আফগান কর্মী এবং তাদের পরিবারকে দ্রুত নিরাপদ স্থানান্তরের জন্য সদস্য দেশগুলির সঙ্গে কাজ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। 

ইইউর নির্বাহী কমিশনের মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, 'বিষয়টি অত্যন্ত জরুরী, আমরা এটিকে খুব গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি। দ্রুত সমস্যা সমাধানে ইইউ সদস্য দেশগুলির সঙ্গে কাজ করে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি।'

তবে নিরাপত্তার কারণে স্থানীয় আফগান কর্মীদের পরিসংখ্যান দেয়নি কমিশন।

শাসন কাঠামো তৈরিতে একত্র হচ্ছে তালেবান

নতুন শাসন কাঠামো তৈরির জন্য বিভিন্ন প্রদেশ থেকে পুনরায় একত্রিত হচ্ছে তালেবান যোদ্ধারা। তবে নতুন শাসন কাঠামো তৈরির জন্য বিদেশী বাহিনী চলে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে। না প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন তালেবান নেতার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

ওই নেতা বলেন, তালেবান যোদ্ধাদের 'আফগানদের দৈনন্দিন কাজকর্ম পুনরায় শুরু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বেসামরিক লোকজন ভয় পায় এমন কিছু না করার জন্যও বলা হয়েছে'। সাধারণ মানুষের 'স্বাভাবিক জীবন অনেক ভালো ভাবে চলতে থাকবে, এটুকুই আমি আপাতত বলতে পারি' বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

কাবুল বিমানবন্দরে গোলাগুলিতে কমপক্ষে ৫ জন নিহত: প্রত্যক্ষদর্শী

কাবুল বিমানবন্দরে মার্কিন সেনাদের গোলাগুলিতে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। শত শত মানুষ আফগান রাজধানী ছেড়ে জোরপূর্বক প্লেনে ওঠার চেষ্টা করলে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায় তাঁরা।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, তিনি একটি গাড়িতে পাঁচজনের লাশ নিয়ে যেতে দেখেছেন। আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলছেন, ভুক্তভোগীরা বন্দুকের গুলিতে মারা গেছে নাকি পদদলিত হয়ে মারা গেছেন তাঁর স্পষ্ট নয়।

নাগরিকদের আনতে আফগানিস্তানে সামরিক বিমান পাঠাচ্ছে নিউজিল্যান্ড

নিউজিল্যান্ডের সরকার বলেছে, তাঁরা আফগানিস্তানে একটি সি-১৩০ হারকিউলিস সামরিক পরিবহন বিমান পাঠাচ্ছে। এ বিমানে কাবুল থেকে নিজেদের ৫৩ জন নাগরিক, নিউজিল্যান্ডের সেনাদের সহায়তা করেছেন এমন কয়েক ডজন আফগান নাগরিক ও তাদের পরিবারকে সরিয়ে আনা হবে। 

প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডার্ন গণমাধ্যম আল জাজিরাজে বলেন, তারা এখন পর্যন্ত ৩৭ জন আফগানকে চিহ্নিত করেছেন যারা নিউজিল্যান্ডের সেনাদের সাহায্য করেছে। তবে আশ্রয়প্রাপ্ত এবং অন্যদের নিয়ে ফিরিয়ে আনা যাত্রীর সংখ্যা কয়েক শ হবে। 

প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, তারা কমপক্ষে ৪০ জন সামরিক কর্মী, বিমানের সেবা এবং সুরক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্তরা মিলে একটি মাসব্যাপী মিশনের পরিকল্পনা করেছেন। আর্ডার্ন আরও বলেন, তালেবানরা যে মানুষকে শান্তিপূর্ণভাবে চলে যেতে দিচ্ছে তা 'পুরো বিশ্ব দেখছে'। 

এদিকে সৌদি আরব বলেছে যে তারা কাবুল থেকে নিজেদের সব কূটনীতিকদের সরিয়ে নিয়েছে। 

কাবুল বিমানবন্দরে মার্কিন সেনাদের ফাঁকা গুলি

কাবুল বিমানবন্দরে ফাঁকা গুলি ছুড়েছে মার্কিন সেনারা। একজন কর্মকর্তা এবং একজন প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, শত শত বেসামরিক নাগরিককে টারমাকের দিকে ছুটতে বাধা দিতে এ গুলি ছোড়ে। 

এক মার্কিন কর্মকর্তা ফোনে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন। 'ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। গুলি চালানো হয়েছে শুধুমাত্র বিশৃঙ্খলা ঠেকানোর জন্য।' 

একজন প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, 'আমি খুব ভয় পেয়েছি। তাঁরা বাতাসে প্রচুর গুলি ছুড়ছে'। 

কাবুলের পরিস্থিতি 'স্বাভাবিক', 'প্রতিটি চেক পয়েন্টে তালেবান'

'তালেবানরা রাজধানীর রাস্তার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। আশ্চর্যজনকভাবে কাবুল এখন খুবই শান্ত। তালেবানরা বলছে, তাদের বিশেষ বাহিনীর ১০০০টি ইউনিট বিভিন্ন এলাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা এখন প্রতিটি চেকপয়েন্ট নিয়ন্ত্রণ করছে এবং অতিরিক্ত চেকপয়েন্ট স্থাপন করেছে। আমি কয়েক ডজন তালেবান যোদ্ধাকে পুলিশের গাড়িতে, আফগান সরকারের গাড়িতে কাঁধে বন্দুক নিয়ে রাস্তায় টহল দিতে দেখেছি।' 

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার সংবাদদাতা শার্লট বেলিস এ তথ্য জানিয়েছেন। রাস্তায় তেমন লোকজন না থাকলেও জনজীবন স্বাভাবিক রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। 

তালেবানের একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, 'কাবুলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং তালেবান যোদ্ধারা নিরাপত্তা দিতে ব্যস্ত'। এক টুইট পোস্টে জবিহুল্লাহ মুজাহিদ নামের এক মুখপাত্র বলেন, 'তালেবানরা কাবুলের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ ইউনিট মোতায়েন করেছে। সাধারণ মানুষ মুজাহিদীনদের আগমনে খুশি এবং নিরাপত্তায় সন্তুষ্ট'। 

এরই মধ্যে তালেবানরা সব দূতাবাসকে আশ্বস্ত করেছে যে, কাবুলে বিদেশি নাগরিকেরা কোনো বিপদের সম্মুখীন হবে না।

শঙ্কার মাঝে স্বস্তিদায়ক দৃশ্য

তালেবান যোদ্ধাদের ক্ষমতা দখলের পর প্রথম সকাল দেখল আফগানিস্তান। এই সকালে দেশটিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে আফগান মেয়েদের স্কুলে যাওয়া এই ছবি।

দেশটির অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মাঝে এটি অদ্ভুতভাবে স্বস্তিদায়ক একটি দৃশ্য। এর মাঝেও প্রশ্ন উঠছে, নারী এবং মেয়েদের জন্য এই ধরনের স্বাধীনতা কত দিন স্থায়ী হবে? 

তবে তালেবানরা বলছেন, তাঁদের শাসনে সমাজের সব শ্রেণির নাগরিক স্বাধীনতা থাকবে। এ প্রসঙ্গে বিশ্লেষকেরা বলছেন, সহসাই এই ধরনের প্রতিশ্রুতি বিশ্বাস করা যায় না। 

এদিকে, অনেক আফগান নাগরিক ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন যে আগামী কয়েক মাস কঠিন হতে চলেছে। সন্তানদের আধুনিক স্কুলে পাঠানো খুব সহজে সম্ভব হবে কি না এ নিয়েও তাঁদের শঙ্কা রয়েছে। 

প্রসঙ্গত, ২০০১ সালের আগে পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালে তালেবানরা প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করেছিল। 

বিদেশি ও আফগানদের দেশত্যাগে সহায়তার আহ্বান ৬০ দেশের

বিদেশি নাগরিক এবং আফগানদের মধ্যে যারা আফগানিস্তান ছাড়তে চান তাঁদের যেন নিরাপদে দেশত্যাগে সহায়তা করা হয়। রোববার রাতে ৬০ টিরও বেশি দেশের এক যৌথ বিবৃতিতে তালেবানদের প্রতি এ আহ্বান জানানো হয়েছে। আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে 'অবনতিশীল' উল্লেখ করে এ আহ্বান জানায় দেশগুলো। 

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশটিতে যারা ক্ষমতায় এবং কর্তৃত্বে আছে তারা 'মানুষের জীবন ও সম্পদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও নাগরিক শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের জন্য দায়বদ্ধ'। তাই 'আফগান এবং আন্তর্জাতিক নাগরিকদের মধ্যে যারা প্রস্থান করতে চায় তাদের অবশ্যই এই অনুমতি দেওয়া উচিত। তাঁদের জন্য রাস্তা, বিমানবন্দর এবং সীমান্ত অবশ্যই খোলা থাকতে হবে এবং পরিস্থিতি শান্ত থাকতে হবে'।

যুদ্ধ সমাপ্তির ঘোষণা তালেবানের

তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাঈম যুদ্ধ শেষের ঘোষণা দিয়েছেন। তালেবানের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শান্তিপূর্ণ সম্পর্কের আহ্বান জানানো হয়েছে।

মোহাম্মদ নাঈম আল জাজিরাকে বলেন, আজ আফগান নাগরিক ও মুজাহিদীনদের জন্য মহান দিন। তাঁরা গত ২০ বছরের ত্যাগের ফল পেয়েছে। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা। দেশে যুদ্ধের সমাপ্তি হয়েছে।

মোহাম্মদ নাঈম আরও বলেন, শিগগিরই আফগানিস্তানের নতুন শাসনের ধরন ও রূপরেখা পরিষ্কার হবে। তালেবান বিচ্ছিন্নভাবে থাকতে চায় না। তালেবান শান্তিপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আহ্বান জানায়। যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের সঙ্গে বসতে আমরা সকল দেশ ও অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। 

উল্লেখ্য, চলতি বছর এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই আফগানিস্তান দখলে নিতে শুরু করে তালেবান।

অস্ত্র জমা দিয়ে তালেবানে যোগ দিলেই সাধারণ ক্ষমা

সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে তালেবানের মুখপাত্র সোহেল শাহিন বলেছেন, নতুন যে সরকার গঠন করা হবে সেখানে তালেবানের বাইরে থাকা আফগানদের যুক্ত করা হবে।

প্রাক্তন আফগান সরকারের সদস্যদের নতুন সরকারে যুক্ত করা হবে কিনা এ প্রসঙ্গে সোহেল শাহিন বলেন, কারা থাকবে না থাকবে এ বিষয়ে এই মুহূর্তে বলাটা সমীচীন হবে না। তবে সুপরিচিত কয়েকজনকে রাখার চেষ্টা চলছে। আমরা যেহেতু ইসলামি সরকারের কথা বলেছি সেহেতু তালেবানের বাইরে থাকা আফগানরা সরকারে যুক্ত থাকবে। 

পুলিশ ও সেনা সদস্যদের তালেবান নিরাপত্তা বাহিনীতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সোহেল শাহিন বলেন, যারা অস্ত্র জমা দিয়ে তালেবানে যোগ দেবে তাঁদের সবাইকে সাধারণ ক্ষমা দেওয়া হবে এবং তাঁদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে।

বাইডেনের পদত্যাগ চাইলেন ট্রাম্প

আফগানিস্তান ইস্যুতে বাইডেনের পদত্যাগ দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাইডেনের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, আফগানিস্তানে বাইডেন যা ঘটতে দিয়েছেন এই লজ্জায় তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। 

বাইডেনের কারণে মার্কিন বাহিনীকে খালি হাতে আফগানিস্তান ছাড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ট্রাম্প।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন তিনি প্রেসিডেন্ট থাকলে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার আরও ভিন্নভাবে এবং আরও সফলতার সঙ্গে করতেন।

বাইডেনের প্রশাসন ট্রাম্পের এই দাবির জবাবে বলেছে, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে ট্রাম্পের আমলেই তালেবানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, চলতি বছর এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই আফগানিস্তান দখলে নিতে শুরু করে তালেবান।

জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন বাইডেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই মুখোমুখি অবস্থান নেয় আফগান সরকার ও তালেবান। শেষমেশ আফগান সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানের দখল নিয়েছে তালেবান।

আফগানিস্তানে চলমান সংকট নিয়ে জাতির উদ্দেশে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভাষণ দেবেন। বাইডেন প্রশাসনের এক জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

এর আগে এক বিবৃতিতে জো বাইডেন বলেন, ‘একটা দেশের মধ্যে এভাবে মার্কিন সৈন্যের অবস্থান আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আফগানিস্তানের সেনা বাহিনী যদি দেশের নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ না রাখতে পারে তাহলে আমেরিকান সৈন্য এক বছর কিংবা পাঁচ বছর থাকলে তাতে কোনো যায় আসবে না।’

উল্লেখ্য, চলতি বছর এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই আফগানিস্তান দখলে নিতে শুরু করে তালেবান।

জীবন রক্ষায় তালেবানদের সংযমী হওয়ার আহ্বান জাতিসংঘের মহাসচিবের

আশরাফ গনি সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানের দখল নিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান। দীর্ঘ ২০ বছর পর তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় এল। তালেবানসহ সকল দলকে নাগরিকদের জীবন রক্ষায় সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন এবং মানবিক চাহিদা পূরণ করার বিষয়টি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক।

বিবৃতিতে জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, তালেবানসহ সকল দলকে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলার এবং সকল মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতা সমুন্নত এবং সুরক্ষিত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

উল্লেখ্য, চলতি বছর এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই আফগানিস্তান দখলে নিতে শুরু করে তালেবান।

কাবুলে আরও ১ হাজার সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন ও মিত্র জোটের সেনা এবং মার্কিন দূতাবাসের কর্মীদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে পাঁচ হাজার সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অতিরিক্ত আরও ১ হাজার সেনা পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে আনার কাজে মোট ছয় হাজার সেনা মোতায়েন করল দেশটি। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ৮২ তম এয়ারবোর্ন ডিভিশন থেকে অতিরিক্ত ১ হাজার সেনা পাঠানো হবে। যারা স্ট্যান্ড বাই হিসেবে ছিল।

আফগান ইস্যুতে বৈঠক করবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ

সোমবার সকালে আফগান ইস্যুতে বৈঠক করবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাউন্সিলে ব্রিফ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে গত শুক্রবার এক বক্তব্যে তালেবানকে আফগানিস্তানে তাঁদের আক্রমণ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব। যারা মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আফগানিস্তানকে ছেড়ে গেছে তাঁদের উদ্দেশে কিছু বলবেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান গুতেরেস। 

রক্তপাত এড়াতেই দেশ ছেড়েছি: আশরাফ গনি

মাত্র ১০ দিনেই গোটা আফগানিস্তানের দখল নিয়েছে তালেবান। তালেবানের তোপের মুখে আফগানিস্তান ছেড়ে যান দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি।

দেশ ছাড়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি লিখেছেন, ‘তালেবান প্রেসিডেন্ট প্যালেসে ঢুকে পড়ায় রক্তপাত এড়াতে তিনি দেশ ত্যাগ করেছেন।’

আফগান গনি আরও লেখেন, ‘তালেবান জিতেছে। দেশের সম্পদ, সম্মান এবং জনগণকে রক্ষার দায়িত্ব এখন তাদের।’

আশরাফ গনি এখন কোন দেশে আছেন এই বিষয়টি তিনি তাঁর ফেসবুক পোস্টে নিশ্চিত করেননি। দেশ ছাড়ার পর এটিই তাঁর প্রথম বক্তব্য।

উল্লেখ্য, চলতি বছর এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই আফগানিস্তান দখলে নিতে শুরু করে তালেবান।

কাবুলেই থাকছেন যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত

আফগানিস্তান দখলে নিয়েছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান। সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের। তবে কাবুল থেকে যাবেন না যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত। 

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রোববার মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনকে জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত সেখানেই থাকছেন। আর যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার জন্য কর্মীরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন। 

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, আমরা দূতাবাসের কর্মীদের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছি। কিন্তু আমাদের রাষ্ট্রদূত কাবুলেই থাকবেন।

তালেবানকে স্বীকৃতি না দেওয়ার আহ্বান বরিস জনসনের

আফগানিস্তান দখলে নিয়েছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান। এমন পরিস্থিতিতে তালেবানকে স্বীকৃতি না দেওয়ার জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। আজ রোববার ডাউনিং স্ট্রিটে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই আহ্বান জানান। 

বরিস জনসন বলেন,  আফগানিস্তানের পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়েছে যাচ্ছে।  যুক্তরাজ্য চায় না দেশটি সন্ত্রাসীদের উর্বর ভূমি হোক।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি খুব স্পষ্ট যে নতুন সরকার হতে যাচ্ছে আফগানিস্তানে।  বরিস জনসন জানান, তিনি চাননা বিশ্বের কোনো দেশ সহসাই তালেবানকে স্বীকৃতি দিক। 

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদেরকে আরও জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনাই এখন তাঁর মূল লক্ষ্য এবং যারা যুক্তরাজ্যের সেনাদের সহায়তা করেছেন তাঁদেরকেও ফিরিয়ে আনা হবে। 

এ প্রসঙ্গে জনসন বলেন, বিমানবন্দরে রাষ্ট্রদূত রয়েছে। তিনি বিষয়টি তদারকি করবেন।

কাবুল পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের সতর্কবার্তা

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল বিমানবন্দরে গোলাগুলি হচ্ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন দূতাবাস। আজ রোববার তালেবান কাবুল দখলের পর মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে একটি নিরাপত্তা সতর্কীকরণ বার্তায় এমনটি বলা হয়। 

মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, কাবুলের পরিস্থিতি খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। এছাড়া আফগানিস্তানে যে কোনো মার্কিন নাগরিকদের সহায়তার জন্য অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থাও করেছে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। 

 আফগান প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ তালেবানের দখলে 

আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্টের সরকারি প্রাসাদ দখলে নিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান। আজ রোববার আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি দেশ ছাড়ার পর বাসভবনটি তালেবান সদস্যরা দখলে নেয়। 

তালেবানের পক্ষ থেকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলা হয়, প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সকল কর্মীকে সেটি খালি করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদেরকে সেটি ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

 আশরাফ গনি ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট’: আবদুল্লাহ

আফগানিস্তানের  প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট বলে উল্লেখ করেছেন দেশটির শান্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত শীর্ষ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ।  পাশাপাশি আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য তিনি গনিকে দায়ী করেন।

নিজের ফেসবুক পেজে আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ বলেন, আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট দেশের জনগণকে এই অবস্থায় রেখে দেশ ছেড়েছেন।

তালেবানের তোপের মুখে আফগানিস্তান ছেড়ে গেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি।  কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে। 

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আশরাফ গনি তাজিকিস্তানের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন।

তালেবান কাবুল দখল করায় তেহরানে আফগানিদের বিক্ষোভ 

বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করায় ইরানের রাজধানী তেহরানে বিক্ষোভ করেছেন আফগান নাগরিকরা। আজ রোববার তেহরানের জাতিসংঘের অফিসের সামনে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। 

বিক্ষোভের ভিডিওতে দেখা যায় আন্দোলনকারীরা বলছেন, তাঁরা তালেবানের ধ্বংস হোক বল, ইসলামি শাসন চাই না । কিছু বিক্ষোভকারী পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, পাকিস্তান তালেবানকে সমর্থন দিয়েছে।

তালেবানকে স্বীকৃতি দেয়নি রাশিয়া 

আফগানিস্তানের  নিয়ন্ত্রণ এখন তালেবানের হাতে। তবে রাশিয়া জানিয়েছে, তালেবানকে তাঁরা স্বীকৃতি দেয়নি। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এমনটি জানিয়েছে। 

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আরআইএর প্রতিবেদনে বলা হয়, মস্কো তালেবানকে স্বীকৃতি দেয়নি। এছাড়া আশরাফ গনি রাশিয়ায় আসছেন না। 

কাবুলের বিভিন্ন স্থানে চলছে গোলাগুলি

তালেবানের তোপের মুখে দেশ ছেড়েছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। এরই মধ্যে কাবুলের বিভিন্ন স্থানে গোলাগুলি চলছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স । 

আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, কাবুলের বিভিন্ন স্থানে গুলির আওয়াজ পাওয়া গেছে। 

এদিকে কাবুল থেকে নিরাপত্তা বাহিনী সরে যাওয়ার পর থেকে সেখানে লুটপাট শুরু হয়েছে। তালেবানের পক্ষ থেকে তাদের সদস্যদের এই লুট ঠেকাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

আফগানিস্তানের টিওএলও টিভিকে তালেবানের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, লুট ঠেকাতে যোদ্ধাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কাবুল দখলের পর বন্দীদের ছেড়ে দিচ্ছে তালেবান 

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলের পর পুল-এ-চারখি কারাগারের বন্দীদের ছেড়ে দিয়েছে তালেবান যোদ্ধারা। 

তালেবান সমর্থিত একটি বার্তা সংস্থা এই ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  রোববার তালেবান বাগরাম বিমান ঘাঁটির কারাগারের বন্দীদেরকেও  ছেড়ে দেয়। 

ওই কারাগারে আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্যসহ পাঁচ হাজার কারাবন্দী ছিলেন। 

‘আমি আমেরিকানদের জীবন বাঁচিয়েছি, তবে তাঁরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে’

ওমর( ছদ্মনাম) স্ত্রী এবং শিশুদের নিয়ে বাস করতেন আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে। আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের অনুবাদক হিসেবে পাঁচ বছর কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু এখন সেটি তাঁর জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওমরের শঙ্কা, তিনি এবং তাঁর পরিবারকে তালেবান যোদ্ধাদের হাতে প্রাণ হারাতে হবে । 

বিবিসিকে ওমর বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন যে তোমরা আমাদের পাশে দাঁড়াও আমরা তোমাদের পাশে থাকব। এখন তাঁরা কই? 

ওমর জানান, ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য আবেদন করেছিলেন ওমর। তবে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে দেয়। 

ওমর ধারণা করছেন, যারা মার্কিনিদের পক্ষে অনুবাদক হয়ে কাজ করেছেন তাঁদের কঠোর শাস্তি দেবে তালেবান যোদ্ধারা। 

ওমর বলেন, আমি অনুবাদক হিসেবে অনেক আমেরিকানের প্রাণ বাঁচিয়েছি। কিন্তু তাঁরা এখন আমাদের ছেড়ে যাচ্ছে। এখন আমি এবং আমার পরিবারকে হত্যা করা হবে। 

আফগানিস্তান ছাড়লেন আশরাফ গনি 

তালেবানের তোপের মুখে আফগানিস্তান ছেড়ে গেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি।   কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে। 

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আশরাফ গনি তাজিকিস্তানের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন। জানা গেছে,  তালেবানের সঙ্গে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে আলোচনার জন্য শিগগিরই আফগান সরকারের প্রতিনিধি দল কাতারের রাজধানী দোহায় যাবে। সেখানেই তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয় অবস্থিত। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগান ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহও আফগানিস্তান ছেড়ে গেছেন।  

এর আগে রোববার সকালে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রবেশ শুরু করেন তালেবান যোদ্ধারা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চারদিক দিয়ে কাবুল ঘিরে ফেলেছে তালেবান যোদ্ধারা। 

নারী অধিকারকে সম্মান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি তালেবানের 

তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় এলে নারী অধিকারকে সম্মান দেওয়া হবে। পাশাপাশি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা দেওয়াও হবে। একজন তালেবান মুখপাত্র ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে এমনটি বলেছেন। 

মাত্র ১০ দিনে পুরো আফগানিস্তান দখলে নিল তালেবান যোদ্ধারা। এর আগে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত যখন তালেবান ক্ষমতায় ছিল তখন আফগানিস্তানে শরিয়া আইন মেনে চলা হতো।  ওই আইন অনুযায়ী, ব্যভিচারের শাস্তি ছিল পাথর ছুড়ে মারা, চুরি করলে হাত কেটে ফেলা।  ওই সময় ১২ বছরের বেশি মেয়েরা স্কুলে যেতে পারতেন না বলে জানিয়েছে বিবিসি।  

আজ রোববার একটি বিবৃতিতে তালেবানের মুখপাত্র জানান, নারীরা ঘরের বাইরে একা যেতে পারবেন। তাঁরা নিজেদের কাজ এবং শিক্ষা চালিয়ে যেতে পারবেন। 

তবে আফগানিস্তানের তালেবান নিয়ন্ত্রিত প্রদেশগুলো থেকে এমন খবর আসছে না। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কান্দাহারে ব্যাংকে কর্মরত নারীদেরক তাঁদের পুরুষ আত্মীয়ের কাছে কাজ হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে।   

 আফগানিস্তান নিয়ে পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনবে না যুক্তরাষ্ট্র 

আফগানিস্তান বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবানের দখলে চলে গেলেও দেশটিকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আসবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে এমনটি জানিয়েছেন।

ওই কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়েই আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হবে। তবে দূতাবাসের কর্মীদের সরানোর ক্ষেত্রে যদি তালেবান কোনো বাধা তৈরি করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এদিকে স্থানীয় সময় শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, কোনো দেশের গৃহযুদ্ধে মার্কিন সেনা সদস্যদের উপস্থিতি তাঁর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন আফগান নেতাদেরকে নিজ দেশের জন্য আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। 

কাবুলে রং দিয়ে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে নারীদের ছবি 

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রবেশ করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবানের সদস্যরা। শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য তালেবানের সঙ্গে এরই মধ্যে আলোচনায় বসেছে আফগান সরকার। এমন পরিস্থিতিতে আফগান রাজধানী কাবুলের  একটি দেয়ালে থাকা নারীদের ছবি রং দিয়ে ঢেকে দিতে দেখা গেছে। 

আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম টিওএলও-এর প্রধান লতফুল্লাহ নাজাফিজাদা এমন একটি ছবি টুইট করেছেন। যেখানে দেখা যায়, সাদা রং দিয়ে নারীদের ছবি ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। 

১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যখন তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ছিল তখন দেশটিতে শরিয়া আইন মেনে চলা হতো। ওই আইন অনুযায়ী, ব্যভিচারের শাস্তি ছিল পাথর ছুড়ে মারা, চুরি করলে হাত কেটে ফেলা। 

তালেবানের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা ক্ষমতায় আসলে এই শাস্তি আবারও দেওয়া শুরু হবে কি-না তা আদালতের ওপর নির্ভর করছে। 

কাবুলের চারদিক ঘিরে ফেলেছে তালেবান

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের চারদিক ঘিরে ফেলেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে।  আজ রোববার সকালেই বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির সদস্যরা কাবুলে প্রবেশ করতে শুরু করেন। 

মাত্র ১০ দিনেই আফগানিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর সঙ্গে আফগান রাজধানী কাবুলও দখল করে নিলো তালেবান যোদ্ধারা। 

যদিও এর আগে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, তালেবানদের কাবুল দখলতে ৯০ দিন সময় লাগবে। 

তালেবানের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, কাবুল দখল হলেও বিমানবন্দর এবং হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হবে না। এছাড়া বিদেশিরা চাইলে আফগানিস্তান ছেড়ে যেতে পারেন বলেও তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

কাবুল ছেড়ে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা 

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রবেশ করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান। আজ রোববার স্থানীয় সময় সকালে তালেবান সদস্যরা কাবুলে প্রবেশ শুরু করেন। 
এদিকে তালেবান যোদ্ধারা প্রবেশের পরপরই কাবুল ছাড়তে শুরু করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা । 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাবুলের বের হওয়ার রাস্তায় দীর্ঘ গাড়ির সারি দেখা গেছে। ব্যাংকগুলো থেকেও বাসিন্দাদের সঞ্চয় তুলে নিতে দেখা গেছে।  

আফগানিস্তানের সংসদ সদস্য ফারজানা কোচাই বিবিসিকে বলেন,  আমি বাড়িতে আছি এবং মানুষকে পালাতে দেখছি। আমি জানি না তাঁরা কোথায় যেতে চাইছে। এটা হৃদয়বিদারক দৃশ্য। 

এদিকে আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান জানিয়েছে, তারা তোর্খাম সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। এর মান্যে দাঁড়াচ্ছে, কাবুল বিমানবন্দর ছাড়া দেশটি ছাড়ার আর কোনো উপায় নেই। 

একজন বাসিন্দা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, কিছু লোক গাড়ির চাবি রেখে বিমানবন্দরে দিকে যেতে শুরু করেছেন। 

ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে আলোচনায় তালেবান ও আফগান সরকার 

শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান এবং আফগান সরকারের মধ্যে আলোচনা চলছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে। 

আজ রোববার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রবেশ করেছেন তালেবান যোদ্ধারা। 

তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তাদের যোদ্ধা কোনো সংঘাতে যাবে না। আর যারা কাবুল ছাড়তে চায় তাঁদেরকে শহরটি ছাড়ার সুযোগ দেবে।

শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হবে: আফগান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী 

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রবেশ করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবানের সদস্যরা। এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে বলে আফগান সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। 

এ নিয়ে রেকর্ড করা ভাষণে আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল সাত্তার মির্জাকওয়াল বলেন, আফগান জনগণের চিন্তার কিছু নেই। এই শহরে কোনো হামলা হবে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। 

আফগানিস্তানে সংঘাত থামাতে আলোচনার আহ্বান পোপ ফ্রান্সিসের 

আফগানিস্তানে চলমান সংঘাত থামাতে বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান এবং সরকারকে আলোচনায় বসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন রোমান ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। ভ্যাটিকান সিটিতে পর্যটক এবং তীর্থযাত্রীদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের সময় তিনি এই আহ্বান জানান।  

পোপ ফ্রান্সিস বলেন, আমি আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে সবারমতোই চিন্তিত । আমি আপনাদেরকে  শান্তির জন্য  ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে বলছি যাতে সংলাপের টেবিলে সমাধান পাওয়া যায়।

আফগানিস্তান ছেড়ে পালাননি আশরাফ গনি

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে ঢুকতে শুরু করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান। তবে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি এখনো দেশটিতেই রয়েছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে। 

আশরাফ গনির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, আশরাফ গনি এখনো আগানিস্তানেই আছেন। তিনি আজ রোববার সকালের বেশির ভাগ সময়ই তাঁর সরকারি বাসভবনের বাগানে কাটিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে আফগানিস্তানের ফার্স্ট লেডিও ছিলেন। 

এদিকে স্থানীয় সময় শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, কোনো দেশের গৃহযুদ্ধে মার্কিন সেনা সদস্যদের উপস্থিতি তার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আজ রোববার তালেবান সদস্যরা কাবুলে ঢুকে পড়া পরই হেলিকপ্টারে করে কাবুল ত্যাগ করেছেন সেখানে নিযুক্ত মার্কিন কূটনীতিকেরা।