Ajker Patrika

লাভ দেখিয়ে পুঁজিবাজারে এসে এখন লোকসানে এনার্জিপ্যাক

আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১: ৩৮
লাভ দেখিয়ে পুঁজিবাজারে এসে এখন লোকসানে এনার্জিপ্যাক

আকর্ষণীয় ব্যবসা দেখিয়ে প্রিমিয়াম প্রাইসে, অর্থাৎ ফেসভ্যালু বা অভিহিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন পিএলসি। পুঁজিবাজারে আসার আগে কোম্পানিটির মুনাফা ছিল ৪৭ কোটি টাকা। অথচ দুই বছর না পেরোতেই মুনাফা থেকে লোকসান দাঁড়িয়েছে ৪৫ কোটি টাকা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আর্থিক প্রতিবেদন স্ফীত করে দেখিয়ে পুঁজিবাজারে আসার প্রবণতা নতুন নয়। অনেক কোম্পানি এসব চাতুরী করেছে। অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে পুঁজিবাজারে এলেও পরবর্তী সময়ে এসব কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের ঠকতে হয়েছে।

এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারে আসার পরই কেন লোকসানে পড়ছে, তা খতিয়ে দেখতে হবে। যদি আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে কারসাজির প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। তাহলে এই প্রবণতা কমে আসবে।

পুঁজিবাজারে আসার আগে প্রসপেক্টাসে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য এনার্জিপ্যাকের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) উল্লেখ করা হয় ৩ টাকা ১৩ পয়সা, আর নিট মুনাফা দেখানো হয়েছিল ৪৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।

এমন আয়ের পরিপ্রেক্ষিতে ফেসভ্যালু ১০ টাকার সঙ্গে দাম বা প্রিমিয়াম প্রাইসে পুঁজিবাজারে আসার অনুমোদন পায় এনার্জিপ্যাক পাওয়ার। যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রতিটি শেয়ার ৩৫ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রতিটি ৩১ টাকায় ইস্যু করে কোম্পানিটি।

ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করেছিল এনার্জিপ্যাক। অথচ ব্যবসায় সমৃদ্ধি আসা তো দূরে থাক, উল্টো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পরই নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হতে থাকে।

পুঁজিবাজারে প্রবেশের প্রথম বছরেই ব্যবসায় বড় পতন হয় এনার্জিপ্যাক পাওয়ারের। ২০২০-২১ অর্থবছরে ইপিএস নেমে আসে ২ টাকা ৩ পয়সায়। তার পরের বছর, অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরে তা আরও নিচে নেমে দাঁড়ায় ৩৮ পয়সায়। আর সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ২ টাকা ৩৬ পয়সা হিসাবে ৪৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকার নিট লোকসান হয়েছে। অর্থাৎ পুঁজিবাজার থেকে টাকা উত্তোলনের পর ব্যবসায় পতন ১৯৬ শতাংশ।

শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ১৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে এনার্জিপ্যাক পাওয়ার। এই বিনিয়োগের বিপরীতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের ব্যবসায় শুধু সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা ৫ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি ৫০ পয়সা লভ্যাংশ পাবেন।

বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের বিপরীতে এই রিটার্নের পরিমাণ খুবই নগণ্য। ৩৫ টাকার বিপরীতে যা ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং ৩১ টাকার বিপরীতে ১ দশমিক ৬১ শতাংশ। অথচ যেকোনো ব্যাংকে স্থায়ী আমানত বা এফডিআর করলে এর থেকে অনেক বেশি মুনাফা পাওয়া সম্ভব।

তবে আগের অর্থবছরের ব্যবসায় ১০ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি ১ টাকা নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল কোম্পানিটি।

এ বিষয়ে কথা বলতে কোম্পানির সচিব আলাউদ্দিন শিবলীর মোবাইল নম্বরে বারবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

ইস্যু ম্যানেজার লঙ্কবাংলা ইনভেস্টমেন্টের মাধ্যমে বুক বিল্ডিংয়ে পুঁজিবাজারে আসে এনার্জিপ্যাক পাওয়ার। গত ২৩ জুলাই থেকে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৩৪ টাকা ৫০ পয়সায় রয়েছে, যা শেয়ারটির ফ্লোর প্রাইস। অন্যথায় অনেক আগেই এর দর তলানিতে চলে আসতে পারত বলে মনে করেন পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত