গাইবান্ধায় পুলিশ কর্মকর্তার হাতে সংবাদকর্মী লাঞ্ছিতের অভিযোগ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮: ২১
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯: ২১

গাইবান্ধায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান কাভার করতে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তার হাতে ডিবিসি নিউজের ভিডিও জার্নালিস্টকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে জেলার সাংবাদিকেরা মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন। তবে, অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। 

আজ শনিবার বিকেলে গাইবান্ধা ডিবি রোডের গানাসাস মার্কেটের সামনে গাইবান্ধা ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ও সাংবাদিকদের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। 

এর আগে বেলা ১১টার দিকে গাইবান্ধার শাহ আব্দুল হামিদ স্টেডিয়ামে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে ছবি নেওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় অনুষ্ঠানে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল ও পুলিশ সুপার কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন। 

অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা হলেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ভুক্তভোগী হলেন ডিবিসি নিউজের (টিভি) গাইবান্ধা জেলার ভিডিও জার্নালিস্ট মোকছেদুর রহমান। 

মানববন্ধনে কর্মসূচিতে সাংবাদিকেরা জানান, সকালে গাইবান্ধা শাহ আব্দুল হামিদ স্টেডিয়ামে বিজয় দিবসের সংবাদ সংগ্রহে করতে যান গণমাধ্যমকর্মীরা। সেখানে বিজয় দিবসের ডিসপ্লে প্রদর্শনের সময় অন্যদের মতোই ছবি নিচ্ছিলেন ডিবিসির ভিডিও জার্নালিস্ট মোকছেদুর রহমান। এ সময় হঠাৎ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) আব্দুল্লাহ আল মামুন মোকছেদুর রহমানের ট্রাইপড ধরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং অশালীন ভাষায় কথা বলেন। এর প্রতিবাদ করলে তিনি মোকছেদুরকে ধাক্কা দেন এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাঁকে লাথি মারতে তেড়ে যান। পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক ও গাইবান্ধার স্থানীয় দৈনিক মাধুকরের স্টাফ রিপোর্টার আবু সায়েম বলেন, ‘পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন মোকছেদুর রহমানকে ধাক্কা দিয়েছেন এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে লাথি মারতে চেয়েছেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’ 

ভুক্তভোগী মোকছেদুরের অভিযোগ করে বলেন, ‘আমিও সবার মতোই ছবি নিচ্ছিলাম। পেছন থেকে দেখা যাবে না বলে আমি বসে গেছি। তারপরও উনি (আব্দুল্লাহ আল মামুন) এসে আমার ট্রাইপড (ক্যামেরার স্ট্যান্ড) ধরে টান দেন এবং অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেন। আমি এর প্রতিবাদ করলে তিনি আমাকে ধাক্কা দেন এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিয়ে লাথি মারার হুমকি দেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের এমন আচরণে আমি মর্মাহত। আমার সম্মান চরমভাবে খর্ব হয়েছে। তাঁর সঙ্গে আমার কোনো শত্রুতা নেই বা তাঁর সঙ্গে আমার কখনো কথাও হয়নি।’ 

মানববন্ধন শেষে সাংবাদিকেরা শহরের ১ নম্বর মোড়ে অবস্থান নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। এ সময় রাস্তার দুই পাশে যানজট তৈরি হয়। পরে গাইবান্ধা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোখলেসুর রহমান ঘটনাস্থলে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে বিষয়টি আলোচনা ও সঠিক বিচারের আশ্বাস দিলে সাংবাদিকেরা রাস্তা অবরোধ কর্মসূচি তুলে নেন। 

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা গাইবান্ধা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) আব্দুল্লাহ আল মামুন মোবাইল ফোনে এমন ঘটনা অস্বীকার করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ রকম কিছু হয়নি। আমি তাকে ধাক্কা দেইনি বা কোনো গালিগালাজ করিনি। কেউ যদি এ রকমভাবে এখন বলে, কী আর করার থাকে।’ 

এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আজকে অনেক লোকই মোবাইল, ক্যামেরা দিয়ে ছবি ওঠাচ্ছিল। আমরা সবাইকে সরতে বলছিলাম। তার মধ্যে উনি স্ট্যান্ডসহ ক্যামেরা নিয়ে মাঝখানে গেছেন। তখন আমি তাঁর স্ট্যান্ডটা ধরে সরতে বলেছি। কিন্তু উনি (মোকছেদুর) আমারে এমন ঝাড়ি (আচরণ) মেরেছেন, কী আর বলব! জানি না উনি আমারে চিনে এমন করেছেন, না কি না চিনে করেছেন!’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত