ট্রাম্প সংশ্লিষ্ট ক্রিপ্টো কারেন্সি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হামাস–হিজবুল্লাহর সম্পর্ক

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭: ৩১
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বিলিয়নিয়ার স্টিভ উইটকফ। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূত হতে যাচ্ছে বিলিয়নিয়ার স্টিভ উইটকফ। তাঁরা সম্প্রতি একটি ক্রিপ্টো কারেন্সি উদ্যোগ উন্মোচন করেছেন। এই উদ্যোগের সঙ্গে গাজার স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস এবং লেবাননের ইরানপন্থী দল হিজবুল্লাহ সংশ্লিষ্টতা আছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই সংগঠনগুলো যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়ার্ল্ড লিবার্টি ফিন্যান্সিয়াল ইনকরপোরেটেড নামের এই কোম্পানিটি উইটকফ পরিবার গত সেপ্টেম্বরে প্রতিষ্ঠা করে। কোম্পানির সঙ্গে চীনা উদ্যোক্তা জাস্টিন সানের প্রতিষ্ঠিত ক্রিপ্টো প্ল্যাটফর্ম ট্রন–এর অংশীদারত্ব রয়েছে। এর আগেও ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের চিহ্নিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে লেনদেনের অভিযোগে উঠেছিল ট্রনের বিরুদ্ধে।

ইসরায়েলের জাতীয় সন্ত্রাসবিরোধী অর্থায়ন ব্যুরো (এনবিটিসিএফ) ২০২১ সাল থেকে ট্রন ওয়ালেটের মাধ্যমে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর অর্থ লেনদেনের প্রমাণ পাওয়ার দাবি করে আসছে। ২০২১ সাল থেকে ১৮৬টি ট্রন ওয়ালেট ফ্রিজ করা হয়। এর মধ্যে ৮৪টি হামাস বা তার মিত্র গোষ্ঠী এবং ৩৯টি হিজবুল্লাহর ও ৬৩টি অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী বা মানি চেঞ্জারদের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে উল্লেখ করে ইসরায়েল।

তবে ট্রন জানিয়েছে, তাদের প্ল্যাটফর্ম ‘আইনি এবং অবৈধ উভয় ব্যবহারকারী আকর্ষণ করেছে’ এবং তারা অবৈধ কার্যকলাপ রোধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে, এই ব্যবস্থাগুলো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে অর্থ লেনদেন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছে কিনা, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা সন্দিহান।

ট্রন সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড লিবার্টিতে ৩ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। ট্রনের প্রতিষ্ঠাতা জাস্টিন সান এই উদ্যোগের উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দিয়েছেন। এই বিনিয়োগ এবং ওয়ার্ল্ড লিবার্টির সঙ্গে ট্রনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

ওয়ার্ল্ড লিবার্টির সঙ্গে ট্রাম্পের অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং উইটকফকে মধ্যপ্রাচ্য দূত মনোনীত করা নিয়ে নৈতিক দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উইটকফ যদি কূটনৈতিক পদে থাকাকালীন নিজের ব্যবসায়িক স্বার্থ বজায় রাখেন, তবে তা নীতিগত দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করতে পারে। একইভাবে, ট্রাম্পের ব্যবসায়িক স্বার্থ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, কারণ ওয়ার্ল্ড লিবার্টি থেকে তিনি আয়ের অংশ পাবেন।

এদিকে ক্রিপ্টো কারেন্সি শিল্পে নিয়ন্ত্রণ আরোপের বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন যে তিনি ক্রিপ্টো কারেন্সি বান্ধব একজন নতুন এসইসি (সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন) চেয়ারম্যান নিয়োগ করবেন। এরই মধ্যে, ক্রিপ্টো–সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতিমালার সম্ভাব্য পরিবর্তন নিয়ে ট্রাম্প পরিবারের ব্যবসায়িক স্বার্থ লাভবান হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন।

উইটকফের নিয়োগ এবং তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদারত্বগুলো কীভাবে তাঁর কূটনৈতিক দায়িত্বকে প্রভাবিত করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন একটি পদে থাকা কোনো ব্যক্তির ব্যবসায়িক স্বার্থ বজায় রাখা উচিত নয়, যা তাঁর সরকারি দায়িত্বের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি করতে পারে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসরায়েলের ‘হৃৎপিণ্ড’ তেল আবিবে হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

সাগরে নিম্নচাপ, কত দিন বৃষ্টি হতে পারে জানাল আবহাওয়া দপ্তর

শেখ মুজিব ও জিয়াউর রহমান যার যার স্থানে শ্রেষ্ঠ: গয়েশ্বর

র‌্যাব বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি: নূর খান লিটন

হাসিনার আমলে রাশিয়ার সঙ্গে ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র চুক্তি, জড়াল টিউলিপের নামও

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত