নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে সাতকানিয়া উপজেলার চরতী ইউনিয়নে কৃষকদের জমিতে বালু রাখার জন্য পাইপ স্থাপন করা হচ্ছিল। কৃষকেরা এ কাজে বাধা দেন। এতে ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার সংসদ সদস্য আবু রেজা মো. নেজাম উদ্দিন নদভীর শ্যালক মো. রুহুল্লাহ চৌধুরীসহ কয়েকজনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় কৃষকদের। সংঘর্ষে অন্তত সাতজন গুলিবিদ্ধ এবং বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আব্দুল মালেক সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার এস এস ড্রেজার অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড উত্তর চরতীর তুলাতুলি কেশুয়ারচর সেনেরচর ঘাটসংলগ্ন সাঙ্গু নদীতে শ্রমিক দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছিল। উত্তোলন করা বালু রুহুল্লাহর সহযোগিতায় কৃষকের জমিতে রাখা নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়। কৃষকেরা ফসল নষ্ট হয়ে যাবে এ জন্য জমিতে বালু রাখতে নিষেধ করেন। কিন্তু রুহুল্লার সহযোগিতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কৃষকের জমির ওপর বালু রাখার চেষ্টা করে।
এজাহারে মামলার বাদী রুহুল্লাহকে প্রধান আসামি করে মোট ১৬ জনের নাম উল্লেখ করেন। কিন্তু পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র থেকে বাদ যায় এমপির শ্যালকসহ ৯ জনের নাম। বাকি ছয়জনের বিরুদ্ধে দেওয়া হয় অভিযোগপত্র।
অব্যাহতি দিতে আবেদন করা ৯ জন হলেন মো. রুহুল্লাহ চৌধুরী (৪২), খালিদ মাহমুদ চৌধুরী মুন্না (২৮), দেলোয়ার হোসেন ওরফে ডাকাত দেলু (৩৫), আজিজুর রহমান ওরফে সাদেক (৪৬), কায়ছার উদ্দিন (২১), মো. শামাউন চৌধুরী (৫৮), সৈয়দ নূর (৫০), মো. সেলিম (৩৭) ও মো. জাহেদুল ইসলাম (৩০)।
যে ছয়জনকে অভিযোগপত্রে আসামি করা হয় তাঁরা হলেন মাঈনুদ্দিন হাসান (২২), মোহাম্মদ মোহায়মেনুল ইসলাম চৌধুরী ফাহিম (২৪), মো. হাফিজুর রহমান (৩৫), মো. শাহিন আলম (২৩), মো. জয়নুল ইসলাম (৩১) ও মো. জহিরুল ইসলাম (২৩)।
সেদিনের ঘটনায় গুলিতে একজনের একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া কারও হাতে, কারও মাথায় এবং বুকে গুলি লাগে। মোট সাতজন গুলিবিদ্ধ হন। মামলার এজাহারেও এসব কথা বলা হয়। যদিও ঘটনায় ব্যবহৃত কোনো অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোনো ঘটনায় যখন আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়, তখন বিশেষ আইন তথা অস্ত্র আইনে মামলা নিতে হয়। কিন্তু এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা নেওয়া হয় সাধারণ দণ্ডবিধি আইনে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তাও উল্লেখ করেছেন এ ঘটনায় অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে। চিকিৎসকেরা সনদে উল্লেখ করেছেন, আহতরা অস্ত্রের গুলির দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। এত কিছুর পরও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দিয়েছেন দণ্ডবিধি আইনে।
পুলিশের অভিযোগপত্রে আসামিদের নাম বাদ দেওয়ার কারণও স্পষ্ট নয়। শুধু ৯ আসামিকে মামলার দায় থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে অনেকটা গোপনে আদালতে জমা দেওয়া হয় অভিযোগপত্র।
পুলিশ সূত্র জানায়, মামলা রুজুর আগে পুলিশ ঘটনাটি প্রাথমিক তদন্ত করে। সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা থাকায় পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে। এরপর তৎকালীন সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকারিয়া রহমান জিকু রুহুল্লাহকে গ্রেপ্তারে একাধিক অভিযান পরিচালনা করেন। ওই সময় রুহুল্লাহ পলাতক ছিলেন। শ্যালককে গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে নদভী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকারিয়া রহমান জিকুকে পুলিশ সদর দপ্তরে তদবির করে বদলি করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এরপর রুহুল্লাহকে গ্রেপ্তারে আর অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যায়নি। পলাতক থাকা অবস্থায় তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সবশেষ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাতকানিয়া থানার এসআই মো. দুলাল হোসেন রুহুল্লাহকে বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন। গত বছরের ১ ডিসেম্বর অভিযোগপত্রটি আদালতে জমা দেওয়া হয়। আলোচিত এ ঘটনায় এতগুলো আসামিকে বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র দেওয়া হলেও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নীরব ছিলেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, এই মামলার জখমি সনদ প্রদান করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. জামশেদ গিয়াস উদ্দিন। তিনি উল্লেখ করেন, আসামিদের গুলিতে হাফেজ আহমেদ ওরফে আব্দুল হাফেজের বুকে ও মুখে, মোহাম্মদ কায়সারের বুকে ও মুখে, আবু তাহেরের মুখে, ঘাড়ে, মাথায়, বাঁ হাতে, আব্দুল মালেকের মাথা, মুখে ও ঘাড়ে গুলি লাগে।
মামলার বাদী আবদুল মালেক ক্ষোভ প্রকাশ করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ওই দিন মারা যেতে পারতাম। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাই। কেউ কেউ পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। এমন একটি মামলায় আমি বাদী। কিন্তু মামলা হওয়ার পর থেকে একটিবারের জন্যও পুলিশের কেউ আমাকে ডাকেনি। চার্জশিট দেওয়ার বিষয়েও জানানো হয়নি। আমি এই চার্জশিটের বিষয়ে নারাজি দেব। আসামিদের উপযুক্ত বিচার চাই।’
সাতকানিয়া থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. দুলাল হোসেন বলেন, ‘কেউ সাক্ষী না দেওয়ায় আসামিদের বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। মামলার বাদীর সঙ্গে অসংখ্যবার কথা হয়েছে। মামলার সব আপডেট বাদী ও সাক্ষীদের জানিয়েছেন।’
চরতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই সময় ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত ছিলাম না। রাজনৈতিক কারণে আমাকে জড়ানো হয়েছে। হয়তো তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করে সম্পৃক্ততা পাননি, তাই মামলা থেকে বাদ দিয়েছেন।’
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আকতার কবির চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনা থেকে বোঝা যাচ্ছে, এখানে মামলায় প্রভাব বিস্তার করা হয়েছে। প্রভাবশালী হওয়ায় প্রধান অভিযুক্তকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি অন্যায়।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রুহুল্লাহ চৌধুরী জামায়াতের সাবেক কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য মাওলানা মমিনুল হক চৌধুরীর ছেলে। ছাত্রজীবনে রুহুল্লাহ শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁর বোন ও নদভীর স্ত্রী জামায়াতের ছাত্রীদের সংগঠনে জড়িত ছিলেন। নদভী নিজেও জামায়াতের লোকজনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে শিক্ষকতা করতেন। তৎকালীন আমির গোলাম আযমসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল নদভীর। একপর্যায়ে জামায়াতের সঙ্গে নদভীর মনোমালিন্য হয়। এরপর ২০১৪ সালে নদভী আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান।
এমপি হওয়ার পর থেকে নদভী তাঁর পরিবার ও আত্মীয়স্বজনকে জামায়াত থেকে আওয়ামী লীগ বানানোর মিশনে নামেন। স্ত্রীকে দিয়ে এ মিশন শুরু হয়। একে একে তাঁর নিকটাত্মীয়দের জামায়াত থেকে আওয়ামী লীগ বানান তিনি। সবশেষ ২০২২ সালে চরতী ইউনিয়ন থেকে নৌকা প্রতীক পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন রুহুল্লাহ চৌধুরী।
এসব বিষয়ে জানতে এমপি নদভীর মুঠোফোনে পাঁচ দিন চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পরে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী মো. ইরফান উদ্দিনের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে সাতকানিয়া উপজেলার চরতী ইউনিয়নে কৃষকদের জমিতে বালু রাখার জন্য পাইপ স্থাপন করা হচ্ছিল। কৃষকেরা এ কাজে বাধা দেন। এতে ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার সংসদ সদস্য আবু রেজা মো. নেজাম উদ্দিন নদভীর শ্যালক মো. রুহুল্লাহ চৌধুরীসহ কয়েকজনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় কৃষকদের। সংঘর্ষে অন্তত সাতজন গুলিবিদ্ধ এবং বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আব্দুল মালেক সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার এস এস ড্রেজার অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড উত্তর চরতীর তুলাতুলি কেশুয়ারচর সেনেরচর ঘাটসংলগ্ন সাঙ্গু নদীতে শ্রমিক দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছিল। উত্তোলন করা বালু রুহুল্লাহর সহযোগিতায় কৃষকের জমিতে রাখা নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়। কৃষকেরা ফসল নষ্ট হয়ে যাবে এ জন্য জমিতে বালু রাখতে নিষেধ করেন। কিন্তু রুহুল্লার সহযোগিতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কৃষকের জমির ওপর বালু রাখার চেষ্টা করে।
এজাহারে মামলার বাদী রুহুল্লাহকে প্রধান আসামি করে মোট ১৬ জনের নাম উল্লেখ করেন। কিন্তু পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র থেকে বাদ যায় এমপির শ্যালকসহ ৯ জনের নাম। বাকি ছয়জনের বিরুদ্ধে দেওয়া হয় অভিযোগপত্র।
অব্যাহতি দিতে আবেদন করা ৯ জন হলেন মো. রুহুল্লাহ চৌধুরী (৪২), খালিদ মাহমুদ চৌধুরী মুন্না (২৮), দেলোয়ার হোসেন ওরফে ডাকাত দেলু (৩৫), আজিজুর রহমান ওরফে সাদেক (৪৬), কায়ছার উদ্দিন (২১), মো. শামাউন চৌধুরী (৫৮), সৈয়দ নূর (৫০), মো. সেলিম (৩৭) ও মো. জাহেদুল ইসলাম (৩০)।
যে ছয়জনকে অভিযোগপত্রে আসামি করা হয় তাঁরা হলেন মাঈনুদ্দিন হাসান (২২), মোহাম্মদ মোহায়মেনুল ইসলাম চৌধুরী ফাহিম (২৪), মো. হাফিজুর রহমান (৩৫), মো. শাহিন আলম (২৩), মো. জয়নুল ইসলাম (৩১) ও মো. জহিরুল ইসলাম (২৩)।
সেদিনের ঘটনায় গুলিতে একজনের একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া কারও হাতে, কারও মাথায় এবং বুকে গুলি লাগে। মোট সাতজন গুলিবিদ্ধ হন। মামলার এজাহারেও এসব কথা বলা হয়। যদিও ঘটনায় ব্যবহৃত কোনো অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোনো ঘটনায় যখন আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়, তখন বিশেষ আইন তথা অস্ত্র আইনে মামলা নিতে হয়। কিন্তু এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা নেওয়া হয় সাধারণ দণ্ডবিধি আইনে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তাও উল্লেখ করেছেন এ ঘটনায় অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে। চিকিৎসকেরা সনদে উল্লেখ করেছেন, আহতরা অস্ত্রের গুলির দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। এত কিছুর পরও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দিয়েছেন দণ্ডবিধি আইনে।
পুলিশের অভিযোগপত্রে আসামিদের নাম বাদ দেওয়ার কারণও স্পষ্ট নয়। শুধু ৯ আসামিকে মামলার দায় থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে অনেকটা গোপনে আদালতে জমা দেওয়া হয় অভিযোগপত্র।
পুলিশ সূত্র জানায়, মামলা রুজুর আগে পুলিশ ঘটনাটি প্রাথমিক তদন্ত করে। সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা থাকায় পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে। এরপর তৎকালীন সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকারিয়া রহমান জিকু রুহুল্লাহকে গ্রেপ্তারে একাধিক অভিযান পরিচালনা করেন। ওই সময় রুহুল্লাহ পলাতক ছিলেন। শ্যালককে গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে নদভী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকারিয়া রহমান জিকুকে পুলিশ সদর দপ্তরে তদবির করে বদলি করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এরপর রুহুল্লাহকে গ্রেপ্তারে আর অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যায়নি। পলাতক থাকা অবস্থায় তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সবশেষ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাতকানিয়া থানার এসআই মো. দুলাল হোসেন রুহুল্লাহকে বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন। গত বছরের ১ ডিসেম্বর অভিযোগপত্রটি আদালতে জমা দেওয়া হয়। আলোচিত এ ঘটনায় এতগুলো আসামিকে বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র দেওয়া হলেও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নীরব ছিলেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, এই মামলার জখমি সনদ প্রদান করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. জামশেদ গিয়াস উদ্দিন। তিনি উল্লেখ করেন, আসামিদের গুলিতে হাফেজ আহমেদ ওরফে আব্দুল হাফেজের বুকে ও মুখে, মোহাম্মদ কায়সারের বুকে ও মুখে, আবু তাহেরের মুখে, ঘাড়ে, মাথায়, বাঁ হাতে, আব্দুল মালেকের মাথা, মুখে ও ঘাড়ে গুলি লাগে।
মামলার বাদী আবদুল মালেক ক্ষোভ প্রকাশ করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ওই দিন মারা যেতে পারতাম। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাই। কেউ কেউ পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। এমন একটি মামলায় আমি বাদী। কিন্তু মামলা হওয়ার পর থেকে একটিবারের জন্যও পুলিশের কেউ আমাকে ডাকেনি। চার্জশিট দেওয়ার বিষয়েও জানানো হয়নি। আমি এই চার্জশিটের বিষয়ে নারাজি দেব। আসামিদের উপযুক্ত বিচার চাই।’
সাতকানিয়া থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. দুলাল হোসেন বলেন, ‘কেউ সাক্ষী না দেওয়ায় আসামিদের বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। মামলার বাদীর সঙ্গে অসংখ্যবার কথা হয়েছে। মামলার সব আপডেট বাদী ও সাক্ষীদের জানিয়েছেন।’
চরতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই সময় ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত ছিলাম না। রাজনৈতিক কারণে আমাকে জড়ানো হয়েছে। হয়তো তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করে সম্পৃক্ততা পাননি, তাই মামলা থেকে বাদ দিয়েছেন।’
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আকতার কবির চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনা থেকে বোঝা যাচ্ছে, এখানে মামলায় প্রভাব বিস্তার করা হয়েছে। প্রভাবশালী হওয়ায় প্রধান অভিযুক্তকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি অন্যায়।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রুহুল্লাহ চৌধুরী জামায়াতের সাবেক কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য মাওলানা মমিনুল হক চৌধুরীর ছেলে। ছাত্রজীবনে রুহুল্লাহ শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁর বোন ও নদভীর স্ত্রী জামায়াতের ছাত্রীদের সংগঠনে জড়িত ছিলেন। নদভী নিজেও জামায়াতের লোকজনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে শিক্ষকতা করতেন। তৎকালীন আমির গোলাম আযমসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল নদভীর। একপর্যায়ে জামায়াতের সঙ্গে নদভীর মনোমালিন্য হয়। এরপর ২০১৪ সালে নদভী আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান।
এমপি হওয়ার পর থেকে নদভী তাঁর পরিবার ও আত্মীয়স্বজনকে জামায়াত থেকে আওয়ামী লীগ বানানোর মিশনে নামেন। স্ত্রীকে দিয়ে এ মিশন শুরু হয়। একে একে তাঁর নিকটাত্মীয়দের জামায়াত থেকে আওয়ামী লীগ বানান তিনি। সবশেষ ২০২২ সালে চরতী ইউনিয়ন থেকে নৌকা প্রতীক পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন রুহুল্লাহ চৌধুরী।
এসব বিষয়ে জানতে এমপি নদভীর মুঠোফোনে পাঁচ দিন চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পরে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী মো. ইরফান উদ্দিনের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
রাজধানীর বিমানবন্দরে শরীরে বিশেষ কৌশলে গাঁজা নিয়ে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে তিনজন কিশোর। তাঁরা বর্তমানে কিশোর সংশোধনাগারের রয়েছে।
১৫ দিন আগেপরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে সিঙ্গাপুরে যান দুই ভাই উজ্জ্বল মিয়া ও মো. ঝন্টু। সেখানে থাকা অবস্থায় মুঠোফোনে ভাবির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান ছোট ভাই মো. ঝন্টু। পরে দেশে ফিরে ভাবিকে বিয়ে করার জন্য আপন বড় ভাই উজ্জ্বল মিয়াকে খুন করে ছোট ভাই।
১৫ দিন আগেরাজধানীর গেণ্ডারিয়ায় গত দুই মাসে দুই অটোরিকশা চালককে হত্যা করে রিকশা ছিনিয়ে নেওয়া ঘটনা ঘটেছে। পৃথক এই দুই ঘটনায় তদন্তে নেমে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
১৬ দিন আগেপাবনার পদ্মা নদী থেকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ১২ বছরের এক কিশোর এবং ২২ বছরের এক তরুণীর অর্ধগলিত দুইটি মরদেহ উদ্ধার করেছে নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি। উদ্ধারের দুইদিনেও কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। রোববার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান।
১৯ দিন আগে