Ajker Patrika

পিংকিকে বাবার সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি পুলিশ

হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
পিংকিকে বাবার সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি পুলিশ

‘বাবাকে পুলিশ নিয়ে যাওয়ার আগে আমার কাছে এক গ্লাস জল চায়। বাবা সেই জল খেয়ে পুলিশের সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর আর কোনো কথা হয়নি। এমনকি থানায় একবারও বাবার সাথে দেখা করতে দেয়নি পুলিশ।-এ কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়া হিমাংশু বর্মণের বড় মেয়ে পিংকি। 

আজ রোববার লালমনিরহাট হাতীবান্ধা উপজেলার নিহত হিমাংশু ও সবিতা রানীর মেয়ে এসব কথা বলে। 

এর আগে গতকাল শনিবার রাতে ময়নাতদন্ত শেষে হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের পূর্ব কাদমা মালদাহ পাড়া এলাকার শ্মশানে একই চিতায় দাহ করা হয় স্বামী হিমাংশু ও ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সবিতা রানীকে। 

পিংকির সঙ্গে কথা শেষে কথা হয় পিংকির ছোট বোন প্রিয়সির সঙ্গে। ঘটনার আগের দিন বৃহস্পতিবার রাতে সর্বশেষ মায়ের সঙ্গে কথা হয় তাঁর। তার মা তাকে বলেন, ‘মা এবার তোমাদের ভাই হবে, তোর আপু পিংকি তুই প্রিয়সি আর তোর ভাইয়ের নাম রাখা হবে প্রশান্ত! ভাতের চাল বাঁচিয়ে বিক্রি করে কিছু টাকা জমিয়েছি। তাই দিয়ে ধুমধাম করে তোর ভাইয়ের অন্ন প্রাসন করা হবে।’ -এই বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রিয়সি। 

এদিকে হাতীবান্ধা থানায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ-সার্কেল) মারুফা জাহানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করেছে জেলা পুলিশ। সেই তদন্ত টিমের অন্য সদস্যরা হলেন, পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ওসি আমিনুল ইসলাম ও কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম। তদন্ত কমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। 

এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, থানায় মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যেও কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সকালে হিমাংশুর স্ত্রী সাবিত্রী রানী ওরফে সবিতা রানীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাতীবান্ধা থানার ওসি এরশাদুল আলমসহ একদল পুলিশ সেখানে উপস্থিত হন। একপর্যায়ে ওই মরদেহসহ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হিমাংশু ও তাঁর বড় মেয়ে পিংকিকে (১৩) থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। সেই দিন বিকেলে হাতীবান্ধা থানায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু বরণ করেন হিমাংশু। পুলিশের দাবি আত্মহত্যা করেছেন হিমাংশু। কিন্তু এলাকাবাসী ও পরিবার দাবি উৎকোচের এক লাখ টাকা না পেয়ে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে হিমাংশুকে। 

হাতীবান্ধা থানার ওসি এরশাদুল আলম বলেন, ‘প্রথমের দিকে তারা এক সাথেই ছিল। পরে আলাদা আলাদা রাখা হলেও তারা দেখা করতেও চায়নি, আর থানা থেকেও কেউ নিষেধও করেনি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাবিতে জানাজা হলো না সাবেক ভিসি আরেফিন সিদ্দিকের, তীব্র সমালোচনার মুখে প্রশাসন

প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় সাবেক শিবির নেতা আটক

মধ্যরাতে মহাসড়কে ৩৭ লাখ টাকাসহ এলজিইডি প্রকৌশলী আটক

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ অমান্য করে রাষ্ট্রদূতের ফেসবুকে পোস্ট, পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত

প্রত্যাহার হওয়া ওসির খোঁজে থানায় ভিড় পাওনাদারদের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত