হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী 

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২০ মে ২০২৪, ১০: ০৯
আপডেট : ২০ মে ২০২৪, ১৭: ২৫

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় আজ সোমবার সকালে ইরানি সংবাদমাধ্যম তেহরান টাইমসের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় রাইসি ও আমির আবদুল্লাহিয়ান বহনকারী হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সও একই তথ্য জানিয়েছে। 

তেহরান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এক মর্মান্তিক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ অন্য কর্মকর্তারা প্রাদেশিক রাজধানী শহর তাবরিজের পথে প্রাণ হারিয়েছেন।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইরানি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ‘দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট রাইসির হেলিকপ্টারটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে...দুর্ভাগ্যবশত, সব যাত্রী নিহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করছি।’ 

এর আগে, ইরানের রেড ক্রিসেন্টের প্রধান পির হোসেইন কোলিবান্দ জানিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ অন্য নেতাদের বহনকারী হেলিকপ্টারটির কেবিন আগুনে পুড়ে গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর উদ্ধারকারীদের বরাত দিয়ে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন জানিয়েছিল—হেলিকপ্টারটিতে প্রাণের কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ইরানে রেড ক্রিসেন্টের প্রধান পির হোসেইন কোলিবান্দ বলেছেন, ‘উদ্ধারকারী দল দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। আর কয়েক মিনিটের মধ্যেই হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে উদ্ধারকারী দল। আমরা উদ্ধারকারীদের কাছ থেকে ভিডিও পাচ্ছি। তাঁরা বলছেন, হেলিকপ্টারের পুরো কেবিন গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত ও পুড়ে গেছে। এখন পর্যন্ত দুর্ঘটনাস্থলে জীবনের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি।’ 

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান। ছবি: সংগৃহীতইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের বরাত দিয়েও একই কথা জানিয়েছে রেডিও ফ্রি ইউরোপ। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন বলেছে, দুর্ঘটনাস্থলে হেলিকপ্টারটির ধ্বংসস্তূপের মধ্যে প্রাণের বা জীবনের কোনো চিহ্ন দেখতে পাননি উদ্ধারকারীরা। 

এর আগে গতকাল রোববার সন্ধ্যার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পাহাড়ি এলাকায় বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে অবতরণের সময় আছড়ে পড়ে হেলিকপ্টারটি। ওই হেলিকপ্টারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমাতি, তাবরিজের জুমার নামাজের খতিব হোজ্জাতোলেস্লাম আল হাশেম এবং আরও কয়েকজন আরোহী ছিলেন। 

দুর্গম পাহাড়ের যে অংশে পতিত হয়েছিল হেলিকপ্টারটি। ছবি: ইরনা রাইসির হেলিকপ্টারে থাকা একজন কর্মকর্তা এবং ফ্লাইটের একজন ক্রু যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্টের নির্বাহী বিভাগের ডেপুটি মোহসেন মানসুরি। তিনিই এই অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানের দেখভাল করছেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে মোহসেন বলেন, ‘এটা একটা আশার কথা। এতে বোঝা যায়, ঘটনা অতটা গুরুতর নয়, কারণ ওই ফ্লাইটের দুই ব্যক্তি আমাদের লোকজনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করতে পেরেছেন।’ 

মানসুরি বলেন, প্রেসিডেন্ট রাইসির হেলিকপ্টার এবং আরও দুটি কপ্টার তাবরিজ শহরের পথে যাচ্ছিল। পরে ইরান ও আজারবাইজান উভয় দেশের প্রেসিডেন্ট দুই দেশের সীমান্তে কিজ কালাসি বাঁধ উদ্বোধন করেন। এরপর তাঁদের উড্ডয়নের আধা ঘণ্টার মধ্যে রাইসির হেলিকপ্টারটির সঙ্গে অন্য দুটি কপ্টারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে ওই দুটি হেলিকপ্টার অনুসন্ধান শুরু করে। 

মানসুরি আরও বলেন, প্রেসিডেন্টের সফরসঙ্গীর দুই সদস্য উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। এতে বোঝা যায় ঘটনা গুরুতর নয়। তিনি বলেন, আরেকটি আশাব্যঞ্জক বিষয় হলো, যোগাযোগ মন্ত্রণালয় দুই কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে দুর্ঘটনার অবস্থান নির্ণয় করতে সক্ষম হয়েছে।

আরও পড়ুন—

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত