বিবিসির প্রতিবেদন

ইউক্রেনকে মৃত্যুপুরী বানাতে গিয়ে রাশিয়াকে দিতে হচ্ছে চড়া মূল্য

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০: ০৫
ইউক্রেনের প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করতে রাশিয়াকে ৫০ জনের বেশি সৈন্য হারাতে হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

বছরের শেষে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান তীব্রতর হচ্ছে। এর মধ্যেই পূর্ব ইউক্রেন ও রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় কুরস্ক অঞ্চলে রুশ বাহিনী প্রায় ২,৩৫০ বর্গকিলোমিটার (৯০৭ বর্গমাইল) এলাকা দখল করে নিয়েছে। তবে রাশিয়ার এই সফলতার জন্য অত্যন্ত চড়া মূল্য দিতে হয়েছে।

ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিবিসি একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত নভেম্বর মাসে প্রায় ৪৫ হাজার ৬৮০ জন রুশ সেনা হতাহত হয়েছেন। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১,৫২৩ জন রুশ সেনা নিহত বা আহত হয়েছেন। যা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এক মাসে সর্বোচ্চ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘রুশ বাহিনী অগ্রসর হলেও তা বড় ক্ষতির বিনিময়ে অর্জিত হচ্ছে।’

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা এবং ওয়াশিংটনের ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ারের (আইএসডব্লিউ) তথ্য অনুসারে, রাশিয়া শরৎকালের আক্রমণে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার ৮০০ জন সেনা হারিয়েছে। আইএসডব্লিউএর তথ্যমতে, ইউক্রেনের প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করতে রাশিয়াকে ৫০ জনের বেশি সৈন্য হারাতে হচ্ছে।

অন্যদিকে, ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর হতাহতের বিষয়ে সরকারি কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে ইউক্রেনের একজন সাংবাদিক ইউরি বুতুসভ দাবি করেছেন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রায় ৭০ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ৩৫ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা এখনো নিখোঁজ।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, কুরস্ক অঞ্চলে ৩৮ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা হতাহত হয়েছেন। তবে এই তথ্য যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

যুদ্ধে ড্রোন ও গ্লাইড বোমার ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। গত এক বছরে রাশিয়ার গ্লাইড বোমা ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে দশগুণ। এ ছাড়া ড্রোনের ক্রমবর্ধমান ব্যবহার বারবার যুদ্ধের গতিপথ পরিবর্তন করছে।

একজন ইউক্রেনীয় সেনা বলেছেন, ‘ড্রোন যুদ্ধের কারণে এখন পদাতিক বাহিনী কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে।’

রাশিয়া তার সৈন্য ঘাটতি পূরণ করতে সক্ষম হলেও, নতুন করে সেনা মোতায়েন করতে পুতিনের অনীহা তাঁর অভ্যন্তরীণ সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। রাশিয়ায় বেতন বৃদ্ধি ও ক্ষতিপূরণ প্রদান নিয়ে সমস্যার পাশাপাশি হাসপাতালগুলি জনাকীর্ণ হয়ে উঠছে।

অন্যদিকে, ইউক্রেন ২৫ বছরের নিচে বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগে অনাগ্রহ দেখিয়েছে। যা তাদের সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা সীমিত করেছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইউক্রেনে চলমান সংঘর্ষে কোনো পক্ষের দ্রুত বিজয়ের সম্ভাবনা নেই। বরং যুদ্ধ আরও তীব্রতর হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অগণিত জীবন হারানোর পাশাপাশি, এই সংঘাত ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে স্থায়ী বিভেদ সৃষ্টি করবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত