Ajker Patrika

ঢাবিতে বাম কর্মীকে ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য’ দাবি করে বাবা-মাকে ফোন ছাত্রলীগ নেতার

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২২, ১৮: ৪৬
ঢাবিতে বাম কর্মীকে ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য’ দাবি করে বাবা-মাকে ফোন ছাত্রলীগ নেতার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থীকে ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য’ এবং ‘সরকার–বিরোধী’ ট্যাগ দিয়ে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ছাত্রলীগের দুই নেতা। বাম সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ওই ছাত্রকে রাতভর মানসিক নির্যাতন, জেরা, হল থেকে বের করে দেওয়া এবং পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেন তাঁরা। অভিযুক্ত দু’জন ভুক্তভোগীর কক্ষেই থাকেন বলে জানা গেছে।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে হলের ২২৩ নং রুমে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্তরা হলেন—হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আহমদ উল্লাহ আশরাফ ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক রেজভী হাসান। তাঁরা হল ছাত্রলীগের সভাপতি আজহারুল ইসলাম মামুনের অনুসারী। আজহারুল ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সামির সাদিক লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।

সাদিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল রাতে আহমদ উল্লাহ আশরাফ আমার টেবিল চেক করে। আমার কিছু বই ছিল যেগুলো আমার সংগঠনের পরিচিতি, গঠনতন্ত্র সংক্রান্ত। সেগুলোকে সরকার–বিরোধী বই উল্লেখ করে আমার বাবা-মাকে ফোন দেয়। ওনারা এই সিত্রাংয়ের সময়ে বগুড়া থেকে ঢাকায় আসেন। আহমদ উল্লাহ আশরাফ ও রেজভী হাসান আমাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করে, থানায় দিয়ে দেওয়ার ও হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়। ভয়ে সকালে হল থেকে চলে আসি।’ 

সামির সাদিকের বাবা এমতাছুর রহমান বলেন, ‘গতকাল রাতে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে এক ছেলে ফোন দিয়ে বলে, আপনার ছেলে নিষিদ্ধ সংগঠন করে, আপনি জানেন? আপনার ছেলেকে নিয়ে যান, না হয় বড় ভাইয়েরা থানায় দিয়ে দেবে। এ রকম বললে কোনো বাবা–মায়ের ঘুম হয়! সিত্রাংয়ের কারণে রাতে আসতে পারিনি। সকালের বাসে চলে এসেছি। তার মা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সারা রাত কান্না করেছে।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরেছি। অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছি। যথাযথ প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

হল শাখা ছাত্রলীগের একটি সূত্র জানায়, সাদিককে হল থেকে বের করে দেওয়ার জন্য এ রকম করা হচ্ছে। তাঁকে সরকার–বিরোধী ট্যাগ দিয়ে হল থেকে বের করে নতুন কর্মীদের সেখানে তুলতে চাচ্ছে ছাত্রলীগ। 

অভিযুক্ত আহমাদ উল্লাহ আশরাফ ও রেজভী হাসানকে একাধিকবার ফোন কল করা হলেও তাঁরা সাড়া দেননি। 

জানতে চাইলে হল ছাত্রলীগের সভাপতি আজহারুল ইসলাম মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি সকালে যখন জানতে পেরেছি, তখন আমি খোঁজ নিয়েছি। সমাধান করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু ভুক্তভোগী সমাধানে না গিয়ে লিখিত অভিযোগ দেবে এ রকম বলছে। একই রুমে থেকে যদি কেউ সন্দেহ করে জেরা করে তাহলে সেখানে একজন হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি হিসেবে আমার কিছু করার থাকে না। এখানে ছাত্রলীগ জড়িত না। মূলত বেড মেটের সন্দেহের কারণে তার থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাকে মারধর করা হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত