জুয়ার টাকা জোগাতে চুরি, দেখে ফেলায় বয়স্ক গৃহকর্মীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

ফেনী প্রতিনিধি
Thumbnail image
গ্রেপ্তার আবির আল রাফি। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফেনী পৌরসভার ফলেশ্বর এলাকায় মাসুদা বেগম (৬৫) নামে এক গৃহকর্মীকে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় আবির আল রাফি (২০) নামে এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার রাফি নোয়াখালী জেলার সদর উপজেলার চর মটুয়া গ্রামের মো. মেজবাহ উদ্দিনের ছেলে। তিনি ফেনীর একটি সরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৪র্থ সেমিস্টারে অধ্যয়নরত।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ফেনী পিবিআই পুলিশ সুপার জয়িতা শিল্পী।

পুলিশ সুপার জয়িতা শিল্পী বলেন, এ ঘটনায় মামলা করার পর থেকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে পিবিআই। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাতে নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে হাটহাজারী এলাকা থেকে আবির আল রাফিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রাফি বেশ কিছুদিন ধরে অনলাইনে জুয়া খেলায় তীব্রভাবে আসক্ত ছিল। একপর্যায়ে জুয়ার টাকার জন্য বাবার কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ কেনার কথা বলে ৪০ হাজার টাকা বাড়ি থেকে নিয়ে আসে। ওই টাকাও জুয়া খেলায় শেষ হয়ে গেলে গত ২৬ ডিসেম্বর পৌরসভার ফলেশ্বর এলাকায় সাবেক পৌর কাউন্সিলর গোলাম ফারুকের ভাই গোলাম কিবরিয়া বকুলের বাসায় চুরি করতে গেলে নিহত মাসুদা বেগম দেখে ফেলেন। একপর্যায়ে মাসুদা বেগম আটকানোর চেষ্টা করেন। আসামি রাফি তার সঙ্গে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে তাঁকে (মাসুদা) হত্যা করে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান।

পুলিশ সুপার জয়িতা শিল্পী আরও বলেন, গ্রেপ্তারের পর আসামির দেওয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি ও পরিহিত কালো রঙের চেক শার্ট উদ্ধার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার রাফি এ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। ঘটনার বিস্তারিত জানার জন্য আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাসুদা বেগমের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ২৭ ডিসেম্বর নিহতের ছেলে মো. জাফর বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

নিহত মাসুদা বেগম ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের পিঠাপাশারী এলাকার মোস্তফা ভূঁঞা বাড়ির সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী। তিনি গত ৮ বছর ধরে ফারুক কমিশনারের বাড়ির গৃহকর্মী ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, সাবেক পৌর কাউন্সিলর গোলাম ফারুকের ভাই গোলাম কিবরিয়া বকুলের ঘরে কাজ করার জন্য গত ২৩ ডিসেম্বর মাসুদা বেগমকে ডেকে আনা হয়। ২৬ ডিসেম্বর রাত পৌনে ৯টার দিকে বাড়ির লোকজন বকুলের ঘরের সোফার নিচে গলাকাটা অবস্থায় ওই নারীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে মরদেহ উদ্ধার করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত