Ajker Patrika

‘মুলার সের ৪০ ট্যাকা, মানুষ খাবে কী’

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৩, ২০: ১২
‘মুলার সের ৪০ ট্যাকা, মানুষ খাবে কী’

‘মুলার সের ৪০ ট্যাকা, মানুষ খাবে কী? তোমাহরক এগুলো কয়া কী হবে? তোমরা তো আর জিনিসপাতির দাম কমবার পাবা নন।’ আজ শুক্রবার গাইবান্ধার পুরাতন বাজারে সবজি ক্রেতা রিকশাচালক আজগর আলী এসব কথা বলেন। 

গাইবান্ধা শহরের হকার্স মার্কেটে বাজার করতে আসা দিনমজুর মমিন মিয়া বলেন, ‘সব জিনিসপাতির দাম হুহু করে বাড়তেছে। কিন্তু আয়–রোজগার তো বাড়তেছে না। সগলি মেলে দেশের গরিব মানুষগুলো মারে ফেলে শুধু বড় লোকেরা বাঁচে থাকলেই চলবে।’ 

পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও গাইবান্ধার বাজারগুলোতে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। ক্রেতা–বিক্রেতারা উভয়ে শোনালেন পণ্যের চড়া দামের কথা। অন্যদিকে আদা, রসুন, পেঁয়াজ, মাছ, ডিম, চাল ও ডালের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ভোজ্য তেলের দাম কমলেও মাংসসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম প্রায় স্বাভাবিক রয়েছে। 

শহরের পুরাতন বাজারের ক্রেতা হুমায়ন মিয়া বলেন, শীতের সময় নতুন সবজি বাজারে আসে। এই সময়ে সবজির দাম কম থাকার কথা থাকলেও বাজারের চিত্র উল্টো। গত বছরগুলোর তুলনায় এখন সব সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ। 

আমেনা বেওয়া বলেন, ‘শীতোত এনা মুলা, কপি, শাকশুকের দাম কমে। এবার কোমা তাই আরও হাউয়ুত হাউয়ুত।’ 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ক্রেতা বলেন, ‘দেশের সব জিনিসপাতির দাম বেশি। শুধু মানুষের দাম কম। কম দামে কিনে খাওয়ার মতো কোনো জিনিসপত্র নাই।’ 

কলেজশিক্ষক ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘যে টাকা বেতন পাই, তা দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে সব দ্রব্যের মূল্য ঊর্ধ্বগতি। বেঁচে থাকার জন্য যেটুকু না কিনলেই নয়, সেগুলো কিনতে হচ্ছে। বাঁচতে তো হবে।’ 
 
সবজি বিক্রেতা আপেল মিয়া বলেন, ‘সব জিনিসেরই দাম বেশি। সবজি তো আর আমরা আবাদ করি না। আমাদের এগুলো চড়া দামে কিনে আনতে হয়। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’ 

গাইবান্ধা শহরের চারটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি মোটা চাল ৪০-৫০ টাকা, আটাশ ৫৫, কাটারিভোগ ৬০, মিনিকেট ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি দেশি মুরগি কেজিপ্রতি ৬০০ থেকে ৬২০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩৪০, ব্রয়লার ১৮০, লেয়ার ২৯০, গরুর মাংস ৬৮০ এবং খাসি ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা, পেঁয়াজ ১৪০ টাকা, মসুর ডাল ১৬০ টাকা, ফুলকপি ৬০, মুলা ৪০, বেগুন ৬০ টাকা। এ ছাড়া আলু প্রতি কেজি ৫৫ টাকা, শসা ৪০ টাকা, ঢেঁড়শ ৫০, শিম ১২০, গাজর ১৪০ টাকা। প্রতিটি লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

গাইবান্ধা পুরাতন বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আজাদ মিয়া বলেন, শুধু আলু, আদা, রসুন-পেঁয়াজের দামই বাড়েনি, সব জিনিসেরই দাম বেড়েছে। সবজি কাঁচা পণ্য হওয়ায় এটা কখনো বাড়ে আবার কখনো কমে। তবে এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম অনেক বেশি। 

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের গাইবান্ধা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়মিত বাজার তদারকি করা হচ্ছে। কোনো অবস্থাতেই পণ্যের দাম বেশি নেওয়ার সুযোগ নেই। তারপরও যাঁরা অনিয়ম করছেন, তাঁদের জরিমানা করা হচ্ছে। ভোক্তা স্বার্থ রক্ষায় এবং বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত এ ধরনের অভিযান চালানো হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত