Ajker Patrika

রমজানে স্বাস্থ্য সমস্যা

মো. আরমান বিন আজিজ
আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২২, ১৩: ০৮
রমজানে স্বাস্থ্য সমস্যা

সারা দিন রোজা পালনের পর অনেক ব্যক্তির শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। অনেকে এ ধরনের সমস্যা হওয়ার কারণে রোজা পালন থেকে বিরত থাকেন। তবে নিয়ম মেনে রোজা পালন করলে তা শরীরের জন্য উপকারী।

বুকজ্বালা বা হার্ট বার্ন
হার্ট বার্ন বা বুকজ্বালা পরিচিত একটি রোগ। খাবার হজম করার জন্য পাকস্থলীতে সব সময় অ্যাসিড থাকে। খাদ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়াও এই অ্যাসিডের প্রভাবে মারা যায়। কোনো কারণে প্রয়োজনের অতিরিক্ত অ্যাসিড তৈরি হলে বা পাকস্থলীতে খাবার না থাকায় অ্যাসিড নিঃসরণ হলে অথবা পাকস্থলী থেকে অ্যাসিড ইসোভেগাসে বা খাদ্যনালীর অংশে চলে এলে বুক জ্বলে। রোজার সময় এই হার্ট বার্ন বা বুকজ্বালা সমস্যাটি অনেকেরই হয়।

এ ধরনের সমস্যা নিরাময়ের জন্য বাজারে বিভিন্ন ওষুধ রয়েছে। সাহরি খাওয়ার সময় এ জাতীয় ওষুধ খেলে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। তবে ওষুধ খেয়ে এ সমস্যা দূর করার চেয়ে খাদ্যাভ্যাসে কিছুটা পরিবর্তন আনাই ভালো। এ জন্য যা করতে পারেন:

  • তৈলাক্ত খাবার, ভাজাপোড়া, বাসি ও অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার পরিহার করুন
  • ধূমপান বাদ দিন
  • টক ঢেকুর উঠলে ও বুক জ্বালা করলে শোয়ার সময় একটু উঁচু বালিশ ব্যবহার করুন
  • যাঁদের আগে থেকে হার্ট বার্ন বা বুক জ্বলা সমস্যা আছে তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শে গ্যাসের ওষুধের মাত্রা বাড়াতে পারেন।

মাথাব্যথা
মাথাব্যথা হয়নি এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।

মাথাব্যথার কারণ

  • পানিশূন্যতা
  • ক্ষুধা
  • ঘুম ও বিশ্রাম রেস্ট কম হওয়া
  • চা, কফি পান না করা।

রোজায় এ ধরনের কারণ বেশি ঘটে থাকে। তাই এ সময় অনেকেই এ সমস্যায় ভোগেন। এ সমস্যা থেকে দূরে থাকতে,

  • প্রতিদিন ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত পানি ও ফ্রুটজুস জাতীয় তরল খাবার বেশি বেশি খেতে পারেন
  • মাথাব্যথার সমস্যা যাদের নিয়মিত হয় তাঁরা সাহরিতে প্যারাসিটামল খেতে পারেন
  • যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ মতো রোজা রাখবেন।

কোষ্ঠকাঠিন্য বা কনস্টিপেশন
কনস্টিপেশন বা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যাটি অন্যান্য সময়ের চেয়ে রোজায় বেশি দেখা যায়। পানিশূন্যতা ও আঁশযুক্ত খাবার কম খাওয়ার ফলে এ সমস্যাটি দেখা দেয়। শাকসবজি, ফলমূল, ইসবগুলের ভুসি, লাল আটা ও ঢেঁকিছাঁটা চাল এ সমস্যা প্রতিরোধ করে থাকে। এরপরও সমস্যা থাকলে ল্যাক্সেটিভ ওষুধ খেতে পারেন। দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় অবশ্যই সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন মা
অনেকের মতে, রোজা রাখার ফলে মায়ের বুকের দুধের পরিমাণ কমে যায়। ফলে সন্তান দুধ থেকে বঞ্চিত হয় ভেবে অনেক মা রোজা পালন থেকে বিরত থাকেন। তবে চিকিৎসকদের মতে, এ ধরনের কোনো কথার ভিত্তি নেই। তবে রোজা পালনকারী মাকে অবশ্যই সাহরি ও ইফতারে প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খেতে হবে এবং শোয়ার আগ পর্যন্ত ঘণ্টায় ঘণ্টায় অল্প অল্প করে পানি খেতে হবে।

যেকোনো স্বাস্থ্য সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিনঅ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট
রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকলে অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের রোগীদের রোজা রাখতে কোনো বাধা নেই। অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের পরামর্শ হলো, সাহরি ও ইফতারের সময় ইনহেলার নিতে হবে। হঠাৎ তীব্র শ্বাসকষ্ট হলে দেরি না করে রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে।

চোখের ছানি
চোখে ড্রপ দিলে তা অনেক সময় মুখে চলে যেতে পারে, যা রোজার জন্য ক্ষতিকর। খেয়াল করলে দেখবেন, কিছু কিছু ড্রপ চোখে দেওয়ার পর গলায় তেতো স্বাদ অনুভূত হয়। চোখে ড্রপ নেওয়ার সময় নাকের পাশে চোখের ভেতরের কোনায় চেপে ধরলে নালিটি কিছুটা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ওষুধ নাকে বা গলায় যাওয়ার কোনো আশঙ্কা থাকে না। সে ক্ষেত্রে রোজা রেখে আপনি অনায়াসে চোখে ড্রপ দিতে পারেন। প্রয়োজনে পদ্ধতিটি রপ্ত করার জন্য আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নির্দেশনা
রমজানের সুশৃঙ্খল জীবন যাপন এবং ইবাদত বন্দেগি, ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়াবেটিস ও ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। রমজানের ফরজ রোজাকে সঠিকভাবে পালনের জন্য রোজার আগে থেকে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রস্তুতি নিন। ডায়াবেটোলজিস্টই ডায়াবেটিস রোগীর হাইপোগ্লাইসেমিয়া না হওয়ার জন্য খাদ্য, ব্যায়াম ও ওষুধের সমন্বয় করে দেবেন।

 খেয়াল রাখবেন

  • রোজায় নিজে নিজে ডায়াবেটিসের ওষুধ সমন্বয় করবেন না, এতে মারাত্মক পরিণতি হতে পারে।
  • সাহরির খাবার শেষ সময়ের কিছু আগে খেয়ে নিন।
  • ইফতারে বেশি চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন।
  • রোজায় দিনের বেলায় ব্যায়াম করবেন না। তাতে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে।
  • রোজায় রাতের বেলায় পর্যাপ্ত পানি, সম্ভব হলে ডাবের পানি, কম মিষ্টি রসাল ফল এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।

যাঁদের রোজা রাখা উচিত হবে না

  • রমজান শুরুর তিন মাস আগে যাঁদের মারাত্মক হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়েছিল।
  • যাঁদের বারবার হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়।
  • হাইপোগ্লাইসেমিয়া হচ্ছে কিন্তু রোগী বুঝতে পারছেন না।
  • যাঁদের ডায়াবেটিস সব সময়ই বাড়তি থাকে।
  • রমজানের তিন মাস আগে কিটোএসিডোসিস হয়ে থাকলে।
  • টাইপ-১ ডায়াবেটিস।
  • হঠাৎ অসুস্থ হলে।
  • যাঁরা খুব বেশি কায়িক পরিশ্রম করেন।
  • গর্ভবতী।
  • ডায়ালাইসিস রোগী।
  • ডায়াবেটিস ১৫০-৩০০ মিলিগ্রাম পার ডেসিলিটার হলে।
  • কিডনি সমস্যাজনিত রোগ থাকলে।
  • জটিল হৃদ্‌রোগ ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগী।
  • ইনসুলিন বা সালফোনাইল ইউরিয়া ব‍্যবহারকারী রোগী।
  • বার্ধক্যজনিত অসুস্থ রোগী।
  • মানসিক ভারসাম্য পরিবর্তন হওয়ার মতো ওষুধ সেবনকারী রোগী।

রোজা কখন ভাঙা জরুরি

  • রক্তে চিনির মাত্রা ৩ দশমিক ৩ মিলি মোল বা লিটারের নিচে নেমে গেলে অথবা সাহরির প্রথম কয়েক ঘণ্টায় ৩ দশমিক ৯ মিলি মোল বা লিটারের নিচে নামলে।
  • হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ, যেমন বুক ধড়ফড় করলে, বেশি ঘাম হলে, শরীর কাঁপতে থাকলে, মাথা ঘোরালে, খিঁচুনি হলে বা অজ্ঞান হয়ে গেলে।
  • রক্তে সুগার ১৬ দশমিক ৭ মিলি মোল বা লিটারের বেশি থাকলে অথবা অসুস্থ থাকলে। 

যখন অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া জরুরি

  • অতিরিক্ত ডায়রিয়া বা বমি হলে
  • শ্বাস নিতে কষ্ট বা শ্বাস দ্রুত হলে
  • পেটে ব্যথা হলে
  • প্রস্রাবে কিটোন থাকলে
  • চিন্তা ও আচরণ এলোমেলো এবং অসংলগ্ন হলে

 রোজা রেখে যা করা যাবে, যা করা যাবে না
রোজা রাখা অবস্থায় চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে কী কী করা যাবে আর কী কী করা যাবে না, তা নিয়ে সাধারণ রোগীদের মধ্যে জ্ঞান ও সচেতনতার অভাব রয়েছে। অন্যদিকে নানান সংশয় ও বিভ্রান্তি রয়েছে চিকিৎসকদের মাঝেও। এ সব বিভ্রান্তি দূর করার জন্য ১৯৯৭ সালের জুন মাসে মরক্কোয় অনুষ্ঠিত নবম ফিকাহ চিকিৎসা সম্মেলন থেকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ সম্মেলনে জেদ্দা ইসলামিক ফিকাহ অ্যাকাডেমি, আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আলেকজান্দ্রিয়া, মিশর ও ইসলামিক শিক্ষা বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থার (আইএসইএসসিও) বিজ্ঞ প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। সে সম্মেলনের মূল আলোচনার বিষয় ছিল, রোজা অবস্থায় যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ওষুধ প্রয়োগে রোজা নষ্ট হবে না সে বিষয়ে একটা সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া। এ লক্ষ্যে ইসলামিক চিন্তাবিদগণ চিকিৎসা বিজ্ঞান সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা ও গবেষণা করে রোজা অবস্থায় ওষুধ প্রয়োগ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পর্কে সুচিন্তিত তথ্য উপস্থাপন করেন। ২০০৪ সালে বিখ্যাত ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ হিসেবে তা প্রকাশিত হয়।

তবে নাকের ড্রপের ব্যাপারে অনেক স্কলার আপত্তি করেন। অনেক সময় এসব ফিকাহী বিষয়ে বিভিন্ন স্কলারদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে। সব স্কলারের মতামতের প্রতিই আমাদের শ্রদ্ধা থাকা প্রয়োজন।

  • রোজা অবস্থায় চোখ ও কানের ড্রপ ব্যবহার করা যাবে।
  • রোজা অবস্থায় ইনহেলার-স্প্রে ব্যবহার করা যাবে।
  • হার্টের এনজাইনার সমস্যার জন্য বুকে ব্যথা উঠলে ব্যবহৃত নাইট্রোগ্লিসারিন ট্যাবলেট বা স্প্রে জিহ্বার নিচে ব্যবহার করলে রোজা নষ্ট হবে না।
  • রোজা রেখে শিরাপথে খাদ্য উপাদান ছাড়া কোনো ওষুধ ত্বক, মাংসপেশি বা হাড়ের জোড়ায় ইনজেকশন হিসেবে প্রয়োগ করলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না।
  • রোজা রাখা অবস্থায় স্যালাইন বা গ্লুকোজ জাতীয় কোনো তরল শিরাপথে গ্রহণ করা যাবে না।
  • চিকিৎসার প্রয়োজনে রোজা রেখে অক্সিজেন কিংবা চেতনা নাশক গ্যাস গ্রহণে রোজা নষ্ট হবে না।
  • চিকিৎসার প্রয়োজনে ক্রিম, অয়েন্টমেন্ট, ব্যান্ডেজ, প্লাস্টার ইত্যাদি ব্যবহার করলে এবং এ সব উপাদান ত্বকের গভীরে প্রবেশ করলেও রোজার কোনো সমস্যা হবে না।
  • রোজা রেখে দাঁত তোলা যাবে। দাঁতের ফিলিং ও ড্রিল ব্যবহার করা যাবে। এ ছাড়া দাঁত পরিষ্কার করার সময় অসাবধানতাবশত কিছু গিলে ফেললে রোজা নষ্ট হবে না।
  • রোজা রেখে রক্ত পরীক্ষার জন্য রক্ত দিতে বাধা নেই।
  • কাউকে রক্তদানে ও রক্ত গ্রহণেও বাধা নেই। তবে খেয়াল রাখতে হবে, রক্তদাতা যাতে পরে দুর্বল হয়ে না যান।
  • চিকিৎসার জন্য যোনিপথে ট্যাবলেট কিংবা পায়ুপথে সাপোজিটোরি ব্যবহার করলে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না।
  • পরীক্ষার জন্য যোনিপথ কিংবা পায়ুপথে চিকিৎসক বা ধাত্রী আঙুল প্রবেশ করালেও রোজার সমস্যা হবে না।
  • রোজা রেখে জরায়ু পরীক্ষার জন্য হিস্টেরোস্কপি এবং আই. ইউ. সি. ডি ব্যবহার করা যাবে।
  • হার্ট কিংবা অন্য কোনো অঙ্গের এনজিওগ্রাফি করার জন্য কোনো রোগ নির্ণয়কারক দ্রবণ শরীরে প্রবেশ করানো হলে রোজার ক্ষতি হবে না।
  • কোনো অঙ্গের অভ্যন্তরীণ চিত্রধারণের জন্য সেই অঙ্গের প্রবেশপথে কোনো ক্যাথেটার বা নালির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তরল রঞ্জক প্রবেশ করালে রোজা নষ্ট হবে না।
  • রোগ নির্ণয়ের জন্য এন্ডোস্কোপি বা গ্যাস্ট্রোস্কোপি করলেও রোজা নষ্ট হয় না। তবে এন্ডোস্কোপি বা গ্যাস্ট্রোস্কোপি করার সময় ভেতরে তরল কিংবা অন্য কোনো কিছু প্রবেশ করানো যাবে না যার খাদ্যগুণ রয়েছে।
  • রোজা রাখা অবস্থায় না গিলে মাউথওয়াশ, মুখের স্প্রে ব্যবহার করা যাবে এবং গড়গড়া করা যাবে।
  • রোজা রাখা অবস্থায় লিভারসহ অন্য কোনো অঙ্গের বায়োপসি করা যাবে।
  • রোজা রাখা অবস্থায় পেরিটোনিয়াল কিংবা মেশিনে কিডনি ডায়ালাইসিস করা যাবে।

রমজান মাস আত্মশুদ্ধি ও আত্মোপলব্ধির মাস। আমাদের প্রত্যেকের উচিত বরকতময় এ মাসে নিজেদের আত্মশুদ্ধির পাশাপাশি পরিবার, সমাজ তথা দেশকে ভালো রাখার চেষ্টা করা।

লেখক: সাবেক ফ্যাকাল্টি ও প্রশিক্ষক, চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, চট্টগ্রাম

রমজান মাস সম্পর্কিত পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত