Ajker Patrika

শ্বশুর-দেবরকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন পাট কর্মকর্তা

বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
শ্বশুর-দেবরকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন পাট কর্মকর্তা

অন্য উপজেলা থেকে ভ্যান ভাড়া করে শ্বশুর, দেবর, চাচাতো ভাইসহ আত্মীয়স্বজনদের এনে প্রশিক্ষণার্থী বানিয়ে ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা ঝরনা আক্তারের বিরুদ্ধে। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে এসে এসব অনিয়মের সত্যতাও পেয়েছেন উপজেলা প্রশাসন ও জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা। 

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে এ ঘটনা। ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। 

জানা গেছে, উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ শীর্ষ প্রকল্পের আওতায় বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে দিনব্যাপী ১৫০ জন পাট ও বীজচাষির প্রশিক্ষণের আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন ও বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। ১৫০ জন প্রশিক্ষণার্থী থাকার কথা থাকলেও উপস্থিত ছিলেন ৯২ জন। এর মধ্যে প্রায় ৬০ জন পাশের পীরগঞ্জ ও রাণীশংকৈল উপজেলার বাসিন্দা। অথচ প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী প্রশিক্ষণার্থীদের নিজ উপজেলার বাসিন্দা হতে হবে। 

বিকেলে খবর পেয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা চাষিদের পরিচয় জানার চেষ্টা করলে প্রশিক্ষণকেন্দ্র ছেড়ে ভ্যানে চড়ে চলে যান প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া অন্য উপজেলার চাষিরা। ফাঁকা হয়ে যায় অডিটরিয়াম। ঘটনা জানাজানি হলে শুরু হয় গন্ডগোল। পরে বিষয়টি অবগত করা হয় উপজেলা প্রশাসন এবং জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তাকে। 

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা বড়বাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকার পরিচয় দিয়ে প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছিলেন পীরগঞ্জের কয়েকজন চাষি। খবর পেয়ে এসে দেখি সবাই অপরিচিত। জিজ্ঞাসা করলে জানা যায়, তাঁদের পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা ঝরনা আক্তার ভ্যান ভাড়া করে নিয়ে এসেছেন। সবাই কর্মকর্তার আত্মীয়স্বজন হবেন। এর মধ্যে তাঁর শ্বশুরও ছিলেন। দ্রুত চলে গেছেন আমাকে দেখে।’ 

পাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী রুবেল বলেন, ‘আমাকে ফোন দিয়ে পাট কর্মকর্তা দুজন চাষিকে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠাতে বলেছিলেন। ১৫০ জন প্রশিক্ষণার্থী হলে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে কমপক্ষে ১৫ জনের সুযোগ পাওয়ার কথা। শুনেছি আমার ওই দুজন চাষি ফেরত এসেছেন, প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারেননি, অনারিয়ামও পাননি।’ 

বিকেল ৪টার পর উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে গিয়ে দেখা গেছে, এক পাশে বসে রয়েছেন পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা ঝরনা আক্তার। অন্য পাশে ঠাকুরগাঁও জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা ওয়াসিম কুমার মালাকার মাস্টাররোল দেখে চাষিদের ৫০০ টাকা অনারিয়াম দিচ্ছেন। কয়েকজনকে দেওয়ার পর বন্ধ হয়ে যায় দেওয়া। 

আত্মীয়স্বজনদের এনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বালিয়াডাঙ্গী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা ঝরনা আক্তার বলেন, ‘তাঁরা কীভাবে এসেছেন আমি জানি না। বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাই না।’ এরপর সেখান থেকে উঠে চলে যান তিনি। 

অন্য পাশে বসে থাকা ঠাকুরগাঁও জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা ওয়াসিম কুমার মালাকারও হাতে টাকা এবং কৃষকদের তালিকা নিয়ে উঠে চলে যান উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনের প্রশাসনিক কর্মকর্তার কক্ষে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত