মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
শত বছরে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে সমাজ, রাষ্ট্র—সবকিছুতেই। সময়ের স্রোতে হারিয়ে গেছে পুরোনো অনেক কিছু। নানান বদলের মধ্য দিয়ে কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এমনি এক শতবর্ষী স্কুল দিনাজপুরের ফুলবাড়ী গোলাম মোস্তফা (জিএম) পাইলট উচ্চবিদ্যালয়।
১৯২০ সালে ১০ একর জমিতে গোলাম মোস্তফা হাই মাদ্রাসা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল স্কুলটি। পরবর্তী সময়ে ১৯৫৮ সালে এটি জিএম উচ্চবিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। ফুলবাড়ী পৌর শহরের ঢাকা মোড়, রেলস্টেশন এলাকাসংলগ্ন স্থানে গাছ-গাছালির ছায়াঘেরা মনোরম পরিবেশে অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। এর ফটক পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে সুদৃশ্য শহীদ মিনার। তার পাশে শতবর্ষ ফলক। বিদ্যালয়ের মাঝখানে রয়েছে পাড়বাঁধা একটি পুকুর। এর চারপাশে বিদ্যালয় ভবন। পুকুরের পাশ দিয়ে সারি সারি দেবদারুগাছ দাঁড়িয়ে আছে। এসব মহিরুহের ফাঁকে শোভা ছড়াচ্ছে বাহারি ফুলগাছ। পূর্ব পাড়ে শানবাঁধানো ঘাট এবং ঈদগাহ মাঠ ও মসজিদ। উত্তর পাড়ে বিদ্যালয়ের পুরোনো একটি লাল রঙের ভবন কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভবনটি এখন অফিসকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ভারতের হুগলি জেলার বাসিন্দা ছিলেন সৈয়দ গোলাম মোস্তফা। পেশায় তিনি ছিলেন পাস করা চিকিৎসক। সৈয়দ গোলাম মোস্তফা ১৯১৯ সালের আগে ইসলাম প্রচার ও সেবার জন্য এই অঞ্চলে আসেন। তাঁর চার ছেলে ও দুই মেয়ে। সন্তানদের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন সৈয়দা ফাতেমা খাতুন। তাঁর মেয়ে জোহরা তাজউদ্দীন, যিনি বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনের স্ত্রী। ফুলবাড়ী পৌর শহরের পূর্ব গৌরীপাড়ায়, এখন যেটি ঢাকা মোড় শাপলা চত্বর নামে পরিচিত, সপরিবারে বসবাস করতেন সৈয়দ গোলাম মোস্তফা। বর্তমানে সেখানে তাঁর পরিবারের উত্তরসূরিরা বসবাস করেন। সেই সময় ফুলবাড়ীসহ আশপাশের লোকজনের সেবা দিতে গিয়ে তাঁদের জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করতে বাড়ির পাশে নিজ জমিতে গোলাম মোস্তাফা হাই মাদ্রাসা স্থাপন করেন।
বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক বীরেন্দ্রনাথ সরকার জানান, গত এক শতক বিদ্যালয়টি অনেক কীর্তিমান শিক্ষার্থীর জন্ম দিয়েছে। তবে ১৯৭১ সালে বিদ্যালয়টিতে পাকিস্তানি বাহিনী ক্যাম্প করে এর রেকর্ডপত্র নষ্ট করে দেয়। তাই এর অনেক ইতিহাস আজও অজানা। তিনি বলেন, শুরুতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন শরৎ চন্দ্র সরকার। ৭ জন প্রধান শিক্ষকের পর বর্তমানে তোজাম্মেল হোসেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো. তোজাম্মেল হোসেন জানান, এখন বিদ্যালয়ে প্রায় ১ হাজার ছাত্রছাত্রী, ৩০ জন শিক্ষকসহ ৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। নিভৃত পল্লীর শতবর্ষী এ বিদ্যালয় শিক্ষিত জনগোষ্ঠী তৈরিতে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছে। এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুণী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কবির, লে. কর্নেল জাফর আলী চৌধুরী, বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জির প্রধান প্রকৌশলী দেবব্রত দাশ বাবু, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মতিয়ার রহমান, সাবেক অতিরিক্ত সচিব ধীরেন্দ্রনাথ সরকার, দেশ-বিদেশে পুরস্কার ও সম্মাননাপ্রাপ্ত লেখক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক রাহেল রাজিব, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তানিয়া তাহমিনা সরকার, পিক্সিটেলের প্রতিষ্ঠাতা তথ্যপ্রযুক্তিবিদ আসাদ লিও, বাংলাদেশের অন্যতম উদ্যোক্তা চেইন ফুড ফ্র্যাঞ্চাইজি ওয়েল ফুডের কর্ণধার রেজিনা আফরোজ লিজা, নগর অঞ্চলবিদ চিত্ত গুপ্ত। এ ছাড়া আছেন বেশ কিছু খ্যাতিমান চিকিৎসক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
১৯৬০ সালে বিদ্যালয়ে প্রথম এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সে বছর এসএসসিতে ষষ্ঠ স্ট্যান্ড করেন দানেশ আহম্মেদ। তিনি বর্তমানে লন্ডনে বসবাস করছেন। একই সঙ্গে এসএসসিতে ওই বছর মো. আ. গফুর নামের একজন অষ্টম স্ট্যান্ড করেন।
ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আতাউর রহমান মিল্টন বলেন, মানুষ গড়ার এই বিদ্যাপীঠ সমাজে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ২০২০ সালে এর শতবর্ষ পূর্ণ হয়েছে। বিদ্যালয়ের হাজার হাজার বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী নিয়ে জমকালো আয়োজনে দুদিনব্যাপী শতবর্ষ উদ্যাপন করা হয়েছে।
শত বছরে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে সমাজ, রাষ্ট্র—সবকিছুতেই। সময়ের স্রোতে হারিয়ে গেছে পুরোনো অনেক কিছু। নানান বদলের মধ্য দিয়ে কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এমনি এক শতবর্ষী স্কুল দিনাজপুরের ফুলবাড়ী গোলাম মোস্তফা (জিএম) পাইলট উচ্চবিদ্যালয়।
১৯২০ সালে ১০ একর জমিতে গোলাম মোস্তফা হাই মাদ্রাসা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল স্কুলটি। পরবর্তী সময়ে ১৯৫৮ সালে এটি জিএম উচ্চবিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। ফুলবাড়ী পৌর শহরের ঢাকা মোড়, রেলস্টেশন এলাকাসংলগ্ন স্থানে গাছ-গাছালির ছায়াঘেরা মনোরম পরিবেশে অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। এর ফটক পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে সুদৃশ্য শহীদ মিনার। তার পাশে শতবর্ষ ফলক। বিদ্যালয়ের মাঝখানে রয়েছে পাড়বাঁধা একটি পুকুর। এর চারপাশে বিদ্যালয় ভবন। পুকুরের পাশ দিয়ে সারি সারি দেবদারুগাছ দাঁড়িয়ে আছে। এসব মহিরুহের ফাঁকে শোভা ছড়াচ্ছে বাহারি ফুলগাছ। পূর্ব পাড়ে শানবাঁধানো ঘাট এবং ঈদগাহ মাঠ ও মসজিদ। উত্তর পাড়ে বিদ্যালয়ের পুরোনো একটি লাল রঙের ভবন কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভবনটি এখন অফিসকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ভারতের হুগলি জেলার বাসিন্দা ছিলেন সৈয়দ গোলাম মোস্তফা। পেশায় তিনি ছিলেন পাস করা চিকিৎসক। সৈয়দ গোলাম মোস্তফা ১৯১৯ সালের আগে ইসলাম প্রচার ও সেবার জন্য এই অঞ্চলে আসেন। তাঁর চার ছেলে ও দুই মেয়ে। সন্তানদের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন সৈয়দা ফাতেমা খাতুন। তাঁর মেয়ে জোহরা তাজউদ্দীন, যিনি বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনের স্ত্রী। ফুলবাড়ী পৌর শহরের পূর্ব গৌরীপাড়ায়, এখন যেটি ঢাকা মোড় শাপলা চত্বর নামে পরিচিত, সপরিবারে বসবাস করতেন সৈয়দ গোলাম মোস্তফা। বর্তমানে সেখানে তাঁর পরিবারের উত্তরসূরিরা বসবাস করেন। সেই সময় ফুলবাড়ীসহ আশপাশের লোকজনের সেবা দিতে গিয়ে তাঁদের জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করতে বাড়ির পাশে নিজ জমিতে গোলাম মোস্তাফা হাই মাদ্রাসা স্থাপন করেন।
বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক বীরেন্দ্রনাথ সরকার জানান, গত এক শতক বিদ্যালয়টি অনেক কীর্তিমান শিক্ষার্থীর জন্ম দিয়েছে। তবে ১৯৭১ সালে বিদ্যালয়টিতে পাকিস্তানি বাহিনী ক্যাম্প করে এর রেকর্ডপত্র নষ্ট করে দেয়। তাই এর অনেক ইতিহাস আজও অজানা। তিনি বলেন, শুরুতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন শরৎ চন্দ্র সরকার। ৭ জন প্রধান শিক্ষকের পর বর্তমানে তোজাম্মেল হোসেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো. তোজাম্মেল হোসেন জানান, এখন বিদ্যালয়ে প্রায় ১ হাজার ছাত্রছাত্রী, ৩০ জন শিক্ষকসহ ৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। নিভৃত পল্লীর শতবর্ষী এ বিদ্যালয় শিক্ষিত জনগোষ্ঠী তৈরিতে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছে। এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুণী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কবির, লে. কর্নেল জাফর আলী চৌধুরী, বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জির প্রধান প্রকৌশলী দেবব্রত দাশ বাবু, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মতিয়ার রহমান, সাবেক অতিরিক্ত সচিব ধীরেন্দ্রনাথ সরকার, দেশ-বিদেশে পুরস্কার ও সম্মাননাপ্রাপ্ত লেখক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক রাহেল রাজিব, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তানিয়া তাহমিনা সরকার, পিক্সিটেলের প্রতিষ্ঠাতা তথ্যপ্রযুক্তিবিদ আসাদ লিও, বাংলাদেশের অন্যতম উদ্যোক্তা চেইন ফুড ফ্র্যাঞ্চাইজি ওয়েল ফুডের কর্ণধার রেজিনা আফরোজ লিজা, নগর অঞ্চলবিদ চিত্ত গুপ্ত। এ ছাড়া আছেন বেশ কিছু খ্যাতিমান চিকিৎসক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
১৯৬০ সালে বিদ্যালয়ে প্রথম এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সে বছর এসএসসিতে ষষ্ঠ স্ট্যান্ড করেন দানেশ আহম্মেদ। তিনি বর্তমানে লন্ডনে বসবাস করছেন। একই সঙ্গে এসএসসিতে ওই বছর মো. আ. গফুর নামের একজন অষ্টম স্ট্যান্ড করেন।
ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আতাউর রহমান মিল্টন বলেন, মানুষ গড়ার এই বিদ্যাপীঠ সমাজে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ২০২০ সালে এর শতবর্ষ পূর্ণ হয়েছে। বিদ্যালয়ের হাজার হাজার বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী নিয়ে জমকালো আয়োজনে দুদিনব্যাপী শতবর্ষ উদ্যাপন করা হয়েছে।
দেশের প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর অংশ হিসেবে নতুন প্রায় ২০ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিদ্যালয়গুলোয় মিড-ডে মিলে পুষ্টিকর খাবার দেওয়া, বার্ষিক পরীক্ষার মূল্যায়ন চার স্তরে করা, পঞ্চম শ্রেণিতে আবার বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ারও পরিকল্পনা করা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেবিশ্বে প্রতিনিয়ত প্রযুক্তি উন্নতি হচ্ছে। প্রযুক্তির প্রভাব মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গভীরভাবে প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে শিক্ষাব্যবস্থায় এই পরিবর্তনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রযুক্তি একদিকে যেমন জীবনকে সহজ করছে অন্যদিকে এটি শিক্ষার ধরন, পদ্ধতি ও কাঠামোর ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে।
৩ ঘণ্টা আগেযুক্তরাজ্যে জন্ম ও কানাডায় বেড়ে ওঠা ম্যালকম গ্ল্যাডওয়েল একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন লেখক, সাংবাদিক ও বক্তা। তাঁর অন্যতম বই হলো আউটলায়ার্স। বইটি বিশ্বের অনেক ভাষায় অনূদিত হয়ে মিলিয়ন মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেবিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুধু পাঠ্যপুস্তক বা শ্রেণিকক্ষের শিক্ষার মধ্যেই সীমাবদ্ধ হওয়া উচিত নয়। এটি ব্যক্তিত্ব গঠনের, দক্ষতা বিকাশের এবং ভবিষ্যতের প্রস্তুতি নেওয়ার এক বিশাল ক্ষেত্র। এই সময় ক্লাব কার্যক্রমে যুক্ত হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা হতে পারে, যা তাদের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে উল্লেখযো
৩ ঘণ্টা আগে