Ajker Patrika

প্রথম যেদিন খবরে

বিনোদন প্রতিবেদক
আপডেট : ২৮ জুন ২০২১, ২১: ৩০
Thumbnail image

ঢাকা: প্রথম যেদিন পত্রিকায় খবর হয়ে এলেন, সেই দিনের স্মৃতি এখনো তারকাদের মনে জ্বলজ্বলে। প্রথম নাম, প্রথম ছবি—সেই উত্তেজনায় আগের রাতে ঘুমাতে পারেননি অনেকেই। কেউ আবার প্রতীক্ষার প্রহর গুনেছেন দিনের পর দিন। তারকাদের সেই প্রথম খবরের গল্প নিয়ে এ আয়োজন। 

ইচ্ছে করেই বেশি সাক্ষাৎকার দেই না
আলমগীর, চিত্রনায়ক
আমাকে সিনেমায় এনেছিলেন প্রয়াত পরিচালক আলমগীর কুমকুম। ১৯৭২ সালের ঘটনা। কুমকুম ভাই আমাকে ‘চিত্রালী’ অফিসে নিয়ে যান। তখন ‘চিত্রালী’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন সৈয়দ মোহাম্মদ পারভেজ ভাই। তাঁর সঙ্গে পরিচয় হলো। তিনি আমাকে পাঠালেন সহসম্পাদক আহমেদ জামান চৌধুরীর কাছে। আমরা যাঁকে বলতাম আজাচৌ। তিনি আমার সাক্ষাৎকার নিলেন।

দুই-তিন সপ্তাহ পেরিয়ে যায়, কিন্তু ছাপা তো হয় না। অবশেষে একদিন ছাপার অক্ষরে আমার নাম এল। শিরোনাম ছিল–‘আমি আলমগীর জয়যাত্রার পথে নেমেছি’। আরো অনেক দিন পর আজাচৌর সঙ্গে এফডিসিতে একদিন অনেকক্ষণ আড্ডা হলো। সেই আড্ডার পরে লিখলেন–‘আলমগীরের জয়যাত্রা অব্যাহত আছে’।

পুরো অভিনয়জীবনে আমি খুব বেশি সাক্ষাৎকার দিইনি। মনে হতো দর্শক আমার সম্পর্কে যত জানবে, তাদের প্রত্যাশা তত বেড়ে যাবে। সবার প্রত্যাশা পূরণ করার ক্ষমতা আমার নেই।

সুবর্ণা মুস্তাফাপড়াশোনা নিয়েই বেশি ব্যস্ত ছিলাম
সুবর্ণা মুস্তাফা, অভিনেত্রী
পত্রিকায় আমাকে নিয়ে প্রথম লেখা হয়েছিল সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রা’য়। সম্পাদক ছিলেন কবি শামসুর রাহমান। ১৯৭৫ সালের ঘটনা। আব্দুল্লাহ আল মামুন ভাইয়ের নির্দেশনায় ‘বরফ গলা নদী’ করেছিলাম। ‘বিচিত্রা’য় সেটা নিয়ে লেখা বেরিয়েছিল। শিরোনাম ছিল–‘আসলেন, দেখলেন, জয় করলেন’।

খুব খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু এর পরদিন কী যেন পরীক্ষা ছিল। ওটা নিয়ে যে একটু মাতামাতি করব, পড়াশোনার চাপে তা পারছিলাম না। বাবা-মা বারবার পড়তে বসতে বলছিলেন। আমি তো তখন ছোট। অভিনয় করলেও পড়াশোনা নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকতাম।

মিশা সওদাগর

প্রথম খবরটা ছোট করে এসেছিল
মিশা সওদাগর, খল অভিনেতা
ততদিনে অনেকগুলো ছবিতে অভিনয় করেছি, কিন্তু পত্রিকা বা পোস্টার—কোথাও আমার ছবি আসেনি। ১৯৯৪ সালের দিকের ঘটনা। একদিন নরেশ ভুঁইয়া আমাকে ফোন করলেন, ‘তুই কোথায়?’ বললাম, আমি তো এফডিসিতে শুটিং করছি। উনি বললেন, ‘তোর একটা নিউজ করব। তুই কি অফিসে আসবি, নাকি আমি আসব?’ ওই সময় ‘চিত্রালী’তে কোনো শিল্পীর সাক্ষাৎকার আসা বেশ বড় প্রাপ্তি ছিল।

বললাম, ‘আজ শুটিং শেষ করে কালকেই যাব।’ কেউ বিশ্বাস করবে কিনা জানি না, ওই রাতে আমার ঘুম হয়নি। কীভাবে প্রশ্ন করবে, উত্তরটা কত সুন্দরভাবে দিতে পারি, সারা রাত মনে মনে সেই মহড়া করেছি। নিউজটা ছোট করে এসেছিল। নতুন প্রতিভাবান ছেলে–এই ধরনের কিছু লেখা। আর টুকিটাকি কাজের খবর।

তৌকীর আহমেদ

পত্রিকা কিনে সবাইকে দেখালাম
তৌকীর আহমেদ, অভিনেতা ও নির্মাতা
পত্রিকায় আমার প্রথম ছবি এসেছিল ১৯৮৮ সালে। তখন ‘বিচিত্রা’য় বর্ষসংখ্যা বের হতো, যেখানে মঞ্চে আলোচিত ১০ জনের ছবি ছাপা হবে। সে বছর আব্দুল্লাহ আল মামুনের পরিচালনায় আমার অভিনীত ‘তোমরাই’ নাটকটি খুব আলোচিত হয়েছিল।

১০ জনের মধ্যে আমার সাক্ষাৎকারও নেওয়া হলো। ছবি তোলা হলো। কিন্তু কবে ছাপা হবে তা তো জানি না। প্রতিদিন ফার্মগেটে পত্রিকার দোকানে তন্নতন্ন করে খুঁজতাম। আমার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর একদিন ওটা প্রকাশিত হলো।

পত্রিকা কিনে বাড়ির সবাইকে দেখালাম। মানে, আমি পাস। রেজাল্ট নিয়ে গিয়েছি এমন একটা অবস্থা! জানি না, এখন যারা নতুন, তাদের কাছে এই ব্যাপারটা এত রোমাঞ্চকর কি না।

তারিন জাহান

পত্রিকার কাটিংটা যত্ন করে রেখেছিলেন বাবা-মা
তারিন জাহান, অভিনেত্রী
১৯৮৪ সালে পত্রিকায় প্রথম আমার নাম আসে। আমি তখন কুমিল্লায়। একটা নাচের অনুষ্ঠান করেছিলাম। তখন ‘ইত্তেফাক’–এ আমার সাদাকালো ছবি ছাপা হয়েছিল। সঙ্গে চার-পাঁচ লাইনের ছোট্ট লেখা। পত্রিকার কাটিং এখনো আমার কাছে আছে। আমি তো তখন ছোট ছিলাম। এটা যে রেখে দিতে হবে, এমনটা তো একদমই মাথায় ছিল না। পরিবার থেকেই বিশেষ করে বাবা-মা  পত্রিকার কাটিংটা যত্ন করে রেখে দেওয়া হয়েছিল। সেটা এখনো আমার কাছে আছে।

জয়া আহসান

পত্রিকার ফটোশুট কিভাবে করতে হয় সেবারই প্রথম জেনেছি
জয়া আহসান, অভিনেত্রী
‘আনন্দভুবন’ ম্যাগাজিনে প্রথম নিজেকে দেখতে পাই। সেটা ১৯৯৮ সালের ঘটনা। পত্রিকায় কাভার পেজে এসেছিলাম। তখন আমি ওভাবে মিডিয়ায় কাজ শুরুও করিনি। ফটোশুট কী, কীভাবে সাজতে হয়, কীভাবে মেকআপ করতে হয়–কিছুই জানি না।

কীভাবে কোন অ্যাঙ্গেলে দাঁড়াতে হয়, সেটা ওই প্রথম অনেকটা শিখেছি। ওই সময় পত্রিকায় নিজের ছবি আসা মানে অস্কার পেয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা!

তাহসান রহমান খান

একজন বন্ধু আর আমার ছবি বড় করে ছাপা হয়েছিল
তাহসান রহমান খান, সংগীতশিল্পী
ক্লাস ফাইভে পড়ার সময় পত্রিকায় প্রথম আমার ছবি আসে। তখন এসএসসি পরীক্ষায় ছিল বোর্ডস্ট্যান্ড সিস্টেম। আমার বড় ভাই রিশান সারা দেশে প্রথম হয়েছিলেন। যাঁরা প্রথম হতেন, পুরো পরিবারসহ পত্রিকায় তাদের ছবি আসত। সেই সুবাধে ছবিতে আমি ছিলাম।

তবে নিজের কাজ দিয়ে প্রথম পত্রিকার পাতায় আসি ক্লাস নাইনে পড়ার সময়। পহেলা বৈশাখে রমনার বটমূলে গান গাইতাম। একবার আমার আর আমার এক বন্ধুর ছবি পত্রিকায় বড় করে এসেছিল। মনে আছে, পরদিন যখন স্কুলে যাই, বন্ধুরা পেপার কেটে ক্লাসে টানিয়ে রেখেছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী সহকর্মীর সঙ্গে রাতযাপন: হাইটেক পার্কের ডিডি আতিক বরখাস্ত

বাংলাদেশসহ ৩ দেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত সুইজারল্যান্ডের

বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের পদত্যাগ

পদ্মা সেতু ও ড. ইউনূসকে নিয়ে ভারত থেকে শেখ হাসিনার ভাষণ! ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা জানুন

২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন কর্মসূচি শুরু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত