Ajker Patrika

সেকেন্ড হোম হিসেবে মালয়েশিয়ায় চীনাদের ভিড় বাড়ছে

অনলাইন ডেস্ক
স্থানীয় রিয়েল এস্টেট এজেন্টরা জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে তাঁদের ৮০ শতাংশ গ্রাহকই চীনা নাগরিক। ছবি: মালয়েশিয়া নাউ
স্থানীয় রিয়েল এস্টেট এজেন্টরা জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে তাঁদের ৮০ শতাংশ গ্রাহকই চীনা নাগরিক। ছবি: মালয়েশিয়া নাউ

সেকেন্ড হোম হিসেবে মালয়েশিয়ায় চীনা নাগরিকদের স্থায়ী বসবাসের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দেশটির দীর্ঘমেয়াদি ভিসা কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে দেশটির জাতিগত সম্পর্ক ও রাজনৈতিক পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

সিঙ্গাপুরের দ্য স্ট্রেইটস টাইমস জানিয়েছে, সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মূল ভূখণ্ডের ২৬ হাজার ১৬২ জন চীনা নাগরিক এমএম২ এইচ কর্মসূচির আওতায় মালয়েশিয়ায় স্থায়ী হয়েছেন। ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত এ কর্মসূচিতে থাকা মোট ৫৭ হাজার ৬৮৬ অংশগ্রহণকারীর মধ্যে চীনা নাগরিক ৪৫ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন, তাইওয়ান ও হংকং থেকে আসা অভিবাসীদের সংখ্যাই বেশি। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ২ হাজার ১৯৫ নতুন আবেদনকারীর মধ্যে ৫৩ শতাংশ ছিলেন চীনা নাগরিক। তাঁরা স্থানীয় ব্যাংকে ৬৭৫ মিলিয়ন রিঙ্গিত জমা রেখেছেন এবং ৬৮১ মিলিয়ন রিঙ্গিত মূল্যের সম্পত্তিও কিনেছেন।

কেন মালয়েশিয়ায় চীনা অভিবাসন বাড়ছে?

সস্তায় আবাসন সুবিধা এবং চীনের ব্যস্ত জীবনযাত্রা থেকে মুক্তি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা অনেক চীনা নাগরিককে মালয়েশিয়ায় আসতে উদ্বুদ্ধ করছে। তবে দেশটির বর্তমান সরকার পর্যটন বাড়াতে চীন থেকে ব্যাপকসংখ্যক নাগরিককে আকৃষ্ট করার যে নীতি গ্রহণ করেছে, তা নিয়ে সমালোচনা রয়েছে।

২০২৩ সালে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, গত তিন বছরে চীনা অভিবাসীদের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে—২০২২ সালে ৮২ হাজার থেকে ২০২৪ সালে দেড় থেকে ২ লাখে পৌঁছেছে।

এমএম২ এইচ কর্মসূচি নিয়ে বিতর্ক

এমএম২ এইচ কর্মসূচি মালয়েশিয়ায় দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে চালু হলেও এটি এখন বিতর্কিত হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের প্রশাসন এটি পর্যটন মন্ত্রণালয়ের আওতায় এনেছে, যা ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে।

এ কর্মসূচির আওতায় অংশগ্রহণকারীরা ৫ মিলিয়ন রিঙ্গিত স্থায়ী আমানত রেখে মালয়েশিয়ায় ২০ বছর পর্যন্ত বসবাস ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ পান। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীনা নাগরিকদের সংখ্যা বাড়তে থাকলে আবাসন-সংকট সৃষ্টি হতে পারে। নির্মাতারা বেশি লাভজনক বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট বানাচ্ছেন, যা স্থানীয় নাগরিকদের জন্য আবাসন-সংকট সৃষ্টি করতে পারে।

সমালোচকেরা সতর্ক করেছেন, মালয়েশিয়াকে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের মতো সমস্যায় পড়তে হতে পারে, যেখানে চীনা অভিবাসীদের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমন্বয়ের জটিলতা দেখা দিয়েছে।

মাহাথিরের উদ্বেগ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ গত বছর চীনা অভিবাসীদের সংখ্যা বাড়তে থাকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় স্থানীয় চীনা জনগোষ্ঠীর উপস্থিতির কারণে মূল ভূখণ্ডের অভিবাসীদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে তাঁরা সহজেই অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অন্যান্য দেশের অভিবাসীদের সহজেই শনাক্ত করা যায়; কিন্তু চীনা অভিবাসীদের ক্ষেত্রে তা সম্ভব হয় না।’

পেনাংয়ে ‘লিটল চায়না’

চীনা অভিবাসনের সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে পেনাং প্রদেশে। স্থানীয় রিয়েল এস্টেট এজেন্টরা জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে যেখানে তাঁদের চীনা গ্রাহক ছিলেন না, সেখানে ২০২৪ সালে তাঁদের ৮০ শতাংশ গ্রাহকই চীনা নাগরিক।

এদিকে আন্তর্জাতিক স্কুলগুলোতে চীনা শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ক্লাসপ্রতি সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে।

মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি সায়েন্স মালয়েশিয়ার কাছের একটি এলাকায় গত কয়েক বছরে চীনা রেস্তোরাঁর সংখ্যা ২ থেকে বেড়ে ১০ হয়েছে। চলচ্চিত্র নির্মাতা ট্যাং সিয়াং চিং বলেছেন, যদিও এখন আরও বেশি পছন্দের সুযোগ রয়েছে। তবে এ প্রবণতা স্থায়ী হবে কি না, তা নিয়ে তিনি চিন্তিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচনের আগে জোট নয়, এনসিপির সঙ্গে কাজ করার ইঙ্গিত বিএনপির

জয়পুরে সম্প্রীতির নজির, ঈদগাহে আসা মুসলিমদের ওপর ফুল ছিটালেন হিন্দুরা

বাসা ভাড়ার টাকা নেই, অফিসের টয়লেটেই থাকছেন চীনা তরুণী

ঈদের মোনাজাতে খালেদা জিয়ার নাম না বলায় ইমামকে হেনস্তা, চাকরিচ্যুতির হুমকি

কোম্পানি দেউলিয়া, দেড় কোটি মানুষের ডিএনএ ডেটার এখন কী হবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত