Ajker Patrika

দাউদকান্দিতে স্থানীয়দের হামলায় চাকরিচ্যুত পুলিশ কনস্টেবল নিহত

দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
দাউদকান্দিতে স্থানীয়দের হামলায় চাকরিচ্যুত পুলিশ কনস্টেবল নিহত

কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের বাশরা গ্রামে স্থানীয়দের হামলায় রাহেজুল আমিন বাঁধন (৩০) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। 

আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার বাশরা গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আরও ৫ জন আহত হয়। আহতদের গৌরীপুর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা পাঠানো হয়েছে। 

নিহত রাহেজুল আমিন বাঁধন বাশরা গ্রামের আলী আহমেদের ছেলে। তিনি নোয়াখালী জেলা পুলিশের বরখাস্তকৃত কনস্টেবল। 

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, সকালে বাশরা গ্রামের বাড্ডাবাড়ীতে হামলা করে কিশোর গ্যাং বাঁধন বাহিনী। হামলায় ওই বাড়ির নুরু মিয়ার ছেলে হাছান আহত হন। 

এই হামলার জের ধরে বেলা সাড়ে ১১টায় এলাকার লোকজন বাঁধনের বাড়িতে হামলা করে। হামলাকারীরা তাঁর ঘরের দরজা জানালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। রামদা লাঠিসোঁটা দেখে বাঁধন বাঁচার জন্য পাশের রফিকুল ইসলামের বাড়ির একটি কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। হামলাকারীরা দরজা ভেঙে বাঁধনকে টেনেহিঁচড়ে বের করে ভবনের প্রধান ফটকের সামনে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে ফেলে রেখে যায়। 

সংবাদ পেয়ে গিয়ে পুলিশ আহত বাঁধন এবং তাঁর মা ও ভাই সুমনকে উদ্ধার করে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেওয়ার পর বাঁধন মারা যান। 

বাঁধনের ভাবি আয়েশা আক্তার বলেন, ‘দক্ষিণ পাড়ার হাসেম, রুবেল ও মানিকসহ ২০ / ২৫ জনের সন্ত্রাস বাহিনী রামদা, হকিস্টিক লোহার পাইপ নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা করে। তাদের ভয়ে আমার দেবর পাশের রফিক কাকার দালানে আশ্রয় নেয়। সেখানে গিয়েও তাদের হাত থেকে বাঁচতে পারেনি। এ সময় সন্ত্রাসীরা আমার ঘরে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।’ 

ভবনের মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাঁধন আমার বিল্ডিংয়ে আশ্রয় নিলে হামলাকারীরা রুমের দরজা জানালা ভেঙে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং তাকে বের করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে বিল্ডিংয়ের সামনে ফেলে রাখে।’ 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় জানান, বাঁধনের অত্যাচারে এলাকার সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ ছিল। কোনো অনুষ্ঠান করলেই তাঁকে চাঁদা দিতে হতো। তাঁর অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি করা হতো। এ নিয়ে ২০২১ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পুটিয়া এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলও হয়। 

গৌরীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ-পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান আসাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থল থেকে বাঁধনসহ তাঁর পরিবারের আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য দ্রুত গৌরীপুর হাসপাতালে পাঠাই। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হলে সেখানে বাঁধন মারা যান। বাঁধন পুলিশের কনস্টেবল পদে নোয়াখালী জেলা পুলিশে কর্মরত অবস্থায় বিভিন্ন অভিযোগের প্রায় দুই বছর আগে বরখাস্ত হন। তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ সাতটি মামলা রয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। পাশাপাশি এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত