Ajker Patrika

নেতা হতে চেয়েছিলেন নিহাল

লবীব আহমদ, সিলেট
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭: ২৪
নেতা হতে চেয়েছিলেন নিহাল

দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের রাজনৈতিক জীবনে পদ পাওয়া হলো না সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নিহাল পালের। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তার অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। ইতিবাচক ভাবমূর্তির কারণে নিহাল আসন্ন কমিটিতে নেতৃস্থানীয় পদের যোগ্য ছিলেন বলে জানিয়েছেন জেলা-উপজেলার নেতারা। 

গত শুক্রবার রাতে সিলেটের জৈন্তাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন নিহালসহ চারজন ছাত্রলীগ কর্মী। অপর তিনজন হলেন—জুবায়ের আহসান (২৬), মেহেদী হোসেন তমাল (২৪), সুমন আহমদ (২৫)। তারা সবাই বন্ধু ছিলেন এবং তারা সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও টিলাগড় গ্রুপের নাজমুল ইসলাম বলয়ের কর্মী ছিলেন। নিহাল সিলেট সরকারি কলেজে স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

সিলেট জেলা ও জৈন্তাপুর উপজেলায় ছাত্রলীগ করতেন নিহাল পাল। জৈন্তাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন তিনি। অন্যদিকে প্রায় ৭ বছর থেকে জৈন্তাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় ছিলেন পদ-পদবি শূন্য। সর্বশেষ ২০২১ সালের ১২ অক্টোবর নাজমুল ইসলামকে সভাপতি ও রাহেল সিরাজকে সাধারণ সম্পাদক করে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠিত হয়। এরপরও দেওয়া হয়নি উপজেলার কমিটি। 

আগামী কিছুদিনের মধ্যে কমিটি দেওয়ার কথা ছিল এবং নিহালকে নেতৃস্থানীয় পদের দায়িত্বের দাবিদার ছিলেন বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্বাচনের কারণে কমিটি দেওয়া হয়নি। ১০-১২ দিনের মধ্যেই জৈন্তাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি হওয়ার কথা ছিল। নিহাল পালের নেতৃস্থানীয় পদে আসার কথা ছিল। অন্যদের মধ্যে তমাল ও সুমনেরও পদ পাওয়ার কথা ছিল। তারা সবাই টিলাগড় গ্রুপের ছিলেন। তাঁদের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।’

জৈন্তাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী মনসুর আহমদের সঙ্গে কথা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২০১৭ সালের পর থেকে জৈন্তাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি নেই। নিহালসহ আমরা দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। কমিটি হলে আমাদের কর্মকাণ্ডের কারণে একসঙ্গে একটা রাজনৈতিক পরিচয় পেতাম।’ 

পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা বলছে, নিহত চারজনই একসঙ্গে চলাফেরা করতেন। তাঁরা ভালো বন্ধু ছিলেন। কিছুদিন আগে জুবায়ের আহসান একটি প্রাইভেটকার কিনেছিলেন। সেটি নিয়েই তাঁরা শুক্রবার রাতে জৈন্তাপুর থেকে জাফলংয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। আর গাড়িটি জুবায়েরই চালাচ্ছিলেন। সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের বাংলাবাজার এলাকায় পৌঁছালে প্রাইভেট কারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের খালে পড়ে উল্টে যায়। এ সময় প্রাইভেট কারের দরজা খুলে কেউ বের হতে পারেননি। প্রথমে স্থানীয় লোকজন প্রাইভেট কার থেকে তাঁদের উদ্ধার তৎপরতা চালান। পরে উদ্ধারকাজে যোগ দেন ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সদস্যরা। এরপর হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। 

শনিবার রাতে তাদের মৃত্যু সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সর্বমহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুকুজ্জামান রানা ফেসবুকে লিখেন, ‍ ‘এত অল্প বয়সে নিহালের যে সাংগঠনিক যোগ্যতা, দক্ষতা আর মানুষের সাথে আন্তরিকতা ছিল আমি আমার এই বয়সে আর কাউকেই দেখিনি! বিভিন্ন কারণে, বিভিন্নভাবে তার সাথে আমার প্রায়সময়ই দেখা-সাক্ষাৎ হতো। যতবার তাকে দেখেছি, সব সময়ই সে প্রাণবন্ত, উজ্জ্বল, মায়াবী মুখে হাসি লেগেই থাকত। কীভাবে বড়দের ইজ্জত-সম্মান আর ছোটদের স্নেহ মায়া করতে হয় তার কাছে শিক্ষণীয় ছিল। সে সব সময়ই পরোপকারী, দক্ষ এবং সংগঠনের জন্য ছিল অত্যন্ত নিবেদিত। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং জেলা ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের আমি অনুরোধ করব নেহাল-কে জৈন্তাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক করে তাকে সম্মানিত করুন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত