পাকিস্তানে ঘোষিত চাল ও তেলের দাম নিয়ে বাংলাদেশে বিভ্রান্তি

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৩: ৫৩
Thumbnail image

পাকিস্তানে আসন্ন রমজান মাসে বাসমতী চালের কেজি ৫ টাকা ও তেল সাড়ে ১২ টাকা দরে বিক্রি হবে- এই সংবাদটি সত্য নয়; বরং সে দেশের সরকার বাজার দরে ওই পরিমাণ ভর্তুকি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

পাকিস্তান সরকার তাদের ইউটিলিটি স্টোরের মাধ্যমে আসন্ন রোজায় নিত্য প্রয়োজনীয় ১৯টি পণ্যের দামে বিশেষ ভর্তুকি প্যাকেজ প্রস্তাব করেছে। সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রস্তাব জাতীয় আর্থিক সমন্বয় কমিটিতে পাঠিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত ভর্তুকির পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৪০ কোটি টাকা।

এই প্যাকেজে রয়েছে আটা, চিনি, বাসমতী চাল, তেল, দুধ, চাপাতি, পানীয়, খেজুর, ঘিসহ ১৯টি নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী।

১৩ মার্চ দৈনিক ইত্তেফাক ও ইনকিলাবে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়- আসন্ন রোজায় পাকিস্তানে বাসমতী চাল ৫ টাকা ও তেল সাড়ে ১২ টাকা দরে বিক্রি করা হবে। পাকিস্তানের জিও নিউজের বরাতে এই সংবাদ প্রকাশ করে এ দুটি সংবাদমাধ্যম। এছাড়াও বিভিন্ন অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে একই শিরোনামের সংবাদ প্রকাশ করে।

১৩ মার্চ দৈনিক ইত্তেফাক তাদের বিশ্ব সংবাদ পাতায় ভুল সংবাদ ছাপায়

এই সংবাদের ভিত্তিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টে মানুষের অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে। রেডিও বিল্লাহ ডটকম নামে একটি পেজে ২ লাখের বেশি মানুষ প্রতিক্রিয়া দেন এমন একটি পোস্টে। এছাড়া বাঁশেরকেল্লা নামের একটি পেজে সাত হাজারের বেশি মানুষ প্রতিক্রিয়া দেন। অধিকাংশ মতামত বাংলাদেশকে কটাক্ষ করে লিখতে দেখা যায়। 

ফ্যাক্ট চেক বিভাগের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে জিও নিউজের কিছু তথ্য বিভ্রান্তিকরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। জিও নিউজের প্রতিবেদনে কিছু পণ্যের দাম উল্লেখ না করে শুধু কত টাকা ভর্তুকি দেওয়া হবে সেটি উল্লেখ আছে। যেমন- চায়ে ৫০ রুপি, দুধে ২০ রুপি, প্রতি কেজি ভোজ্যতেলে ২০ রুপি, খেজুরে ২০ রুপি, প্রতি কেজি ময়দায় ২০ রুপি, প্রতি কেজি বাসমতী চালে ১০ রুপি এবং প্রতি কেজি টোটা চালে ১২ রুপি ভর্তুকি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ এই মূল্যমানগুলো বর্ণিত পণ্যগুলোর মূল্য নয়, বরং এই পরিমাণ অর্থ ওইসব পণ্যে ভর্তুকি হিসেবে দেবে দেশটির সরকার।

জিও নিউজের খবরে ভর্তুকি দেয়ার পর কিছু পণ্যের মূল্য কত হবে সেটিও উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রতি কেজি চিনির দাম হবে ৬৮ রুপি, ২০ কেজির আটার বস্তার দাম হবে ৮০০ রুপি এবং প্রতি কেজি ঘির দাম হবে ২০০ রুপি।

জিও নিউজে ৪ মার্চ প্রকাশিত সংবাদটির স্ক্রিনশট

জিও নিউজ আরও বলেছে, সরকার ৬৩০ কোটি রুপির ভর্তুকি প্যাকেজ হাতে নিয়েছে যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৪০ কোটি টাকা। ২১ মার্চে আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে দরের হিসাবে জানা যায়, পাকিস্তানি ১ রুপি বাংলাদেশের ৫৪ পয়সার সমান। বাংলাদেশি টাকায় পণ্যগুলোর মূল্যমান হবে যথাক্রমে প্রায় ৩৮, ৪৩০ এবং ১১০ টাকা।

কয়েকটি অনলাইন শপের ওয়েবসাইটে ঢুকে জানা যায়, পাকিস্তানে বর্তমানে এক কেজি বাসমতী চাল বিক্রি হচ্ছে ১৩০ রুপির বেশি দামে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত