শান্তিচুক্তি চাইলে কুরিল দ্বীপপুঞ্জের দাবি ছাড়তে হবে, জাপানকে রাশিয়া

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ১০: ৩৯
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ১১: ২৫

জাপান যদি রাশিয়ার সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শত্রুতা আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ করে শান্তিচুক্তি করতে চায় তবে তাদের (জাপানের) আঞ্চলিক দাবি বাদ দিতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার এ কথা বলেছেন রুশ সিকিউরিটি কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান এবং রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ।

বিরোধপূর্ণ কুরিল দ্বীপপুঞ্জকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে বিবাদের অবসান করে শান্তিচুক্তির কথা বলেছিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। তার জবাবে সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জাপানের প্রতি কুরিল দ্বীপপুঞ্জের দাবি ছেড়ে দেওয়া ছাড়াও বেশ কিছু তির্যক মন্তব্য করেছেন মেদভেদেভ। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

কুরিল দ্বীপপুঞ্জের ওপর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দখলদারির কারণে জাপান ও রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শত্রুতা এখনো শেষ করেনি। কুরিল দ্বীপপুঞ্জে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে সামরিক ঘাঁটি সংরক্ষণ করে এসেছে রাশিয়া এবং সেখানে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রও মোতায়েন রয়েছে।

জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপ থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বিরোধপূর্ণ এই অঞ্চল—যাকে রাশিয়া কুরিল দ্বীপপুঞ্জ বলে। অন্যদিকে, জাপান এর নাম দিয়েছে উত্তরাঞ্চলীয় ভূখণ্ড। কুরিল দ্বীপপুঞ্জ জাপানের উত্তর প্রান্তে এবং রাশিয়ার পূর্বতম প্রান্তে ওখোটস্ক সাগরে অবস্থিত।

উভয় দেশের কূটনীতিকরা সোভিয়েত যুগের একটি খসড়া চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন। সেখানে শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে কুরিল দ্বীপপুঞ্জের চারটি দ্বীপের মধ্যে দুটি জাপানকে ফিরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তবে ইউক্রেনে আগ্রাসনের কারণে রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা দেয় জাপান।

রাশিয়াও তাই জাপানের সঙ্গে শান্তি চুক্তির আলোচনা পরিহার করে। ২০২২ সালে দ্বীপগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত যৌথ অর্থনৈতিক প্রকল্পগুলোও স্থগিত করে রাশিয়া। তখন থেকে দুই দেশের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়।

এবার রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিচুক্তির পক্ষে কথা বলেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। ২০২০ সালে রুশ সংবিধানে আনা সংশোধনীতে বিদেশি শক্তির কাছে কোনো অঞ্চল হস্তান্তরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই সংশোধনী অনুসারে কিশিদার প্রতিক্রিয়ায় মেদভেদেভ বলেন, ‘রাশিয়ার সংবিধান অনুসারে আঞ্চলিক প্রশ্ন একেবারেই শেষ। এটি মাথায় রেখে শান্তিচুক্তির বিরুদ্ধে নই আমরা।’

মেদভেদেভ আরও বলেন, কুরিল দ্বীপপুঞ্জকে উন্নত করে সেখানে অস্ত্র মোতায়েন করবে রাশিয়া। এটা জাপানকে মেনে নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘তথাকথিত উত্তরাঞ্চলীয় ভূখণ্ড নিয়ে জাপানের অনুভূতিকে আমরা পাত্তা দিই না। এগুলো বিরোধপূর্ণ অঞ্চল নয়। এগুলো রাশিয়ার।’

জাপানের প্রতি তির্যক মন্তব্য করে মেদভেদেভ বলেন, ‘যেসব সামুরাই এ নিয়ে খুব বেশি কষ্ট পাবেন তারা জাপানের ঐতিহ্যবাহী সেপ্পুকোর (জাপানিদের বিশেষ উপায়ে আত্মহত্যা) মাধ্যমে জীবনের ইতি টানতে পারেন।’

ক্রেমলিনের সবচেয়ে কট্টরপন্থী পশ্চিমা বিরোধী কূটনীতিকদের অন্যতম দিমিত্রি মেদভেদেভ। ১৯৪৫ সালে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক হামলার পরও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মৈত্রী বজায় রাখায় জাপানের সমালোচনা করেছেন তিনি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত