Ajker Patrika

ব্র্যান্ডের বোতলে ভেজাল মদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২২, ১৬: ৪৭
ব্র্যান্ডের বোতলে ভেজাল মদ

ভাঙারির দোকান থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদের খালি বোতল সংগ্রহ করে সেই বোতলে ভেজাল মদ ভরে বাজারজাত করত একটি চক্র। রাজধানীর রামপুরার রিয়াজবাগ এলাকায় সেই ভেজাল মদের কারখানার সন্ধান পেয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। 

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কারখানায় অভিযান চালিয়ে মালিকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) ঢাকা মহানগর (উত্তর) শাখা। 

আজ শুক্রবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির উপপরিচালক (ঢাকা মেট্রো-উত্তর) রাশেদুজ্জামান এ তথ্য জানান। 

রাশেদুজ্জামান বলেন, ইথানল, স্পিরিট ও নিম্নমানের রং দিয়ে মদ তৈরি করত চক্রটি। পরে এসব মদ নামিদামি ব্র‍্যান্ডের লেবেল লাগিয়ে বোতলজাত করে বাজারে বিক্রি করে আসছিল। ছয় মাস ধরে চক্রটি রাজধানীতে বসে এভাবে ভেজাল মদ তৈরি করে বিক্রি করে আসছে। 

ভেজাল মদ উৎপাদনকারী কারখানাটির মালিক আশরাফুজ্জামান ওরফে মোশারফসহ (৩৫) আবুল খায়ের চৌধুরী (৬৯) ও হায়দার ভূঁইয়া (৩৬) নামে দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

তাঁদের কাছ থেকে ১০ বোতল বিদেশি ব্ল্যাক লেবেল, ৫ বোতল নেমিরোফ, ৮ বোতল কেরুস ফাইন ব্রান্ডি, মদ তৈরির উপকরণ ইথানল ২০ লিটার, এসেন্স ৪০০ গ্রাম, চারকোল পাউডার ৪৫০ গ্রাম, বোতলজাত করার পাইপ একটি, বিদেশি মদের লেবেল ৮০টি, কর্ক ৮০টি, খালি বোতল ৩০টি ও একটি স্টিলের চোঙা জব্দ করা হয়েছে। 

উপপরিচালক রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘চক্রটি বাজারে নকল মদ সরবরাহ করে মানুষকে মৃত্যুর ঝুঁকিতে ফেলছে। এর আগে ভেজাল মদ পান করে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিএনসি ডিজি ভেজাল মদ প্রতিরোধের নির্দেশনা দেন।’ 

সংবাদ সম্মেলনে ভেজাল মদ তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে ডিএনসির ঢাকা মেট্রো উত্তরের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, ‘বিভিন্ন ভাঙারির দোকান থেকে চক্রটি প্রথমে বিভিন্ন ব্র‍্যান্ডের মদের খালি বোতল সংগ্রহ করে। পরে মদের জন্য স্পিরিট তৈরি করে। মদ তৈরি করার অন্যান্য রাসায়নিক উপকরণ বাইরে থেকে সংগ্রহ করে চক্রটি।’ 

তিনি বলেন, ‘চক্রটি এমনভাবে ভেজাল মদ তৈরি করে বোতলজাত করে, যা দেখলে কোনোভাবে মনে হবে না এটা নকল। পরে তারা বাজারে বিভিন্ন আসল মদ বলে এই ভেজাল মদ বিক্রি করে আসছে।’ 

কোনো ওয়্যারহাউস তাদের কাছ থেকে মদ কিনত কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘এরা কোনো ওয়্যারহাউসের কাছে মদ বিক্রি করত না। তারা সরাসরি খুচরা ক্রেতাদের কাছে মদ বিক্রি করত। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী বারগুলো বিদেশি মদ আমদানি করতে পারবে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ দেশি ও ৪০ শতাংশ বিদেশি মদ রাখতে পারবে।’ 

ভেজাল মদ মানুষ কেন কিনছে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মদের দাম একেক সময় একেক রকম। ভেজাল মদের দামের তো কোনো ঠিক নেই। ভেজাল মদ তৈরির খরচই তো অনেক কম। এ ছাড়া তারা ভেজাল মদ এমনভাবে বোতলজাত করে যে মানুষ বুঝতে পারে না আসল নাকি নকল। যারা তাদের কাছ থেকে কিনেছে, তারা আসল মদ মনে করেই নিয়ে গেছে। ভেজাল মদ চেনার কোনো উপায় নেই। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, অবৈধ উৎস থেকে কোনো কিছু কিনলে এইটা ভেজাল।’ 

ভেজাল মদ তৈরি করার উপকরণগুলো কোথা থেকে চক্রটি সংগ্রহ করেছে জানতে চাইলে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা গ্রেপ্তারদের রিমান্ডে নেব। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করব, এ উপকরণগুলো তারা কোথা থেকে এনেছে। তথ্য পাওয়ার পর এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বনশ্রীতে স্বর্ণ ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার আমিনুল ছাত্রলীগের, সুমন শ্রমিক দলের নেতা

সামরিক বাহিনীর ৮ সংস্থা ও স্থাপনার নাম পরিবর্তন

থানায় থানায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের তালিকা হচ্ছে

ককটেল ফুটতেই সেলুনে লুকায় পুলিশ, রণক্ষেত্র হয় এলাকা

মসজিদে লুকিয়েও রক্ষা পেলেন না স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও তাঁর ভাই, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিল প্রতিপক্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত