Ajker Patrika

নায়ক ফারুকের জনপ্রিয় ৫টি সিনেমা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ মে ২০২৩, ১৪: ৪৫
নায়ক ফারুকের জনপ্রিয় ৫টি সিনেমা

মারা গেছেন বাংলা চলচ্চিত্রের মিয়াভাই খ্যাত অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় (বাংলাদেশ সময়) সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। 

ফারুক তাঁর অভিনয় জীবন শুরু করেন মাত্র ২৩ বছর বয়সে। ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে তাঁর। অভিনয় জীবনের মোড় ঘুরে যায় ১৯৭৩ সালে খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘আবার তোরা মানুষ হ’ এবং ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘আলোর মিছিল’ চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করে।

১৯৭৫ সালে ‘সুজন সখী’ ও ‘লাঠিয়াল’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য দর্শক হৃদয়ে চিরস্থায়ীভাবে জায়গা করে নেন ফারুক। এ সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পান এ অভিনেতা। জেনে নেওয়া যাক তাঁর জনপ্রিয় ৫টি সিনেমা সম্পর্কে।

আবার তোরা মানুষ হ সিনেমার পোস্টারআবার তোরা মানুষ হ
‘আবার তোরা মানুষ হ’ কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালক খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় ১৯৭৩ সালে মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রটি ফারুক ছাড়াও আরও অভিনয় করেছেন–রাইসুল ইসলাম আসাদ, ববিতা, সরকার ফিরোজ ও খান আতাউর রহমান।

চলচ্চিত্রটি বঙ্গবাণী নামক এক কলেজে সাতজন তরুণ মুক্তিযোদ্ধার দেশপ্রেমের গল্প। যারা মুক্তিযুদ্ধের পরেও দেশপ্রেমের শপথ নিয়ে দেশ পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখে। 

সুজন সখী সিনেমার একটি দৃশ্যসুজন সখী 
সুজন সখী ১৯৭৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা চলচ্চিত্রে ব্যবসাসফল ও আলোচিত রোমান্টিক চলচ্চিত্র। প্রমোদ কর ছদ্মনামে চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার খান আতাউর রহমান। জনতা চিত্র প্রকল্প প্রযোজিত এই চলচ্চিত্রের কাহিনি ও সংলাপ লিখেছেন আমজাদ হোসেন এবং চিত্রনাট্য লিখেছেন পরিচালক খান আতা নিজেই। পারিবারিক দ্বন্দ্বে দুই ভাইয়ের আলাদা হয়ে যাওয়া ও তাদের মিলনের গল্প তুলে ধরা হয়েছে এই চলচ্চিত্রে। এতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ফারুক ও কবরী সারোয়ার।

এ ছাড়া অন্যান্য ভূমিকায় রয়েছেন খান আতাউর রহমান, ইনাম আহমেদ, রওশন জামিল ও সুমিতা দেবী প্রমুখ। চলচ্চিত্রটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের প্রথম আয়োজনে তিনটি বিভাগে পুরস্কার অর্জন করে। ১৯৯৪ সালে চলচ্চিত্রকার শাহ আলম কিরণ অকালপ্রয়াত অভিনেতা সালমান শাহ ও শাবনূর জুটিকে নিয়ে সুজন সখী নামে চলচ্চিত্রটির পুনঃ নির্মাণ করেন।

লাঠিয়াল সিনেমার একটি দৃশ্যলাঠিয়াল
লাঠিয়াল চলচ্চিত্রটি ১৯৭৫ সালের ২২ আগস্ট মুক্তি পায়। চলচ্চিত্র পরিচালক নারায়ণ ঘোষ মিতা ছবিটি প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন। চলচ্চিত্রটিতে ফারুক ছাড়াও বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন–আনোয়ার হোসেন, রোজী আফসারী ও ববিতা।

চলচ্চিত্রটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের প্রথম আসরে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কারসহ ছয়টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। চলচ্চিত্রটিতে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের নায়ক ফারুক শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতার পুরস্কার লাভ করেছিলেন। এ ছাড়া চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা, শ্রেষ্ঠ পরিচালক, শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী, শ্রেষ্ঠ চিত্র সম্পাদনা বিভাগে পুরস্কার অর্জন করেছিল।

সারেং বউ সিনেমার পোস্টারসারেং বউ
সারেং বউ চলচ্চিত্রটি ১৯৭৮ সালে মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন চলচ্চিত্রকার আবদুল্লাহ আল মামুন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থায় নির্মিত এই ছবিটিতে আবদুল জব্বারের কণ্ঠে গাওয়া ‘ওরে নীল দরিয়া’ গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জীবনসংগ্রামের গল্পে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন–ফারুক, কবরী, আরিফুল হক, জহিরুল হক, বিলকিস, বুলবুল ইসলাম, ডলি চৌধুরীসহ আরও অনেকে। সারেং বৌ ছবির সংগীত পরিচালনা করেন বাংলাদেশের বিখ্যাত সংগীত পরিচালক আলম খান।

গোলাপী এখন ট্রেনে সিনেমার পোস্টারগোলাপী এখন ট্রেনে
আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৭৮ সালে। চলচ্চিত্রটিতে নায়ক ফারুক ছাড়াও আরও অভিনয় করেছেন–ববিতা, আনোয়ার হোসেন, রোজী সামাদ, আনোয়ারা, রওশন জামিল, এটিএম শামসুজ্জামান প্রমুখ। মস্কো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এই ছবির প্রদর্শনী হয়। সেসময় ছবিটি দেখে ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন কিংবদন্তি পরিচালক মৃণাল সেন।

চলচ্চিত্রটি ৪র্থ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ মোট ১১টি বিভাগে পুরস্কার লাভ করে। পরবর্তী কালে আমজাদ হোসেন এই ছবির দুটি অনুবর্তী পর্ব ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’ (১৯৯৫) ও ‘গোলাপী এখন বিলাতে’ (২০১০) এবং একটি ডকুফিকশন ‘গোলাপীরা এখন কোথায়?’ নির্মাণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত