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে কথা হয়। তখন সে বলে, ‘‘পুলিশ-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা চলছে। যাওয়ার রাস্তা পাচ্ছি না। থাকো, একটু পরেই আসছি।’’ এর কিছুক্ষণ পরেই শুনি আমার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।’’’
মুন্নি বেগম বলেন, `আমার স্বামীর কী দোষ ছিল? সে তো কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না, তাকে হত্যা করা হলো কেন? আমার দেড় বছরের বুকের মানিক এখনো কথা বলতে পারে না, শুধু “বাপ” ডাকতে পারে। কয়দিন ধরে খালি বাপ বাপ ডাকছে। কিন্তু তার বাপ যে আর এ দুনিয়াতে নাই, কোনো দিনও যে আর আসবে না, সেটা তো আমার অবুঝ বুকধন জানে না।’
‘কে সান্ত্বনা দেবে আমার অবুঝ সন্তানকে? স্বামী মারা যাওয়ার ১০ দিনেও কেউ খোঁজ নেয়নি। স্বামীর উপার্জনে পরিবার চলত। এখন কে আমাদের দায়িত্ব নিবে? আমরা কি না খেয়ে মারা যাব? আমি আমার স্বামী হত্যাকারীদের বিচার চাই।’
মানিক মিয়ার মা নুরজাহান বলেন, ‘আমার বুকের ধনকে পাখির মতো গুলি করে মারছে। সন্তানের এমন মৃত্যু দেখার আগে আল্লাহ কেন আমার মরণ দিল না।’
ছোট বোন শিউলি বেগম বলেন, ‘বাবা মারা যাওয়ার এক যুগ হলো। তখন থেকে বাবার দায়িত্ব পালন করছিলেন আমার বড় ভাই। কিন্তু তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হলো, এখন আমাদের কী হবে?’
প্রতিবেশী আব্দুস ছাত্তার (৬৫) বলেন, ‘মানিক মিয়া কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে অত্যন্ত ভালো লোক ছিল। সে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। সে মারা যাওয়ার পর পাড়া-প্রতিবেশীরা তাঁর পরিবারকে খাবার দিচ্ছে। কিন্তু তাঁরা আর কয়দিন খাবার দেবে। এই পরিবারটি ভবিষ্যৎ কী?’
‘আমার দেড় বছরের বুকের মানিক এখনো কথা বলতে পারে না, শুধু ‘বাপ’ ডাকতে পারে। কয়দিন ধরে খালি বাপ বাপ ডাকছে। কিন্তু তার সেই বাপ যে আর এ দুনিয়াতে নাই, কোনো দিনও যে আর আসবে না, সেটা তো আমার অবুঝ বুকধন জানে না।’
আজ রোববার এভাবেই বিলাপ করছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনে রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত অটোচালক মানিক মিয়ার (৩২) স্ত্রী। দেড় বছরের সন্তান সিয়ামকে নিয়ে অকূলপাথারে পড়েছেন এই সদ্য বিধবা গৃহবধূ।
মানিক মিয়া ১৮ জুলাই বিকেলে রংপুর নগরীর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তাঁর বাড়ি রংপুর নগরীর পূর্ব ঘাঘটপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত সেকেন্দার আলীর ছেলে। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে মানিক মিয়া ছিলেন দ্বিতীয়।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মানিক মিয়া অটোরিকশা চালানোর পাশাপাশি রংপুর শহরের আর কে রোডের শুঁটকির আড়ত এলাকায় রাস্তার ধারে চায়ের দোকান করতেন। ঘটনার দিন বিকেল ৪টার দিকে স্ত্রীকে চায়ের দোকানে রেখে তিনি অটোরিকশা নিয়ে দোকানের কিছু মাল আনতে যান মডার্ন মোড় এলাকায়। এরপর ফেরার পথে বিকেল ৫টার দিকে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এলাকায় পৌঁছালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ আত্মরক্ষার জন্য গুলি ছোড়ে। এ সময় অটোচালক মানিক মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। পরে স্থানীয়রা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ লাশ ময়নাতদন্ত করে পরদিন ১৯ জুলাই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। ওই দিন বাদ আসর বাড়ির পাশে মানিক মিয়াকে দাফন করা হয়।
জানা গেছে, মানিক মিয়ার বাবা সেকেন্দার আলী ১২ বছর আগে মারা যান। এরপর বৃদ্ধ মা, ছোট ভাই ও বোনদের দায়িত্ব পড়ে মানিকের ওপর। ২০১৮ সালে মানিক মুন্নি বেগমকে বিয়ে করেন। দেড় বছর আগে তাঁদের ঘরে জন্ম নেয় সিয়াম। তিন শতক জমির ওপর টিনশেডের দুটি ঘরে তাঁদের বসবাস। তিনি অটোরিকশা চালিয়ে দুই বোনের বিয়ে দিয়েছেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মানিক মিয়া পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ায় পরিবারে নেমে এসেছে অন্ধকার।
আজ রোববার দুপুরে মানিক মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্ত্রী মুন্নি বেগম (২৪) দেড় বছরের সিয়ামকে কোলে নিয়ে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। মানিকের মা নুর জাহান বেগম (৫৫) সন্তান হারিয়ে বাক্রুদ্ধ। এখন বিছানায় শয্যাশায়ী।
মুন্নি বেগম বলেন, ‘ঘটনার দুই দিন আগে থেকে রংপুরে ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ চলছিল। তাই স্বামীকে অটোরিকশা নিয়ে বের হতে দিইনি। ঘটনার দিন ১৮ জুলাই স্বামী চায়ের দোকানে ছিল। বেলা ৩টার দিকে স্বামীর জন্য খাবার নিয়ে দোকানে যাই। এরপর স্বামী আমাকে দোকানে রেখে অটোরিকশা নিয়ে মডার্ন মোড় এলাকায় দোকানের মাল আনতে যায়। গুলিবিদ্ধ হওয়ার দুই মিনিট আগেও মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে কথা হয়। তখন সে বলে, ‘‘পুলিশ-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা চলছে। যাওয়ার রাস্তা পাচ্ছি না। থাকো, একটু পরেই আসছি।’’ এর কিছুক্ষণ পরেই শুনি আমার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।’’’
মুন্নি বেগম বলেন, `আমার স্বামীর কী দোষ ছিল? সে তো কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না, তাকে হত্যা করা হলো কেন? আমার দেড় বছরের বুকের মানিক এখনো কথা বলতে পারে না, শুধু “বাপ” ডাকতে পারে। কয়দিন ধরে খালি বাপ বাপ ডাকছে। কিন্তু তার বাপ যে আর এ দুনিয়াতে নাই, কোনো দিনও যে আর আসবে না, সেটা তো আমার অবুঝ বুকধন জানে না।’
‘কে সান্ত্বনা দেবে আমার অবুঝ সন্তানকে? স্বামী মারা যাওয়ার ১০ দিনেও কেউ খোঁজ নেয়নি। স্বামীর উপার্জনে পরিবার চলত। এখন কে আমাদের দায়িত্ব নিবে? আমরা কি না খেয়ে মারা যাব? আমি আমার স্বামী হত্যাকারীদের বিচার চাই।’
মানিক মিয়ার মা নুরজাহান বলেন, ‘আমার বুকের ধনকে পাখির মতো গুলি করে মারছে। সন্তানের এমন মৃত্যু দেখার আগে আল্লাহ কেন আমার মরণ দিল না।’
ছোট বোন শিউলি বেগম বলেন, ‘বাবা মারা যাওয়ার এক যুগ হলো। তখন থেকে বাবার দায়িত্ব পালন করছিলেন আমার বড় ভাই। কিন্তু তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হলো, এখন আমাদের কী হবে?’
প্রতিবেশী আব্দুস ছাত্তার (৬৫) বলেন, ‘মানিক মিয়া কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে অত্যন্ত ভালো লোক ছিল। সে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। সে মারা যাওয়ার পর পাড়া-প্রতিবেশীরা তাঁর পরিবারকে খাবার দিচ্ছে। কিন্তু তাঁরা আর কয়দিন খাবার দেবে। এই পরিবারটি ভবিষ্যৎ কী?’
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় আবারও চাদর বিছিয়েছে ঘন কুয়াশা। সকালে রাস্তাগুলো ঢেকে গেছে কুয়াশায়। যানবাহন চলছে আলো জ্বালিয়ে। হালকা বাতাসে বাড়ছে শীত। ঘন কুয়াশা আর শীত উপেক্ষা করে চলতে হচ্ছে কর্মজীবী মানুষদের।
৩৩ মিনিট আগেযশোরের মনিরামপুরে সড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার ভোরে উপজেলার চাঁদপুর এলাকায় খেদাপাড়া-মনিরামপুর সড়ক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
১ ঘণ্টা আগেইতালির রোম থেকে ঢাকা আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকির প্রেক্ষিতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ফ্লাইটের যাত্রীদের টার্মিনাল ভবনে রাখা হয়েছে। কাউকে ইমিগ্রেশন করতে দেওয়া হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছে...
১ ঘণ্টা আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের পাশের ফুটপাতে মেহগনি গাছের চূড়ায় গলায় ফাঁস লাগানো এক ব্যক্তির লাশ ঝুলছিল। ফায়ার সার্ভিস গাছ থেকে লাশটি নামিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। মৃত ব্যক্তির পরিচয় জানা যায় নি।
১ ঘণ্টা আগে