মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার সেনুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল মাজেদ। তিনি মূলত শিক্ষার্থীদের গণিত শেখান। এর পাশাপাশি ২০১৫ সাল থেকে তাদের নাচ, গান, অভিনয়, বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজানো এবং ছবি আঁকাও শেখাচ্ছেন। তাঁর এই ব্যতিক্রমী সহশিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। এর ফলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার কমেছে।
সংগীতের প্রতি আব্দুল মাজেদের ভালোবাসা ছোটবেলা থেকেই ছিল। তবে সেভাবে কারও কাছে সংগীত শেখার সুযোগ পাননি। তিনি মূলত শিক্ষার্থীদের গণিত শেখাতেই ব্যস্ত থাকতেন। একদিন তাঁর মনে হলো, কঠিন বিষয়গুলো শেখার সময় শিক্ষার্থীরা একঘেয়ে হয়ে যাচ্ছে এবং আনন্দের সঙ্গে পড়াশোনা করতে পারছে না। তাই শিক্ষায় বিনোদন আনার জন্য তিনি ভিন্ন কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন। ইউটিউব থেকে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখার পর তিনি প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রস্তাব দেন যে ক্লাসের বিরতিতে বা স্কুল ছুটির পর তিনি শিক্ষার্থীদের সংগীত ও বাদ্যযন্ত্র শেখাতে চান। প্রধান শিক্ষক তাঁর এই প্রস্তাবে সম্মতি দেন এবং বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র কিনে দেন।
সংগীত শেখানোর শুরুতেই তিনি দেখলেন, যেদিন সংগীতের ক্লাস হয়, সেদিন প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে শেখা শুরু করে। এই প্রতিক্রিয়ায় তিনি দারুণভাবে উৎসাহিত হন। প্রধান শিক্ষক শাহ মো. জুলিয়াস জামান জানান, মাজেদের উদ্যোগে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও সংখ্যাও বেড়েছে। অভিভাবকেরা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, শিক্ষার মাঝে বিনোদনের সংযোজন প্রয়োজন এবং সংস্কৃতিচর্চা মেধার বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
মাজেদ শুধু সংগীত ও বাদ্যযন্ত্র শেখানোতেই থেমে থাকেননি। তিনি সপ্তাহে এক দিন কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন এবং বিজয়ীদের পুরস্কার দিয়ে উৎসাহিত করেন। ফলে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আরও বেড়েছে। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সৌরভ জানায়, এখন ক্লাস করতে তাদের অনেক ভালো লাগে।
১৯২৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সেনুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে ২৫৭ শিক্ষার্থী আছে। তাদের মধ্যে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী তিশা জানায়, সে এখন দুটি বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারে। শিক্ষার্থীদের এমন ব্যাপক অংশগ্রহণে মাজেদ নিজেও দারুণভাবে উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, শিশুদের সৎ, যোগ্য ও আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সংস্কৃতিচর্চার বিকল্প নেই।
মাজেদের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সাফল্য দেখাচ্ছে। ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় তারা অনেক পুরস্কার অর্জন করেছে। কিছুদিন আগে ইউনিয়ন পর্যায়ে ১৯টি প্রথম পুরস্কারসহ মোট ৩৬টি পুরস্কার অর্জন করে সেনুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। উপজেলা পর্যায়েও তারা তিনটি প্রথমসহ আটটি পুরস্কার পেয়েছে।
২০০৬ সালে আব্দুল মাজেদ এই স্কুলে যোগদান করেন। তাঁর প্রচেষ্টায় স্কুলের ফল ও পরিবেশ উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে। প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিকভাবে বৃত্তি পাচ্ছে।
সমাপনী পরীক্ষায় ইউনিয়ন পর্যায়ে শতভাগ কৃতকার্য হয়। প্রতিবছর ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে। পিছিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য তিনি বিশেষ পাঠদানের ব্যবস্থা করেন। এতে তাঁকে সহায়তা করেন তাঁর সহকর্মী ও কিছু মেধাবী শিক্ষার্থী।
মাজেদ সংগীত শিক্ষক হিসেবে অতিরিক্ত কোনো সুবিধা পান না। তবে তিনি চান, তাঁর শিক্ষার্থীরা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠুক। কখনো ক্লাস বিরতিতে, কখনো স্কুল ছুটির পর তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়ে সমবেত কণ্ঠে গেয়ে ওঠেন, ‘পাল তুলে দে মাঝি হেলা করিস না,/ ছেড়ে দে নৌকা আমি যাব মদিনা।’
মাজেদের এই উদ্যোগ এলাকার অভিভাবক, স্থানীয় জনগণ এবং সরকারি কর্তৃপক্ষের প্রশংসা কুড়িয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন জানান, সহশিক্ষা কার্যক্রম সব স্কুলে করার নির্দেশনা রয়েছে। তবে সেনুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এ ক্ষেত্রে অনেক ভালো উদাহরণ স্থাপন করেছে।
ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার সেনুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল মাজেদ। তিনি মূলত শিক্ষার্থীদের গণিত শেখান। এর পাশাপাশি ২০১৫ সাল থেকে তাদের নাচ, গান, অভিনয়, বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজানো এবং ছবি আঁকাও শেখাচ্ছেন। তাঁর এই ব্যতিক্রমী সহশিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। এর ফলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার কমেছে।
সংগীতের প্রতি আব্দুল মাজেদের ভালোবাসা ছোটবেলা থেকেই ছিল। তবে সেভাবে কারও কাছে সংগীত শেখার সুযোগ পাননি। তিনি মূলত শিক্ষার্থীদের গণিত শেখাতেই ব্যস্ত থাকতেন। একদিন তাঁর মনে হলো, কঠিন বিষয়গুলো শেখার সময় শিক্ষার্থীরা একঘেয়ে হয়ে যাচ্ছে এবং আনন্দের সঙ্গে পড়াশোনা করতে পারছে না। তাই শিক্ষায় বিনোদন আনার জন্য তিনি ভিন্ন কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন। ইউটিউব থেকে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখার পর তিনি প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রস্তাব দেন যে ক্লাসের বিরতিতে বা স্কুল ছুটির পর তিনি শিক্ষার্থীদের সংগীত ও বাদ্যযন্ত্র শেখাতে চান। প্রধান শিক্ষক তাঁর এই প্রস্তাবে সম্মতি দেন এবং বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র কিনে দেন।
সংগীত শেখানোর শুরুতেই তিনি দেখলেন, যেদিন সংগীতের ক্লাস হয়, সেদিন প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে শেখা শুরু করে। এই প্রতিক্রিয়ায় তিনি দারুণভাবে উৎসাহিত হন। প্রধান শিক্ষক শাহ মো. জুলিয়াস জামান জানান, মাজেদের উদ্যোগে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও সংখ্যাও বেড়েছে। অভিভাবকেরা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, শিক্ষার মাঝে বিনোদনের সংযোজন প্রয়োজন এবং সংস্কৃতিচর্চা মেধার বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
মাজেদ শুধু সংগীত ও বাদ্যযন্ত্র শেখানোতেই থেমে থাকেননি। তিনি সপ্তাহে এক দিন কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন এবং বিজয়ীদের পুরস্কার দিয়ে উৎসাহিত করেন। ফলে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আরও বেড়েছে। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সৌরভ জানায়, এখন ক্লাস করতে তাদের অনেক ভালো লাগে।
১৯২৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সেনুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে ২৫৭ শিক্ষার্থী আছে। তাদের মধ্যে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী তিশা জানায়, সে এখন দুটি বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারে। শিক্ষার্থীদের এমন ব্যাপক অংশগ্রহণে মাজেদ নিজেও দারুণভাবে উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, শিশুদের সৎ, যোগ্য ও আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সংস্কৃতিচর্চার বিকল্প নেই।
মাজেদের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সাফল্য দেখাচ্ছে। ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় তারা অনেক পুরস্কার অর্জন করেছে। কিছুদিন আগে ইউনিয়ন পর্যায়ে ১৯টি প্রথম পুরস্কারসহ মোট ৩৬টি পুরস্কার অর্জন করে সেনুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। উপজেলা পর্যায়েও তারা তিনটি প্রথমসহ আটটি পুরস্কার পেয়েছে।
২০০৬ সালে আব্দুল মাজেদ এই স্কুলে যোগদান করেন। তাঁর প্রচেষ্টায় স্কুলের ফল ও পরিবেশ উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে। প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিকভাবে বৃত্তি পাচ্ছে।
সমাপনী পরীক্ষায় ইউনিয়ন পর্যায়ে শতভাগ কৃতকার্য হয়। প্রতিবছর ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে। পিছিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য তিনি বিশেষ পাঠদানের ব্যবস্থা করেন। এতে তাঁকে সহায়তা করেন তাঁর সহকর্মী ও কিছু মেধাবী শিক্ষার্থী।
মাজেদ সংগীত শিক্ষক হিসেবে অতিরিক্ত কোনো সুবিধা পান না। তবে তিনি চান, তাঁর শিক্ষার্থীরা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠুক। কখনো ক্লাস বিরতিতে, কখনো স্কুল ছুটির পর তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়ে সমবেত কণ্ঠে গেয়ে ওঠেন, ‘পাল তুলে দে মাঝি হেলা করিস না,/ ছেড়ে দে নৌকা আমি যাব মদিনা।’
মাজেদের এই উদ্যোগ এলাকার অভিভাবক, স্থানীয় জনগণ এবং সরকারি কর্তৃপক্ষের প্রশংসা কুড়িয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন জানান, সহশিক্ষা কার্যক্রম সব স্কুলে করার নির্দেশনা রয়েছে। তবে সেনুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এ ক্ষেত্রে অনেক ভালো উদাহরণ স্থাপন করেছে।
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে স্প্রিং-২০২১ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জন্য অনাড়ম্বরপূর্ণ বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। গত ১৮ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে এই অনুষ্ঠান করা হয়।
২ ঘণ্টা আগে২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ভর্তি পরীক্ষার চূড়ান্ত আবেদন ১৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে।
৯ ঘণ্টা আগেভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে মডেল টেস্ট বা মক টেস্ট দেওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি পরীক্ষার আসল পরিবেশের অনুকরণে তৈরি হওয়া একটি টেস্ট, যা পরীক্ষার্থীদের নিজস্ব শক্তি এবং দুর্বলতা চিহ্নিত করতে সহায়ক।
১৫ ঘণ্টা আগেউন্নত দেশগুলো তাদের বিদ্যাপীঠগুলোতে বিশ্বের নানা প্রান্তের মেধাবী শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানায়। এমনই একটি দেশ সুইডেন, যেটি বছরের পর বছর এর নাগরিকদের কাঙ্ক্ষিত আর্থসামাজিক অবস্থা নিশ্চিত করে আসছে। বিশ্বখ্যাত সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের এই আশ্রয়স্থলে ক্যারিয়ার গঠন হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীর কাছে...
১৫ ঘণ্টা আগে