৫০ শতাংশ শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার: জরিপ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২২: ১১

রাজধানীতে গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের প্রায় ৫০ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়। আর ৩১ দশমিক ৪৫ শতাংশ গৃহকর্মী অত্যধিক কাজের চাপে থাকে। 

অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি) পরিচালিত ‘সিচুয়েশন অব চাইল্ড ডোমেস্টিক ওয়ার্কার্স ইন ঢাকা সিটি’ শীর্ষক জরিপ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। 

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। 

জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন এএসডির প্রকল্প ব্যবস্থাপক ইউ কে এম ফারহানা সুলতানা। তিনি জানান, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১২টি থানা এলাকায় এ জরিপ পরিচালনা করা হয়। ৩৫২ জন গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশু এই জরিপে অংশ নেয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্যাতনের শিকার শিশুদের মধ্যে ১৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ শারীরিক আঘাতের শিকার। মারধরের শিকার ৮ দশমিক ২৩ শতাংশ, বকাঝকার শিকার ২০ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং যৌন নির্যাতনের শিকার ১ দশমিক ৭ শতাংশ। 

এএসডির নির্বাহী কমিটির সভাপতি ড. আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. তরিকুল আলম, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপ–পরিচালক ও শিশু অধিকার কমিটির সদস্য সচিব এম. রবিউল ইসলাম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (স্বাস্থ্য) ডা. বিশ্বজিৎ রায়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মোছা. সালমা আক্তার, শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক এস এম এনামুল হক, এএসডির নির্বাহী পরিচালক এম এ করিম, স্ক্যান এর সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল প্রমুখ। 

আলোচনায় অংশ নিয়ে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. তরিকুল আলম বলেন, গৃহকর্মী শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। অনেক আগে থেকে শিশু শ্রমিক নির্যাতন চলে আসছে। তবে এটা সত্য, আগের তুলনায় শিশু গৃহকর্মী নির্যাতন অনেকাংশে কমে আসছে। আমরা চাই, এটা শতভাগ বন্ধ হোক। 

শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ যে ৪৩টি কাজ চিহ্নিত করা আছে, তার সঙ্গে গৃহকর্মকেও অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি। 

মানবাধিকার কমিশনের এম. রবিউল ইসলাম বলেন, গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের সুরক্ষায় মানবাধিকার সব সময় সক্রিয় আছে। শিশু নির্যাতনের ঘটনা বন্ধে সরকার ও প্রশাসনের সঙ্গে কাজ চলছে। নীতিমালা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের পাশাপাশি আইন প্রণয়নে বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে আইনের খসড়া প্রণয়ন হয়েছে। দ্রুতই তা চূড়ান্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। 

জরিপ প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়, গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের সুরক্ষায় আইন ও নীতিমালা সংশোধনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে। গৃহকাজকে শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিদ্যমান নীতিমালা ও আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির করতে হবে। নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আরও সক্রিয় হতে হবে। নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার শিশুদের স্বাস্থ্য ও আইনি সেবা প্রদান কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। 

অনুষ্ঠানে আলোচকেরা বলেন, বিগত সরকার নীতিমালা প্রণয়ন করলেও সেই নীতিমালা গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের (গৃহকর্মী) সুরক্ষা দিতে পারছে না। তাঁরা দ্রুত গৃহকর্মী সুরক্ষা আইন পাসের তাগিদ দেন। একই সঙ্গে গৃহকর্মকে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত