দেয়ালের রঙে ভবিষ্যতের প্রতিচ্ছবি

প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৪, ০৮: ৩৫

ছাত্র-জনতার সফল এই আন্দোলন ছিল বহুমুখী। মিছিলে উপস্থিত হওয়া ছাড়াও শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে দেয়ালচিত্র আঁকতে। সেগুলোর মাধ্যমে তাঁরা নিজেদের বক্তব্য সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। এ ঘটনা অভাবিত। ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে—দেয়ালের স্লোগান ও ছবিতে সেই ন্যারেটিভ এঁকে দিয়েছে জেনারেশন জেড। সেই গল্প বলেছেন জুবায়ের ইবনে কামাল

একদল শিক্ষার্থী নিজেদের বক্তব্যে রাঙিয়ে দিতে চাইছেন দেয়াল। সে কাজে আগ্রহী যে কেউ যুক্ত হতে পারবেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে—এমন ঘোষণা দিল দলটি। সেই সংবাদের ভিত্তিতে আগ্রহী হলেন গ্রিন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী আজাদ হোসেন। তারুণ্যে উদ্দীপ্ত অনেক টুকরো টুকরো স্লোগান জুড়ে দিলেন সবাই মিলে। এভাবেই রাঙিয়ে তুললেন রাজধানীর ডিবি অফিসের সামনের একটি দেয়াল।

শিক্ষার্থী হিসেবে সুবাহ সামাউন ওহী আন্দোলনের সঙ্গে ছিলেন শুরু থেকে। আন্দোলন শেষে রাজধানীর বিভিন্ন দেয়ালে তিনি ও তাঁর বন্ধুরা মিলে ফিরিয়ে আনলেন ফেলে আসা দিনগুলোকে। অন্যদিকে ওহী নিজেই শখের শিল্পী। আন্দোলনে শহীদ অনেক শিক্ষার্থীর ছবির স্কেচ করেছেন তিনি। পরিকল্পনা করলেন, দেয়ালে ধর্মীয় সম্প্রীতির কথা বলবেন। যেই ভাবা সেই কাজ। বন্ধুদের জানালে রংতুলি নিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগ দিলেন তন্বী, তাবাসসুম, অদীত, অর্ণব, আলভী,মিথি ও তাসনিম।

দেয়ালে লেখা ও ছবির মাধ্যমে নিজেদের বক্তব্য প্রচারের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ শুধু বৈচিত্র্য নয়, এই আন্দোলনকে দিয়েছিল এক ভিন্ন শক্তি। প্রতিবাদী স্লোগান কিংবা ভবিষ্যতের বাংলাদেশের স্বপ্নের কথাই নয়। দেয়ালে উঠে এসেছে কবিতার পঙ্‌ক্তি থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচলিত ব্যঙ্গাত্মক কথা ও চিত্র। সেই সব সময়োপযোগী করে চিত্রিত করেছিল শিক্ষার্থীরা।

দেয়ালে আঁকছেন শিক্ষার্থী মুমতাহিনা করিম মীমক্ষমতার উচ্চ আসন থেকে যে ব্যঙ্গ সাধারণ মানুষের উদ্দেশে করে ছুড়ে দেওয়া হয়েছিল, শিক্ষার্থীরা সেগুলোকে জনসাধারণের পক্ষ থেকে ফিরিয়ে দিয়েছে নতুন বার্তা দিয়ে।

ডিবি অফিসের সামনের দেয়ালের আর্টের সঙ্গে শিক্ষার্থী আজাদ হোসেনকেউ এঁকেছে আন্দোলনে শহীদ এবং ঐতিহাসিক বিভিন্ন চরিত্রের স্কেচ। আবার কেউ এঁকেছেন ক্যালিগ্রাফি। আরবি, ইংরেজি, বাংলা ও আদিবাসী বিভিন্ন ভাষায় দেয়াললিখন হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদেকুন নাহার কথা বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের যে ভাষা, সেটাই মূলত দেয়ালে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা সবাই হয়তো ভালো আঁকতে জানি না

 রুয়েটের সামনে বিচিত্র ক্যালিগ্রাফি এঁকেছেন তানভীর সিদ্দিকী ও তার বন্ধুরাকিন্তু আমাদের ভেতর যে প্রতিবাদ ও স্বপ্ন একই সঙ্গে খেলা করে, তার একটা প্রকাশ ঘটেছে দেয়ালে।’ তিনি জানিয়েছেন, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে দেয়ালে স্লোগান লেখার মতোই এবারের বিপ্লবে বাংলাদেশে দেয়াললিখন কিংবা দেয়ালে আঁকা ছবি প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে সামনে এসেছে।

এসব দেয়াললিখন ও চিত্রের মূল বক্তব্য ছিল বৈষম্যহীন সমাজ চাই। যে সমাজে থাকবে মুক্তচিন্তা, ধর্মীয় সম্প্রীতি এবং বৈষম্যহীন মানুষ। সর্বোপরি আধুনিক বাংলাদেশ কেমন হতে পারে, তার রূপরেখা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত